কোচের নাম জানেন না সাকিব!
২৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০২
চট্টগ্রাম থেকে: তামিম ইকবালের নেট অনুশীলন শেষ হতেই ব্যাটিংয়ে এলেন সাকিব আল হাসান। তার আগে লেগ স্ট্যাম্প গার্ড নিবেন। সেটা নিশ্চিত করতেই ব্যাট প্লেস করে নবনিযুক্ত ব্যাটিং কোচ জন লুইসের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন। বিপত্তিটি ঘটে গেল তখনই। কোচের নাম যে জানা নেই তার! অনন্যপায় হয়ে পাশে অনুশীলনরত সতীর্থদের জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাটিং কোচের নাম যেন কি? একজন বলে দিলেন, জন লুইস। ও লুইস! ওকে।, হাঁক ছেড়ে বললেন লুইস, দেখতো আমার পজিশন আছে নাকি? লুইস হ্যাঁ বললেন। এরপরে কিছু একটা বললেন যেন। এরপর শুরু করে দিলেন উইন্ডিজ বধের প্রস্তুতি।
অবশ্য তার নাম না জানার পেছনে কারণও আছে। জাতীয় দলের নতুন নিয়োগ পাওয়া এই ব্যাটিং কোচের সঙ্গে তার খুব একটা কাজ করা হয়ে উঠেনি। কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর ১৩ দিন আগে (৭ জানুয়ারি) ঢাকায় এসে ব্রিটিশ এই কোচ ছিলেন ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে। কাজে যোগ দিয়েছেন ১৮ তারিখে। অর্থাৎ সিরিজ শুরুর মাত্র ২ দিন আগে। হয়ত সিরিজের ডামাডোলে তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক পরিচিতিটা সাকিবের হয়ে উঠেনি।
যাই হোক, উইন্ডিজদের হোয়াইটওয়াশের মিশনের প্রস্তুতির শুরুটা কিন্তু ভাল করতে পারেননি সাকিব। রোববার (২৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলনে নেমে রুবেল হোসেনের একেবারে প্রথম ডেলিভারিতেই হয়েছেন কট বিহাইন্ড। পরের ডেলিভাগুলোতেও খুব একটা স্বাচ্ছন্দে ছিলেন বলে মনে হল না। অবশ্য শুধু রুবেলই নন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও তাসকিন আহমেদের বল খেলতে তাকে বেশ ধুকতে হয়েছে। তবে স্পিনারদের দারুণ সাবলীল ছিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।
অবশ্য সাকিবের যে প্রতিভা তাতে তার নেট অনুশীলন দেখে বলার উপায় নেই ম্যাচে তিনি কী করতে যাচ্ছেন। কেননা আইসিসির একবছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার টুর্নামেন্ট; বঙ্গবন্ধু টি টোয়েন্টি কাপের আগে নেটে উড়ন্ত অনুশীলন করলেও ম্যচে নামের সুবিচার করতে পারেননি নন্দিত এই টাইগার। জেমকন খুলনার জার্সিতে লিগ পর্বে ৮ ম্যাচে ব্যাটিং থেকে সংগ্রহ করেছেন ৮২ রান। ম্যাচ প্রতি রান গড় ১০.২৫। সমান সংখ্যক ম্যাচে উইকেট সংখ্যা মাত্র ৫টি। গড়ও ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু, ৩৪.৪০। ইকোনোমনি রেট ৫.৭৩ হলেও টুর্নামেন্টের মানদন্ডে যা মোটেও প্রশংসিত হয়নি। কারণটিও সঙ্গত, লিগ পর্বের দুই একটি ম্যাচ বাদ দিলে বাদবাকি সবক’টিই ছিল লোং স্কোরিং ম্যাচ। সেখানে এমন ইকোনমি রেট তার যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধই করেছিল বৈকি।
কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ফেরাটা হল রাজসিক। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ৭.২ ওভার বল করে ২ মেডেন, ৮ রান, বিনিময়ে ৪ উইকেট। ওভারপ্রতি গড় রান দিয়েছেন মাত্র ১.০৯। আর ব্যাট হাতে খেলেছেন ১৯ রানের ইনিংস। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে রাঙিয়েছেন নিজের ফেরার ম্যাচ। মিরপুর শের ই বাংলায় পরের ম্যাচেও বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ব্যাট হাতে খেলেছেন অপরাজিত ৪৩ রানের ম্যাচ উইনিং এক ইনিংস। তাতে কপাল পুড়েছে জেসন মোহাম্মদদের। এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৩ ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডে হেরে গেছে ক্যারিবিয় শিবির।
সেই সাকিব যে এমন নিস্প্রভ নেট অনুশীলন করেও আগামিকাল তৃতীয় ওয়ানডেতেও জ্বলে উঠবেন না তার নিশ্চয়তা কি? অতীত তো তার তীক্ষ্ণ প্রতিভার স্বাক্ষ্যই দেয়!
ক্রিকেটারদের অনুশীলন বাংলাদেশ ক্রিকেট বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ সাকিব আল হাসান