বিশ্বকাপে নাও খেলতে পারতাম: সাকিব
৫ নভেম্বর ২০২০ ১৭:০৪
আইসিসি কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পাবার আগে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে স্বপ্নের ক্রিকেট খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান। দল ফাইনালে ওঠার কারণেই কিনা গত বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার উঠেছে নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসনের হাতে। তবে অনেকের মতে, বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় সাকিব।
৮ ম্যাচে বাংলাদেশি তারকা রান করেছিলেন ৬০৬। দশ ম্যাচে কেন উইলিয়ামসনের রান ছিল ৫৭৮। এদিকে, বল হাতে ১১টি উইকেটও নিয়েছিলেন সাকিব। বাকিদের ব্যর্থতায় সাকিবের কাঁধে চড়েই বিশ্বকাপে এগুচ্ছিল বাংলাদেশ। গত বিশ্বকাপে সাকিব বাংলাদেশের হয়ে যেভাবে খেলেছেন আগের কোনো বিশ্বকাপেই একজন ক্রিকেটার এমন দাপুটে পারফর্ম করতে পারেননি। অথচ বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার জানালেন, বিশ্বকাপটা খেলতে হয়েছে কঠিন চাপ নিয়ে। বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কিনা সেই শঙ্কাও ছিল।
আইপিএলে জুয়াড়ি তিনবার যোগাযোগ করলেও তা দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানাননি সাকিব। জুয়াড়ির সঙ্গে দেখা করার আগ্রহও প্রকাশ করেছিলেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (এসিইউ) তদন্ত শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের শেষ দিকে। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে এসে দোষ স্বীকার করেও নিয়েছিলেন সাকিব। অর্থাৎ সাকিব জানতেন , যে কোনো সময় আসতে পারে শাস্তির ঘোষণা। এই শঙ্কা নিয়ে খেলতে হয়েছে বিশ্বকাপে।
গতকাল নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, বিশ্বকাপের আগেও নিষিদ্ধ হতে পারতেন। বিশ্বকাপ খেলেছেন শঙ্কা নিয়েই।
সাকিব বলেন, ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল (বিশ্বকাপের সময়)। অনেক দিন ধরে এটার তদন্ত চলছিল। বা নিয়মিত আমার সঙ্গে ওরা (এসিইউ) যোগাযোগ করছিল। স্বাভাবিকভাবেই আমার জন্য এটা অনেক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ছিল। এটা একজন খেলোয়াড়ের জন্য কোনো ভালো অনুভূতি না। ভালো কোনো কথা নয় যেটা নিয়ে আপনি ঘুমাতে যেতে পারেন। সেদিক দিয়ে অবশ্যই কঠিন একটা সময় ছিল। তারপরও আমি জানতাম…এও বুঝতে পারছিলাম হয়তো কিছু একটা হতে পারে। আবার কখনো মনে হচ্ছিল নাও হতে পারে। আমি নিশ্চিত ছিলাম না, কী ফল অপেক্ষা করছে। শেষ পর্যন্ত যখন জানলাম, তত দিনে আপনারাও জেনে গেছেন। ওই যে সময়টা যখন তদন্ত চলছিল স্বাভাবিকভাবেই আমার জন্য সহজ ছিল না ব্যাপারটা।’
শাস্তি আসতে পারে, এমনটা ভেবে বিশ্বকাপে পারফর্ম করার জিদ ছিল কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, ‘ওই ঘটনা আসলে বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তদন্ত শুরু হয়েছিল নভেম্বর-ডিসেম্বরের (২০১৮) দিকে। বিশ্বকাপের আগেই নিষিদ্ধ হতে পারতাম। সেটা হয়নি। তবে ওটা আমাদের মাথায় কাজ করেনি যে এটার কারণে ভালো করতে হবে। তবে হ্যাঁ বিশ্বকাপে আমার ভালো করার খুবই ইচ্ছে ছিল। এর আগে যতগুলো বিশ্বকাপ খেলেছি, বলার মতো ভালো করিনি। নিজের যে সুনাম, মনে হয়নি যে বিশ্বমঞ্চে সেটি তুলে ধরতে পেরেছিলাম। আমার কাছে মনে হচ্ছিল এটাই সেরা সময়, বয়সও সমর্থন করছিল। অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে ক্রিকেটে একটা সেরা সময় থাকে, সে দিক দিয়ে আমার জন্য একেবারে যথার্থ একটা সময় ছিল এটা। তখন চেষ্টা করেছি সেটা কাজে লাগাতে।’
উল্লেখ্য, জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়ে সংশ্লিষ্টকে না জানানোর অপরাধে ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত অক্টোবরের ২৮ তারিখে। মুক্ত সাকিব এখন ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষা করছেন।
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাংলাদেশ ক্রিকেট সাকিব আল হাসান সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা