হৃদয়ের আত্মবিশ্বাস কথাতেও
১৪ অক্টোবর ২০২০ ১৬:৩২
এই ছেলের কলিজা বিশাল- ‘সাহসী’ বুঝাতে এমন কথা ব্যবহার করে থাকেন অনেকে। এখন তৌহিদ হৃদয়ের ক্ষেত্রে হয়তো ওই কথাটা ব্যবহার করবেন অনেকেই! ১৯ বছর বয়সী তরুণ ব্যাটসম্যান ব্যাট হাতে যেমন সাহসী, কথাতেও তেমন। দুদিন আগে দারুণ একটা ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলা হৃদয় বলছিলেন, কঠিন বোলারদের বিপক্ষে খেলতেই বেশি ভালো লাগে তার। কথায় আত্মবিশ্বাস যেন ঠিকরে বেরুচ্ছে!
বগুড়ায় জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটারকে ‘আগামী দিনের সম্পদ’ ভাবা হচ্ছে অনেকদিন ধরেই। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে রান করেছেন মুড়িমুড়কির মতো। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে টানা তিন সেঞ্চুরি করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের ফর্মটা ধরে রেখেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটেও। করোনার বিরতির পর দেশিয় ক্রিকেটাররা তিন দলে ভাগ হয়ে এখন প্রেসিডেন্ট’স কাপ নামের ওয়ানডে টুর্নামেন্ট খেলছেন। হৃদয় ঝলক দেখিয়েছেন এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই।
গত রোববার মাহমুদউল্লাহ একাদশের ১৯৬ রানের জবাব দিতে নেমে ৭৯ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নাজমুল একাদশ। তারপর নাজমুল একাদশের হয়ে ছয় নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস খেলেছিলেন হৃদয়। যাতে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জিতে নাজমুল একাদশ। ৬৭ বলে ৫২ রানের ইনিংসটি ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পাইয়ে দেয় হৃদয়কে।
সেদিন কঠিন পরিস্থিতিই জয় করতে হৃদয়কে। অল্পতেই পাঁচ উইকেট পরে যাওয়াতে অনেক চাপ তৈরি হয়েছিল। তার ওপর প্রতিপক্ষ মাহমুদউল্লাহ একাদশের বোলাররা আত্মবিশ্বাসে ফুটছিলেন। রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেন, আবু হায়দার রানি, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের মতো আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বোলারদের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর দলে ছিলেন যুব বিশ্বকাপ জেতা রকিবুল হাসানও। চাপের মুখে এতো ভালো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে রান করা চাট্টিখানি কথা নয়। হৃদয় অবশ্য বলছেন, কঠিন বোলারদের বিপক্ষে খেলাই পছন্দ তার!
বুধবার (১৪ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ১৯ বছর বয়সী তরুণ বলছিলেন, ‘যেখানে খেলি না কেন, আমি চাই যে কঠিন বোলারদের মোকাবেলা করি। মানসম্মত বোলারদের মোকাবেলা করতে ভাল লাগে। কারণ তাদের বিপক্ষে রান করলে অনেক আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়।’ বুকের পাটা আছে বলতে হবে!
জানালেন অনেকদিনের বিরতি শেষে মাঠে ফিরতে পেরেছেন বলে খুশি তিনি, ‘অনেক দিন পর মাঠে নামতে পেরেছি সেজন্য ভাল লাগছে। আর এরকম বড় টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ ভাল করলাম, সেজন্যও ভাল লাগছে। একটু স্নায়ুচাপে ছিলাম, যেহেতু অনেকদিন পর ম্যাচ খেলার সুযোগ এসেছিল। চেষ্টা করেছি সুযোগ কাজে লাগাতে। যে পরিকল্পনায় ব্যাট করছিলাম সেটা প্রয়োগ করতে পারায় খুশি।’
শান্ত একাদশে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলতে এক মুশকিকুর রহিমই আছেন। যদিও প্রথম ম্যাচে রান করতে পারেননি তিনি। হৃদয় বলছেন, তারুণ্যনির্ভর দল বলে তাদের ফিল্ডিং সাইটটা দারুণ, ‘আমাদের ফিল্ডিং অনেক ভাল। আমাদের দলের সবচেয়ে সেরা জায়গা যদি বলি- তাহলে বলব ফিল্ডিংয়ের দিকটা অনেক ভাল। সবাই খুব সজাগ থাকে। মাঠে সেরাটা নিয়ে রান বাঁচানোর চেষ্টা করে। সবাই নিজের দিকটাই সচেতন, যেহেতু আমাদের অনেক তরুণ দল। আর আমাদের দলে বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও ভাল ব্যাটসম্যান মুশফিক ভাই আছেন। উনার মতো একজন দলে থাকা মানে এমনিই আমরা আত্মবিশ্বাস পাই। আশা করি মুশফিক ভাই খুব তাড়াতাড়ি ভাল ইনিংস খেলবে। উনাকে নিয়ে বলার কিছু নাই যেহেতু বড় খেলোয়াড়, বড় ম্যাচেই রান করবে ইনশাআল্লাহ’
আগামীকাল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম একাদশের মুখোমুখি হবে হৃদয়ের দল। ব্যাটিং ব্যর্থতায় গতকাল নিজেদের প্রথম ম্যাচটা বাজেভাবে হেরেছে তামিম একাদশ। তবুও হৃদয় বলছেন, চ্যালেঞ্জিংই হবে তামিমদের বিপক্ষে লড়াই, ‘প্রত্যেক ম্যাচ অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। এবং অনেক কঠিন হবে আশা করি। তামিম ভাইদের সঙ্গে খেলা। তাদের দল অনেক শক্ত। মোস্তাফিজ ভাই আছে, অনেক বড় বড় বোলার আছে। আগের ম্যাচে যে ভুলগুলো হয়েছে টপ অর্ডারে সেগুলো কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করব।’