মনোবিদের ক্লাসে ভয় জয় করার পাঠ
২০ জুলাই ২০২০ ১৩:১১
করোনাকালে বাংলাদেশ নারী ও বিশ্বজয়ী যুবা ক্রিকেটারদের মানসিক সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে মনোবিদের শরণাপন্ন হয়েছে অভিভাবক সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি। পাছে লক্ষ্য একটাই- বৈশ্বিক মহামারির এই সময়ে তারা যেন বিষণ্ণতায় না ভোগেন এবং মানসিকভাবে নির্ভার থাকতে পারেন। কানাডা প্রবাসী আলী খানের সঙ্গে শনিবার (১৮ জুলাই) ভার্চুয়ালি প্রথম দিনের ক্লাস করেছে বিশ্বজয়ী যুবা দল। আর গতকাল রাতে নিজেদের প্রথম সেশন করেছেন এশিয়ার চ্যাম্পিয়নরা। প্রায় দুই ঘণ্টার এই সেশনে আলী খান তাদের একটি পাঠই দিয়েছেন- করোনাকালে যেন কোনোভাবেই তারা ভয় না পান, ভড়কে না যান। শুধু তাই নয়, নিজেদের ওপর রাখতে বলেছেন অগাধ বিশ্বাস।
চার মাস পেরিয়ে পাঁচ মাস হতে চলেছে কোনো ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রমের সঙ্গে নেই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। সবশেষ ব্যাট-বলের সঙ্গে দেখা হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ)। এরপর বিশ্বব্যাপী করোনার সংক্রমণ শুরু হলে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন সালমা-রুমানারা। বলার অপেক্ষাই থাকছে না ঘরে বসে কারোরই স্কিল ট্রেনিং (ব্যাটিং-বোলিং) করা হয়ে উঠছে না। বিসিবি’র নির্দেশনা মোতাবেক ফিটনেস অনুশীলন করতে পারছেন এই যা।
এতে করে অনেকেরই মনে হতে পারে ‘আমি বুঝি ব্যাটিং-বোলিং সব ভুলে বসে আছি। লম্বা বিরতি শেষে মাঠে ক্রিকেট ফিরলে হয়ত আর কিছুই আর আগের মতো হবে না।’ ঠিক এই ভীতিটিই দূর করার পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিদ আলী খান। তিনি তাদের বুঝিয়েছেন যে ১০ বছরের স্কিল তো আর ৪ মাসে ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। পাশাপাশি পরামর্শ দিয়েছেন তারা যেন নিজেদের ওপরে বিশ্বাস রাখেন।
আশার কথা হলো, মনোবিদের এই একটি ক্লাসেই মানসিকভাবে ফুরফুরে হয়ে উঠেছেন নারী দলের ওয়ানডে দলপতি রুমানা আহমেদ। অনেকের অবস্থাও যে তাই, আঁচ করতে পারাটা কঠিন নয়। সঙ্গত কারণেই ভীষণ খুশি দেশ সেরা এই অলরাউন্ডার।
সোমবার (২০ জুলাই) সারাবাংলোর সঙ্গে একান্তে আলাপকালে তিনি কথাগুলো জানালেন।
রুমানা বললেন, ‘উনি আমাদের বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করলেন যে, আমরা যেটা ভাবি বা যেটা নিয়ে টেনশন করি বাস্তবতা মোটেও ওরকম নয়। কী হবে, না হবে এসব নিয়ে আমরা অনেক বেশি চিন্তা করি বলে এক ধরনের চাপ মনের ওপরে এসে যাচ্ছে। উনি বলেছেন ভয়-ভীতি জীবনকে তছনছ করে দেয়। ভয় না পেয়ে নিজেদের ওপরে যেন বিশ্বাস রাখতে পারি সেই কথা বলেছেন। ধরেন আমি ক্রিকেট অনুশীলন করছি ১০ বছরের বেশি হয়ে গেছে। এখন ৫ মাস যদি আমি বসেও থাকি সব ভুলে যাব এটা তো হতে পারে না। উনি এভাবেই আমাদের বুঝিয়েছেন।’
‘এই সময়ে এই ধরনের ক্লাস অবশ্যই আমাদের অনেক সহযোগিতা করবে। এর আগে ২০১৪ সালে উনিই একটি ক্লাস নিয়েছিলেন। ইয়োগা করা, মনের বিশ্বাস যোগানো, মানসিক সাপোর্ট; এগুলো ভালো ব্যাপার। এতে করে অনেকেই মানসিকভাবে এগিয়ে যাবে। আমরা খুবই খুশি কারণ এটা আমাদের খুব দরকার ছিল।’ যোগ করেন রুমানা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) মনোবিদ মনোবিদ নিয়োগ মনোবিদের ক্লাসে ক্রিকেটাররা রুমানা আহমেদ