Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যেমন কাটল কোচ ল্যাম্পার্ডের প্রথম মৌসুম!


২৭ জুলাই ২০২০ ১৫:২০

ফুটবলার হিসেবে সফল হয়েই অবসর গ্রহণ করেন চেলসির কিংবদন্তি ইংলিশ মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। বুট পায়ে ফুটবলের পাঠ চুকিয়ে এবার কোচ হিসেবে ডাগ আউটে ল্যাম্পার্ড। আর ম্যানেজার হিসেবে শুরুটা করেছিলেন ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব ডার্বি কাউন্টির হয়ে। ২০১৯ সালের ৩১ মে ম্যানেজার ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের যাত্রা শুরু। আর ঠিক এক বছর পর নিজের প্রাণের ক্লাব চেলসি ফুটবল ক্লাবের ডাগ আউটের দায়িত্ব তার কাঁধে।

বিজ্ঞাপন

প্রথম বিভাগ ফুটবলে ল্যাম্পার্ডের অভিষেক কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার এক বছর পরেই। এর আগে ডার্বি কাউন্টির হয়ে ম্যানেজার ল্যাম্পার্ড প্রথম ম্যাচেই পেয়েছিলেন জয়ের দেখা। এরপর তার ক্লাব ডার্বি কাউন্টি দুর্দান্ত এক মৌসুম পার করেন। ক্যারিয়ারের ১২তম ম্যাচে ইএফএল কাপে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে বিদায় করে দেয়।

এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সুপার ফ্র্যাঙ্কিকে। ২০১৮/১৯ মৌসুমে ডার্বি কাউন্টিকে প্রিমিয়ার লিগের প্লে অফের ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে যান ল্যাম্পার্ড। প্লে অফের সেমি ফাইনালে লিডস ইউনাইটেডের কাছে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে হারলেও ফিরতি লেগে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে ল্যাম্পার্ডের দল। তবে ফাইনালে অ্যাস্টন ভিলার কাছে হেরে প্রিমিয়ার লিগে জায়গা করে নেওয়া হয়নি ল্যাম্পার্ডের অধীনের ডার্বি কাউন্টির।

এরপর নিজের ক্লাব চেলসির কাছ থেকে দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব পান ল্যাম্পার্ড। ২০১৯ সালের ২৫ জুন চেলসিতে কোচ হিসেবে যোগ দেন ল্যাম্পার্ড। অল ব্লুজদের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করেন ল্যাম্পার্ড। আর নিজের প্রথম মৌসুমেই দুর্দান্ত সময় কাটান সুপার ফ্র্যাঙ্কি। যদিও চেলসির ম্যানেজার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়। তবে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় চেলসি। দুর্দান্ত এক মৌসুম শেষ হয় লিগের ৪র্থ স্থানে থেকে। আর সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয় উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলাটাও।

চেলসির হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেও জয়ের দেখা পাননি ল্যাম্পার্ড। এবার হার অবশ্য ২০১৮/২০১৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী লিভারপুলের কাছে। আগের মৌসুমে ইউরোপা লিগ জয়ী চেলসি উয়েফা সুপার কাপে টাই ব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে হারে অল ব্লুজরা। ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আগস্টের ২৪ তারিখে এসে চেলসির হয়ে প্রথম জয়ের দেখা পান ল্যাম্পার্ড। নরউইচ সিটির বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেন ল্যাম্পার্ড।

বিজ্ঞাপন

প্রথম মৌসুমে যোগ দিয়েই চেলসিকে পান দুই মৌসুম ট্রান্সফার ব্যানের মধ্যে। অর্থাৎ পূর্ণ দুই মৌসুম কোনো খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে পারবেন না ল্যাম্পার্ড। তবে সুখবর আসে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের ৬ তারিখে। কোর্ট অব অ্যারবিট্রেশন ফর স্পোর্ট চেলসির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং পরের ট্রান্সফার মৌসুম থেকেই খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে পারবেন বলে ঘোষণা দেয় আদালত। আর তখনই আশার আলো দেখতে শুরু করলেন ল্যাম্পার্ড।

এরপর একে একে যা কিছু সম্মুখীন চেলসির ম্যানেজার হিসেবে হতে হয়েছে ল্যাম্পার্ডকে-

  • দলবদলে নিষেধাজ্ঞা
  • দলের সেরা খেলোয়াড়ের ক্লাব ছাড়া
  • যুব দলের খেলোয়াড়দের সুযোগ করে দেওয়া
  • লিভারপুলকে এফএ কাপ থেকে বিদায় করা
  • ম্যান ইউনাইটেডকে এফএ কাপ থেকে বিদায় করা
  • এফএ কাপের ফাইনালিস্ট
  • চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিশ্চিত

দল বদলের মৌসুমে নিষেধাজ্ঞায় পড়া চেলসির মরার ওপর খড়ার ঘা আসে যখন দলের সেরা খেলোয়ার এডেন হ্যাজার্ড চেলসি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমান। এমনিতেই দলের সেরা খেলোয়াড় ক্লাব ছাড়লেন এরপর আবার তার পরিবর্তে কাউকেই দলে ভেড়াতে পারবেন না ল্যাম্পার্ড। সব মিলিয়ে যেন অথৈ জলে পড়লেন তিনি। তবে আশার আলো দেখলেন ট্রান্সফার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায়। এরপর দলে ভেড়ালেন ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচকে। জানুয়ারিতে চেলসিতে যোগ দিয়ে দুর্দান্ত মৌসুম পার করেছেন এই যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলার।

তবে দল-বদলের নিষেধাজ্ঞা আশির্বাদ হয়ে আসে চেলসির যুব দলের খেলোয়াড়দের জন্য। ল্যাম্পার্ডের অধীনে প্রিমিয়ার লিগে সুযোগ পান অল ব্লুজদের যুব দল থেকে উঠে আসা স্ট্রাইকার টামি আব্রাহাম, মিড ফিল্ডার মেসন মাউন্ট, রুবেন লফটাস চিকরা। সব মিলিয়ে চেলসির যুব দল থেকে মোট ছয়জন খেলোয়াড় সুযোগ পান ল্যাম্পার্ডের দলে। আর দুর্দান্ত পারফর্ম করে কোচের বিশ্বাসও জিতে নেয় খেলোয়াড়রা।

২০২০ সালের মার্চে এসে এফএ কাপের ৫ম রাউন্ড থেকে লিভারপুলকে বিদায় করে দেয় চেলসি। সে ম্যাচে লিভারপুলের জালে দুটি গোল জড়ায় ব্লুজরা। সেদিন ব্লুজদের হয়ে উইলিয়ান এবং রস বার্কলি গোল করে দলকে জিতিয়েছিলেন। এরপর এফএ কাপের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারায় চেলসি। এর আগে মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে দুই দলের দুইবারের দেখায় হারের স্বাদ নিতে হয়েছিল চেলসিকে। এছাড়া কারাবো কাপেও রেড ডেভিলদের কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল চেলসিকে। তবে শেষ পর্যন্ত অলিভার জিরুড, মেসন মাউন্টের দুর্দান্ত গোলে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে চেলসি।

আর শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে ৩৮ রাউন্ড শেষে ২০ জয়, ৬ ড্র এবং ১২ হারে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে ৪র্থ স্থানে থেকে লিগ শেষ করে চেলসি। তৃতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পয়েন্ট সংখ্যা সমান হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় তিনে থেকে লিগ শেষ করে রেড ডেভিলরা। ২০১৯/২০২০ মৌসুমে ল্যাম্পার্ডের দলে প্রিমিয়ার লিগে ৬৯টি গোল করলেও বিপরীতে ৫৪টি গোল হজমও করে দলটি। আর রক্ষণভাগের দুর্বল দশার কারণেই প্রিমিয়ার লিগের চারে থেকে লিগ শেষ করতে হয়েছে দলটিকে।

সব মিলিয়ে ম্যানেজার ল্যাম্পার্ডের প্রথম মৌসুমে খুব বেশি কিছু প্রাপ্তি না হলেও নতুন করে দল গড়তে বেশ বড় ভূমিকা রাখছেন সুপার ফ্র্যাঙ্কি। এর মধ্যে আয়াক্স থেকে হাকিম জিয়াচ, আরবি লেইপঝিগ থেকে স্ট্রাইকার টিমো ভার্নার, বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচকে দলে ভিড়িয়েছেন ল্যাম্পার্ড। এছাড়াও বায়ার লেভারকুজেনের হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটানো কাই হার্ভটজেও দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি। সামনের মৌসুমে তাই দল গুছিয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়েই প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম শুরু করবেন ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড।

ইপিএল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কোচ ল্যাম্পার্ড চেলসি ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড স্পোর্টস স্পেশাল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

সম্পর্কিত খবর