উমর গুলের অশ্রুসিক্ত বিদায়
১৭ অক্টোবর ২০২০ ১৪:০৬
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে হেরে বিদায় নিয়েছে উমর গুলের বেলুচিস্তান। আর এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই সবধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরে গেলেন পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা পেসার উমর গুল। নিজের বিদায়ে ম্যাচের খেলা শেষে চোখের জলে ক্রিকেট ছাড়লেন গুল।
প্রায় ২০ বছরের দীর্ঘ ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার শেষে মাঠ ছাড়ার সময় নিজের আবেগ আটকে রাখতে পারেননি এই পেসার। কেঁদেছেন অঝোরে! পেশোয়ারে জন্ম নেয়া এ পেসারের বিদায়ে সতীর্থ-প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং দুই দলের খেলোয়াড়রা মিলে দেন গার্ড অব অনার।
বিদায়ী বক্ত্যবে গুল নিজের শহর, প্রদেশ এবং সর্বোপরি নিজের দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার সুযোগের জন্য অনেক সম্মানিতবোধ করছেন বলে জানান। ‘প্রায় ২০ বছর ধরে নিজের ক্লাব, শহর, প্রদেশ এবং দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা অনেক বড় সম্মানের। আমি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট উপভোগ করেছি। এটা আমাকে কঠোর পরিশ্রম, শ্রদ্ধা, আত্মনিবেদন ও অধ্যবসায়ের শিক্ষা দিয়েছে। এ যাত্রায় আমি এমন অনেক মানুষের সঙ্গ পেয়েছি, যারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে আমাকে। আমি তাদেরকে এবং আমার সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
‘আমার পুরো ক্যারিয়ারে সমর্থন দিয়ে যাওয়া ভক্তদের আমি অনেক ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণা ছিল, বিশেষ করে যখন কোনোকিছু আমার পক্ষে ছিল না। সবশেষ আমি আমার পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাদের সাহস-অনুপ্রেরণায় আমি ক্রিকেট খেলতে পেরেছি এবং আত্মত্যাগের কল্যাণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করতে পেরেছি। আমি কিছুদিন ক্রিকেট থেকে বাইরে পরিবারের সঙ্গে থাকব। তবে একেবারে ক্রিকেটের বাইরে থাকা অনেক কঠিন। আবার ফিরব ক্রিকেটে।’
পাকিস্তান জাতীয় দলে ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে’তে অভিষেক হয় গুলের। একই বছরের আগস্টে করাচিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকও হয়ে যায় তার। টেস্টে ৪৭ ম্যাচ খেলে ৩৪ দশমিক ০৬ গড়ে ১৬৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১৩০ ওয়ানডেতে ২৯ দশমিক ৩৪ গড়ে তার ঝুলিতে আছে ১৭৯টি উইকেট।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরে পাকিস্তানের সাফল্যের পেছনে অন্যতম অনুঘটক ছিলেন গুল। ২০০৭’র আসরে রানার্সআপ হওয়া পাকিস্তান পরের আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০০৭ সালের আসরে ১৩ উইকেট নিয়ে বোলারদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন গুল। দুই বছর পর সমান উইকেট নিয়ে একই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করেন তিনি।
টি-টোয়েন্টিতে গুলের তার সাফল্য ছিল ঈর্ষনীয়ই। জাতীয় দলের জার্সিতে ৬০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৬ দশমিক ৯৭ গড়ে তার উইকেটসংখ্যা ৮৫টি। তার চেয়ে এগিয়ে আছেন মাত্র চারজন বোলার- লাসিথ মালিঙ্গা (১০৭), শহিদ আফ্রিদি (৯৮), সাকিব আল হাসান (৯২) এবং রশিদ খান (৮৯)।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৩ ওভারে ৬ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেওয়া গুলের সেই স্পেল গেথে থাকবে ক্রিকেট প্রেমিদের হৃদয়ে। সবশেষ ২০১৬ সালে সর্বশেষ পাকিস্তানের জার্সিতে খেলেছিলেন তিনি। এরপর জাতীয় দলে আর ডাক পাননি তিনি। শেষমেশ ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানলেন এই পেসার।
২০ বছরের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার অবসর গ্রহণ অশ্রুসিক্ত বিদায় ইতি টানলেন উমর গুল পাকিস্তানি পেসার