‘গুন্ডা’ ফুটবলার রানীর উশু জয়!
১২ মার্চ ২০১৮ ২২:৩৬
জাহিদ-ই-হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: গ্রাম কী শহর উশু চিনেন এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। গ্রামে এই খেলার প্রচলন নেই বললেই চলে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর বেশ কদর আছে। তবে, গ্রাম থেকে বেড়ে ওঠা কোনও মেয়ের জন্য অপরিচিত এই খেলায় প্রথমবার পা রেখেই সাফল্য আনা প্রায় অসম্ভব! সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন তিনি।
শুধু সাফল্য বললে কম হবে, একেবারে চ্যাম্পিয়ন (স্বর্ণ) হয়ে ফিরেছেন মেয়েটি। নাম রাজিয়া সুলতানা রানী। তিনি এখন উশুর ৫৬ কেজি ইভেন্টের রাণী। যুব গেমসে স্বর্ণ জিতেছেন মাত্র দুই সপ্তাহের নাতি অনুশীলনে। শুনলে অবাক হবেন, দুই সপ্তাহ আগেও তিনি এই খেলার নামও শোনেন নি!
জানতেনও না কীভাবে খেলতে হয় বা এর নিয়ম কি। শুধু জানেন ফুটবল খেলতে। যুব গেমসে রংপুরের হয়ে মাঠ কাপানো এই নারী ফুটবলারের উশু জয় এখন যুব গেমস পাড়ায় সমাদৃত।
তাতো অনুমেয়ই। তবে, শিরোনামে ‘গুন্ডা’ শব্দটি ব্যবহারের কারণও আছে। ছোটবেলা থেকেই মারপিট পছন্দ করা থেকেই খেলাটিতে প্রচণ্ড আগ্রহ জন্মেছিল কুড়িগ্রামের মেয়েটির। শুনুন রানীর মুখেই, ‘ফুটবল খেলি। আমি জানতাম না উশু বলতে কোন খেলা আছে। আমাদের গ্রামে এসব খেলা হয় না। ছোটবেলা থেকেই মাইরপিটের আগ্রহ ছিল। ছোটবেলায় যা হয় আরকি। উশু দেখে মনে হলো এগুলো তো ছোটবেলা থেকে খেলি। আমার কাছে খুব ইজি মনে হয়েছিল তাই আমি খেলেছি।’
দেশের সাবেক হ্যান্ডবল-কাবাডি-ফুটবলার ও সংগঠক রেহেনা পারভীনের হাত ধরেই রানীর স্বর্ণজয়। তাকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন রেহেনাই। ঢাকার পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। রানীর প্রবল ইচ্ছা থেকেই তাকে উশুতে খেলানো ও কোচিং করিয়েছেন তিনি। রেহেনা জানান, ‘মেয়েটা আমার একাডেমিতে অনুশীলন করে। তার মধ্যে অনেক মেধা দেখেছি। এবং প্রবল ইচ্ছা দেখেই উশুতে খেলিয়েছি। ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে।’
উশুর ৫৬ কেজি ইভেন্টে রাজশাহী বিভাগের বিথীর (বিকেএসপি শিক্ষার্থী) বিপক্ষে ফাইনাল জিতেছেন রানী।
পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ রানী। পড়ছেন দশম শ্রেণীতে। পিতৃহীন মেয়ের ইচ্ছা নিজের পায়ে দাঁড়ানো। সবার কাছে আদর্শ ক্রীড়াবিদ হিসেবে গড়ে উঠতে চান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য বয়ে আনতে চান।
সঠিক পরিচর্যা পেলে আন্তর্জাতিক সাফল্য পেতে পারেন বলে মনে করেন উশু ফেডারেশন কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/জেএইচ