এবার ডামাডোল নেই বাফুফে নির্বাচনে
৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৪৩
ঢাকা: তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। আর এক মাসের মাথায় নির্বাচনের ঢোল বাজবে। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের এবার নির্বাচনকে ঘিরে নেই কোন সাড়াশব্দ। নেই কোন ডামাডোল। একেবারে ফুটবল পাড়ায় নেই কোন উত্তেজনা। প্রতিবার এই নির্বাচনকে ঘিরে মানুষের আগ্রহের কমতি ছিল না। এবার একেবারে বলতে গেলেই নিরবে চলছে নির্বাচন আলোচনা। যেন নাটকের গল্পই জানা সবার! তাই দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছে নির্বাচন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেসবাহ উদ্দিন দুই কমিশনারকে নিয়ে বাফুফে ভবনে তফসিল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের একটা রূপরেখা দিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তফসিল অনুযায়ী ৫-৭ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। বাফুফের হিসাব শাখা থেকে মনোনয়ন কেনা যাবে। মনোনয়নপত্রের মূল্য সভাপতি পদের জন্য এক লাখ, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ৭৫ হাজার, সহ-সভাপতি ৫০ হাজার এবং সদস্য পদের জন্য ২৫ হাজার টাকা (অফেরৎযোগ্য)।
৮ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পরদিন মনোনয়নপত্রের ওপর আপত্তি শোনা হবে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত, ১১ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই (বিকেল ৩টা থেকে), ৮-১২ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ১৩ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ ও ব্যালট দেয়া হবে। ৩ অক্টোবর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম), নির্বাচন (দুপুর ২টা থেকে বেলা ৬টা) ও প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
১৩৯ জন কাউন্সিলর একজন করে সভাপতি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি, চারজন সহ-সভাপতি এবং ১৫ জন সদস্যকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করবেন।
নির্বাচন এখন যেন নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে টানা তিনবারের সভাপতির পদে আসীন কাজী সালাউদ্দিন তার প্যানেল প্রস্তুত করে ফেলেছেন। নতুন-পুরান মিলিয়ে ২১ জনের এই প্যানেলে গত নির্বাহী কমিটির আছেন ১৫ জন। ছয়জন নতুন মুখ। আর গত নির্বাচনে সালাউদ্দিন প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়া মহিউদ্দিন মহি ও বাদল রায় এবার প্যানেলের বাইরে। নানান সময় বাফুফের দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কারণে প্যানেল থেকে ছিটকে গেছেন এই দুই সংগঠক। অন্যদিকে সালাউদ্দিনের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে যাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল সেই তরফদার রুহুল আমিনও সরে দাঁড়িয়েছেন ‘ইউটার্ন’ করেও। তরফদারের সরে দাঁড়ানোয় অস্বস্তিতে মহি ও বাদল রায়ও।
কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে সেই অর্থে আর কোন বিপক্ষ প্যানেল দাঁড়াবে বলে মনে হচ্ছে না।
এতে কাজী সালাউদ্দিনের চতুর্থবারের মতো সভাপতি হওয়ার পথটা যেন সহজ হয়ে গেছে। পথের সবচেয়ে কাঁটা সরে গেছে। আর প্যানেল ভারী করার জন্য স্বতন্ত্র পদে দাঁড়ানো তাবিথ আউয়ালকেও হয়তো দলভুক্ত করে ফেলতে পারে সালাউদ্দিনের হ্যাভিয়েট প্যানেল। সেক্ষেত্রে গুঞ্জন- চার সহ-সভাপতির একটি পদ থেকে একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীকে সরিয়ে ফেলতে পারে বাফুফে।
নতুন যারা প্যানেলে আছে তারাও নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি এবার। কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে সহসভাপতি পদে নতুন দু’জন হলেন- বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান ও তপা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক। আর সদস্যপদে নতুন চারজন হলেন- যশোরের আসাদুজ্জামান মিঠু, সিরাজগঞ্জের কামরুল হাসান হিলটন, ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের সৈয়দ রিয়াজুল করিম ও রহমতগঞ্জের ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ।
এ গেল ভোট লড়াইয়ে প্রার্থীদের যুদ্ধ। এবার ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে একটা বিধিনিষেধ এনেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে ভোটারদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেসবাহ উদ্দিন বলেন, ‘কাউন্সিলর ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে যাদের করোনা উপসর্গ থাকবে, তারা ভেন্যুতে প্রবেশ করতে এবং ভোট দিতে পারবেন না।’
কাজী সালাউদ্দিনের প্যানেল
সভাপতি: কাজী মো. সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি: আবদুস সালাম মুর্শেদী। সহসভাপতি: কাজী নাবিল আহমেদ, ইমরুল হাসান, আমিরুল ইসলাম বাবু ও আতাউর রহমান মানিক। সদস্য :হারুনুর রশিদ, শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইলিয়াছ হোসেন, বিজন বড়ুয়া, আরিফ হোসেন মুন, অমিত খান শুভ্র, ইকবাল হোসেন, মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, মো. জাকির হোসেন, মাহফুজা আক্তার কিরণ, আসাদুজ্জামান মিঠু, কামরুল হাসান হিলটন, সৈয়দ রিয়াজুল করিম ও ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ। বাদ পড়েছেন যারা:মহিউদ্দিন আহমেদ মহি (সহসভাপতি), বাদল রায় (সহসভাপতি), মো.ফজলুর রহমান বাবুল (সদস্য), আব্দুর রহিম (সদস্য)। নতুন মুখ :ইমরুল হাসান (সহসভাপতি), আতাউর রহমান মানিক (সহসভাপতি), আসাদুজ্জামান মিঠু (সদস্য), কামরুল হাসান হিলটন (সদস্য), সৈয়দ রিয়াজুল করিম (সদস্য) ও ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (সদস্য)।