তরুণ স্পিনিং অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রুবর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন দেশের অজস্র তরুণী। কেউ কেউ আবার তাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতেও উদগ্রীব।
গত শনিবার মাহমুদউল্লাহ একাদশের বিপক্ষে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছিলেন তরুণ আফিফ। ১০৮ বলে ১২ চার ও ১ ছয়ে স্কোর বোর্ডে যোগ করেছিলেন ৯৮ রান। সেই জ্বলেনে পুড়ে খাঁক হয়ে ১৩১ রানের বড় হার মেনে নিতে হয়েছিল মাহমুদউল্লাহ ও তার দলকে। ম্যাচ শেষে জয়ের নায়ক আফিফ তার ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে সেরা ব্যাটসম্যান ও প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের ট্রফিসহ ছবি দেন। আর অমনি শুরু হয়ে যায় লাইক ও কমেন্টের ঝড়। অজস্র তরুণী তার সাফল্যে আপ্লুত হয়ে অভিনন্দিত করেন। কেউ কেউ আবার ভালবাসার মানুষ ও স্ত্রী হওয়ার বাসনাও ব্যক্ত করেন।
একাধীক তরুণী তার কমেন্ট বক্সে লিখেছেন, I can be your wife, I love Afif, Will you marry me? I can be wife.
কমেন্ট বক্সে আফিফের প্রতি তরুণীদের এই অনুরক্ততা চকিতেই শহিদ আফ্রিদিকে মনে করিয়ে দিল। আপনাদের সবার মনে আছে নিশ্চয়ই? না থাকলে চলুন ২২ বছর আগে ফিরে যাই।
১৯৯৮ সালের ইন্ডিপেনডেন্স কাপের কথা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে চলছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। বাংলাদেশী এক তরুণী প্ল্যাকার্ড হাতে গিয়েছিলেন স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচটি দেখতে। সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ শহীদ আফ্রিদি প্লিজ ম্যারি মি’। তাতে ঝড় ওঠে বিশ্ব মিডিয়ায়, ম্যাচের পারফরম্যান্স ছাপিয়ে খবরের শিরোনাম হয় আফ্রিদির গ্ল্যামার। আনুষ্ঠানিকভাবে সেদিন থেকেই পোস্টার বয় আফ্রিদি হয়ে উঠেন হার্টথ্রব। এরপর পৃথিবীর যে প্রান্তেই খেলেছেন, ‘ম্যারি মি আফ্রিদি’ লেখা প্ল্যাকার্ড চোখে পড়েছে হরহামেশাই।
পাকিস্তানি এই অলরা্উন্ডারের ইমেজ সম্ভবত বাংলাদেশী তরুণ অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রুবর ওপরেও ভর করেছে! একজন দুজন নয়, দেশের অসংখ্যা তরুণী তার গ্ল্যামার ও গুণে মুগ্ধ।
আফ্রিদির সেই সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ততোটা জনপ্রিয়তা ছিল না। তেমন ব্যবহারও ছিল না। তাই অভিব্যক্তি জানানোর জন্য প্ল্যাকার্ডের আশ্রয় নিতে হতো। কিন্তু সময় পাল্টেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো এখন জনপ্রিয়। অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্যও। তাছাড়া মহামারী করোনার কারণে সেই মার্চ থেকে মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে পারছেন না দর্শকরা। ফলে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই অভিব্যক্তি জানানোর একমাত্র মাধ্যম। আফিফে মুগ্ধ তরুণীরা বেছে নিতেছে সেটাই।
লাল সবুজের জার্সি গায়ে ছোট্ট কারিয়ারেই ঝলক দেখিয়েছেন আফিফ। গেল বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের অংশগ্রহনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি ট্রাই সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রায় হারতে বসা ম্যাচটি একাই ২৬ বলে ৫২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে জিতিয়েছেন আফিফ। শুধু কি তাই ঘরোয়া ক্রিকেট এবং বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেও ২১ বছর বয়সী এই তরুণ রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর।
আচার-আচরণে লাজুক স্বভাবের আফিফ কথাও বলেন বেশ মেপে। নেয়ায়েত প্রয়োজন না হলে বলেনই না। প্রয়োজনীয় কথাটিও দৈর্ঘ্য-প্রস্থে বেশ ছোট। এত ছোট্ট বয়স কিন্তু বেশ গুরুগম্ভীর ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
পারফরম্যান্স ও ব্যক্তিত্ব এই দুইয়ের সমন্বয়েই হয়ত দেশের তরুণীদের হার্টথ্রব হয়ে উঠেছেন তরুণ আফিফ।