Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পয়মন্ত ভেন্যুতে’ পোড়োবাড়ির নিস্তব্ধতা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:২১

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে: সেটা ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কথা। সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্ট ক্রিকেটে সদ্য ভূমিষ্ট আফগানিস্তানের কাছে ২২৪ রানের বড় হারের বেদনায় পুড়ে মাঠ ছেড়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। তাতে দেশের সৌভাগ্যের মাঠে নেমেছিল পোড়োবাড়ির নিস্তব্ধতা। বেজেছিল বিষাদের বিউগল। এর ২ বছরও হয়নি। একই ভেন্যুতে ঠিক একই শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরও একটি টেস্ট আবারো সেই দৃশ্যের মঞ্চায়ন হলো। অভিষেকে রেকের্ডের পসরা সাজিয়ে কাইল মেয়ার্স ব্যাট হাতে বাজালেন ধ্বংস বাঁশির সুর। তাতে খড়কুটোর মতো উড়ে গেলেন মুমিনুল হকরা। দিন শেষে ‍ ৩ ‍উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় ধরা দিল উইন্ডিজ দলে। আবারো পোড়োবাড়ির নিস্তব্ধতা নেমে এল দেশের সাগরপাড়ের এই ভেন্যুতে।

বিজ্ঞাপন

এতে করে আবারও সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রশ্নবিদ্ধ টাইগারদের সামর্থ্য। টেস্ট ক্রিকেটের ২১ বছরেও যেন তারা সাবালক হয়নি!

চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে তিন উইকেট হারিয়ে ঘোর বিপর্যয়ের অতলে হারাতে বসেছিলেন ক্যারিবিয়রা। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) পঞ্চম দিনে নেমে চতুর্থ উইকেটে জাদুকরি এক জুটি উপহার দিলেন কাইল মেয়ার্স ও এনক্রুমা বোনার যা টেস্ট ইতিহাসের দুই অভিষিক্তের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ। তাছাড়া চতুর্থ ইনিংসে এটি দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সেরা। তাদের উইকেট আঁকড়ে থাকা অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সকল স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেল মহাকব্যিক জয়।

সন্দেহাতীতভাবেই ক্যারিবিয়ানদের এই রূপকথার জয়ের নায়ক অভিষেকে ২১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা কাইল মেয়ার্স। তবে ৮৬ রান করে ফেরা এনক্রুমা বোনার কম প্রশংসার দাবীদার নন।

উইন্ডিজদের রাজসিক ব্যাটিংয়ের দিনে পঞ্চম ইনিংসের পুরোদিনই বাংলাদেশের বোলিং ছিল অধারাবাহিক। বলে টার্ন ছিল দারুণ, বাউন্সারও সময় সময় ছিল অসমান। কিন্তু অতিথিদের চাপে ফেলার মতো বোলিং উপহার দিতে পারেননি কেউ। মেহেদি মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান কিংবা মোস্তাফিজুর রহমান। কেউই এক জায়গায় বল ফেলে সিমন্স শিষ্যদের কঠিন সময় উপহার দিতে পারেননি। ফরে উরুর চোটে ডাগআউটে থাকা সাকিব আল হাসানের অভাব বারবারই ফুটে উঠেছে।

পরিতাপের শেষ এখানেই নয়। দ্বিতীয় নতুন বলেও সেভাবে কেউই ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটদের ‍ওপরে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। সেই সুযোগ শতভাগ কাজে লাগিয়ে দিনের চা পানের বিরতির আগেই টেস্টে অভিষেক শতক তুলে নেন কাইল মেয়ার্স। এরপর ব্যাট ছোটান ডাবলে দিকে। তৃতীয় ও শেষ সেশনে এসে তাও ছুঁয়ে ফেলেন। এনক্রুমা বোনারও এর মধ্যে অভিষেক টেস্ট ফিফটি তুলে নিয়েছেন। তবে শেষ করে আসতে পারেননি। ৮৬ রানে তাইজুলের ফিরেছেন এলবি’র ফাঁদে পড়ে। তবে শেষ অবধি থেকেছেন কাইল মেয়ার্স। শুধু থাকেনই-নি জয় নিশ্চিত করে তবেই ফিরেছেন ড্রেসিংরুমে।

বিজ্ঞাপন

দিনের ১২৮তম ওভারে নাঈম হাসানের তৃতীয় বলটি মিডঅনে ঠেলেই নিলেন এক রান। এরপর বাতাসে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন। উদযাপন বলতে এতটুকুই। তবে তাতে লেপ্টে ছিল গর্বিত জয়ের উচ্ছাস। যেন ক্রিকেট বিশ্বকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন, দ্বিতীয় সাঁরির দল হলেও আমরা ক্রিকেট ঐতিহ্যের ধারকয়। আমাদের অবজ্ঞা করলে ভুল করবেন। এই জয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে আরো ৬০ পয়েন্ট যোগ করল ক্যারিবিয়রা। ৪ সিরিজের ৮ ম্যাচে ২ জয়ে ১০০ নিয়ে ৯ দলের মধ্যে টেবিলের আটের জায়গা আরো সুসংহত করল ক্যারিবিয়রা।

আর পয়েন্ট শূণ্য থেকে তলানিতে পড়ে রইল টিম বাংলাদেশ। ঘরের মাঠেও থাকতে হল খালি হাতে!

সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএস

চট্টগ্রাম টেস্ট প্রথম টেস্ট বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুমিনুল হক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর