সালাউদ্দিন-মুর্শেদী প্যানেলের নিরুঙ্কুশ জয়
৪ অক্টোবর ২০২০ ০০:০৭
ঢাকা: ২০১৬ সালে গত বাফুফে নির্বাচনে হোটেল র্যাডিসনে চিন্তার ভাঁজ দেখা গিয়েছিল কাজী সালাউদ্দিনের কপালে। এবার চার বছর ঘুরে দেশজুড়ে তুমুল আন্দোলন আর ১২ বছরের অতীত নিয়ে ফুটবল সংশ্লিষ্টদের তীব্র সমালোচনা নিয়েও অনেকটা অনায়াসেই বিজয় গাঁথা রচনা করেছেন। নিকটতম প্রার্থীকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বোচ্চ পদে আরও চার বছরের জন্য নিজের নামটি খোদাই করে লিখলেন সাবেক এই ফুটবল তারকা। একই সঙ্গে সকল সমালোচনার জবাবটাও তিনি ব্যালট পেপারেই দিয়ে দিলেন।
শুধু নিজেই জিতলেন না জয়ীর দলে নিলেন তার নেতৃত্বে প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থীকে। নিঃসন্দেহে এই বিজয়কে নিরুঙ্কুশ বলা যায়।
আজ শনিবার (৩ অক্টোবর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আলোচিত এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ২টা থেকে ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হয়ে সন্ধ্যা ছয়টায় শেষ হয়েছে। ২১ পদের বিপরীতে এবার নির্বাচনে দুই প্যালেনের প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন মোট ৪৭ জন। ৯৭ শতাংশ কাউন্সিলর ব্যালটপেপারে ভোট দেন। ১৩৯ জনের মধ্যে চার ভোটার কেন্দ্রেই অনুপস্থিত ছিলেন। তাই সবমিলে ১৩৫জন কাউন্সিলর ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
দেশজুড়ে এতো সমালোচনার মধ্যেও সর্বোচ্চ ৯৪ ভোট নিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। টানা চতুর্থবারের মতো সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক তারকা এই ফুটবলার। অর্ধেকেরও কম ৪০ ভোট পেয়েছেন শেষ সময়ে নির্বাচনে ইউটার্ন নেয়া বাদল রায়। আর মাত্র ১ ভোট পেয়েছেন স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মানিক।
সিনিয়র সহ সভাপতি হিসেবে চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী। সর্বোচ্চ ৯০ ভোট পেয়ে সামনের চার বছরের জন্য নির্বাচিত হলেন খুলনা-৪ আসনের এই সাংসদ। অন্যদিকে এই পদে তার নিকটতম প্রার্থী শেখ আসলাম পেয়েছেন তার অর্ধেক ৪৫টা ভোট।
চার সহ-সভাপতি পদেও আধিপত্য সম্মিলিত ফুটবল পরিষদের।
পরিষদের চার প্রার্থীর মধ্যে তিন প্রার্থীই সহ সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান (৮৯)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট (৮১) পেয়ে চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা আবাহনীর ডিরেক্টর ইন চার্জ কাজী নাবিল আহমেদ। প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন আরেক সংগঠক তমা গ্রæপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক (৭৫)। অন্যদিকে চার সহ সভাপতি পদের বাকী এক পদের জন্য দুজনের মধ্যে ভোটের টাই হয়েছে। স্বতন্ত্রভাবে সহ সভাপতি পদে দাঁড়ানো তাবিথ আউয়াল ও সমন্বিত পরিষদের মহিউদ্দীন মহি দুজনই সমান ৬৫ করে ভোট পেয়েছেন।
মীমাংসা টানতে এই পদে কাউন্সিলররা পুনরায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। চলতি মাসের ৩১ অক্টোবর ফেডারেশনের ভবনে এই ভোটপর্ব আয়োজন করা হবে।
২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন কাজী সালাউদ্দিন। মেজর জেনারেল আমিন আহমেদকে হারিয়ে সেবার বাফুফে প্রধানের চেয়ার জেতেন দেশের সাবেক তারকা এই ফুটবলার। পরের দফায় নির্বাচন করতে হয়নি সালাউদ্দিনকে। ২০১২ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন কিংবদন্তি এই ফুটবলার। ২০১৬ বাফুফে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে কামরুল আশরাফকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বাফুফে সভাপতি হন সালাউদ্দিন। এবার তার কাছে হার মানলেন জাতীয় দলের দুই সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিক ও বাদল রায়।