Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে আইপিএলে: জীবনের গল্প শোনালেন আলি


১৩ অক্টোবর ২০২০ ১৬:১৮

ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে আলি খান বেশ পরিচিত মুখ। নিখুঁত নিশানার কারণে ২৯ বছর বয়সী পেসারকে ‘ইয়র্কার মেশিন’ বলেন অনেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, কানাডা ও পাকিস্তানের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগে খেলা আলি এখন আইপিএলে মাঠে নামার দিন গুনছেন।

কদিন আগে শোনা গেল চোটের কারণে প্রথমবার ডাক পেয়ে আইপিএল খেলতে পারছেন না আলি। তবে পরে জানা যায়, দলের সঙ্গেই থাকবেন তিনি। আইপিএল খেলার সম্ভাবনা টিকে আছে এখনোও। তার ক্লাব কলকাতা নাইট রাইডার্স আশা করছে, চোট কাটিয়ে সেরে উঠবেন আলি। ২৯ বছর বয়সী ক্রিকেটারের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে উঠে আসার গল্পটা কিন্তু সহজ নয়, রীতিমতো সিনেমাটিক।

বিজ্ঞাপন

জন্মসূত্রে আলি পাকিস্তানি। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে জন্ম তার। ভাইদের সঙ্গে টেপ টেনিসে রাস্তায়, বাড়ির ছাদে টুকটাক ক্রিকেট খেলতেন। যৌবনে পাকিস্তান ছেড়ে এমন এক দেশে গিয়ে পড়লেন যেখানে ক্রিকেটের ভূমি মোটেও উর্বর নয়। ১৯ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখান থেকে পেশাদার ক্রিকেটে উঠে আসতে পারবেন এমনটা স্বপ্নেও ভাবেননি আলি।

বিবিসির আইপিএল পডকাস্টে গল্পগুলো শোনালেন আলি, ‘আমি কোনো দিনই ভাবিনি পেশাদার ক্রিকেটার হবো। ছোটবেলায় টেপ বলে ক্রিকেট খেলে বেড়ে উঠেছি। রাস্তায়, বাড়ির ছাদে ভাইদের সঙ্গে মজা করে খেলতাম। জানালার কাঁচ ভাঙতাম, ঝামেলা পাকাতাম, দেরি করে বাড়ি ফিরতাম। বাবা-মার কথা ছিল শুধু পড়াশোনা। তাদের কথা, স্কুলে যাও পড়াশোনা করো, ক্রিকেট খেলার দরকার নেই।’

ক্রিকেটের অনুর্বর ভূমি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েই ক্রিকেটার হয়ে উঠার শুরু আলির। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর স্থানীয় এক ক্লাবে খেলার সুযোগ মিলেছিল। সেখান থেকে একদিন কী মনে করে ইউএস ওপেন টি-টোয়েন্টির প্রতিষ্ঠাতা ম্যাক কুরেশির সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করলেন। সেটাই হয়েছে আলির পরবর্তী ধাপ।

বিজ্ঞাপন

২৯ বছর বয়সী ক্রিকেটার বলেন, ‘আমি ওহাইও লিগে খেলছিলাম। ২০১৩ সালে সেখানে ম্যাক কুরেশি নামে একজন ছিলেন, তিনি ইউএস ওপেন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের প্রতিষ্ঠাতা। ফ্লোরিডায় যেটা তারা খেলে থাকেন ডিসেম্বরে। ফেইসবুকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছিলাম, আমি একজন ফাস্ট বোলার, ক্রিকেট খেলতে চাই। কোনো সুযোগ আছে কি? তিনি বলেছিলেন, ‘টিকেট কেটে ফেলুন, আমরা দেখব আপনাকে পছন্দ হয় কিনা।’

আলিকে মনে ধরেছিল কুরেশির। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৫ সালে ত্রিনিদাদে আইসিসি আমেরিকা ডেভেলপমেন্ট দলের হয়ে ৫০ ওভারের টুর্নামেন্টে ডাক পান আলি। সেখান থেকে ২০১৬ সালের সিপিএলে। তারপর থেকে সিপিএলের প্রতি আসরেই খেলেছেন পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া ক্রিকেটার। এবারের আসরে আট ম্যাচে ওভারপ্রতি ৭.৪৩ রান খরচ করে আট উইকেট নিয়ে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন আলি।

জীবনের এই পরিবর্তন আলির কাছে রূপকথার মতোই, ‘একদিন বসে বসে ভাবছিলাম, পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার পর জীবন কীভাবে বদলে গেল। এখন আমি সুনিল নারিন ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের (দুজনই কলকাতা নাইট রাইডার্সে) সঙ্গে একই প্রাইভেট বিমানে ভ্রমণ করছি। সব যেন রূপকথার মতো।’

নজরকাড়া পারফরম্যান্সে মন জিততে চান আলি। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটকে প্রমোট করতে চান এই পেসার, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা একজন হিসেবে সবার দৃষ্টি থাকবে আমার দিকে। তবে আমি এটিকে চাপ নয়, বরং প্রেরণা হিসেবে দেখছি। আমার সামর্থ্য দেখাব। এটি আমাকে দেখাতে সহায়তা করবে যে, যুক্তরাষ্ট্রে আরও অনেক প্রতিভা আছে।’

আলি বললেন, ‘আমাদের ভালো সুযোগ-সুবিধা এবং ফ্লোরিডায় একটি জাতীয় স্টেডিয়াম আছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সেরা স্টেডিয়াম। এখানে সত্যিই এখন ক্রিকেট এগিয়ে চলেছে। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ক্যারিবীয় দেশগুলির বড় সম্প্রদায় এখানে আছে, যা ক্রিকেটের উন্নতিতে সহায়তা করছে।’

আইপিএল ২০২০ আলি খান পাকিস্তান ক্রিকেট যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর