পোলার্ডের ছয় ছক্কায় ম্লান ধনঞ্জয়ার হ্যাটট্রিক
৪ মার্চ ২০২১ ১৩:৪২
হার্শেল গিবস এবং যুবরাজ সিংয়ের পর এবার সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন কাইরন পোলার্ড। তালিকায় তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে নাম লিখিয়েছেন এই ক্যারিবীয়ান। লঙ্কান স্পিনার আকিলা ধনঞ্জয়ার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি যেমন আনন্দের, তেমন বেদনারও। দুর্দান্ত বোলিংয়ে এভিন লুইস, ক্রিস গেইল এবং নিকোলাস পুরানকে তুলে নিয়ে করলেন দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক।
আর পরের ওভারেই বল করতে এসে কাইরন পোলার্ডের কাছে টানা ছয় বলে ছয়টি ছক্কা হজম করলেন। ধনঞ্জার ওই এক ওভারের প্রত্যেকটি বল সীমানাছাড়া করে থামেন পোলার্ড। অন্যদিকে টানা সাত বলে সাত ছক্কা হজম করা প্রথম বোলার হয়ে গেলেন আকিলা ধনঞ্জয়া।
পোলার্ডের কাছে ছয় ছক্কা হজম করার পরের ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই ছক্কা হজম করেন জেসন হোল্ডারের ব্যাট থেকে। টানা ৭ বলে ৪২ রান দেয়া বোলার ইতিহাসে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ওভারে ছয়টি ছক্কা হাঁকানো প্রথম ব্যাটসম্যান ছিলেন যুবরাজ সিং। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংলিশ বোলার স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে ছয়টি ছক্কার মার মারেন তিনি। সেবার ব্রডের ১৯তম ওভারে পরপর ছয়টি ছক্কা মেরে ১২ বলে করেছিলেন অর্ধশতক।
তবে যুবরাজের আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার আগে এক ওভারে টানা ছয়টি ছক্কা মারার কৃতিত্ব গড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে (ওয়ানডে) নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে এক ওভার ছয় ছক্কার রেকর্ড গড়েছিলেন এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ওভারে ছয় ছক্কা মেরে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রেকর্ড গড়েন পোলার্ড।
ক্যারিবিয়ানদের রান তাড়ায় প্রথম ওভার থেকেই শুরু হয় তাণ্ডব। ম্যাথিউসকে টানা তিন ছক্কায় ওড়ান এভিন লুইস। দ্বিতীয় ওভারে ধনঞ্জয়াকে ছক্কা মারেন লেন্ডল সিমন্স। পরের ওভারে লুইস-সিমন্স মিলে দুশমন্থ চামিরার বোলিংয়ে নেন ২১ রান। রান উৎসবের মধ্যেই চতুর্থ ওভারে হ্যাটট্রিক। ধনাঞ্জয়ার এই ওভারও শুরু হয় লুইসের ব্যাটে চার হজম করে। ৩.১ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫২। ৩ বল পরই সেটা হয়ে যায় ৩ উইকেটে ৫২!
ছক্কা মারার চেষ্টায় লুইস (১০ বলে ২৮) ধরা পড়েন লং অফে। ফেরার ম্যাচে তিনে নেমে গেইল এলবিডব্লিউ প্রথম বলেই। পরের বলেই কটবিহাইন্ড নিকোলাস পুরান। উল্লাসে মাতেন ধনাঞ্জয়া।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি চতুর্দশ হ্যাটট্রিক, শ্রীলঙ্কার চতুর্থ। রানের স্রোত তবু থামেনি। হ্যাটট্রিক ওভারটিও বাউন্ডারিতে শেষ করেন সিমন্স। লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা নিজের প্রথম ওভারে থামান সিমন্সকে। ১৫ বলে ২৬ রান করা ব্যাটসম্যান আউট হন সুইপ করতে গিয়ে। উইকেট হারিয়ে সতর্ক হবেন কী, উল্টো দনাঞ্জয়ার করা পরের ওভারেই ছক্কার ঝড়ে পোলার্ড নাম লেখান রেকর্ড বইয়ে। ছয় বলে ছয় ছক্কা!
নাটকীয়তার তখনও বাকি। পরের ওভারেই হাসারাঙ্গা পরপর দুই গুগলিতে এলবিডব্লিউ করে দেন পোলার্ড ও ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে। ১১ বলে ৩৮ করে থামে পোলার্ড ঝড়। এবার আর হ্যাটট্রিক হতে দেননি ডোয়াইন ব্রাভো। পরের ওভারের প্রথম বলে ধনঞ্জয়াকে আরেকটি ছক্কা মারেন হোল্ডার, তাতে তার টানা ৭ বলে আসে ছক্কা!
এরপর আর নাটক হয়নি তেমন। হোল্ডার ও ব্রাভো ঠাণ্ডা মাথায় দলকে নিয়ে যান লক্ষ্যে। নুয়ান প্রদিপকে ছক্কায় ম্যাচ শেষ করেন হোল্ডার (২৪ বলে ২৯*), ম্যাচের সঙ্গে ঠিক মানানসই! ব্রাভো অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ৪ রানে।
ধনঞ্জয়ার ৪ ওভারে আসে ৬২ রান, হ্যাটট্রিক করা বোলারের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। ছক্কা তাতে ৮টি। আরাধ্য হ্যাটট্রিক নাকি বেদম মার, কে জানে কোনটি বেশি মনে রাখবেন ধনঞ্জয়া!
সারাবাংলা/এসএস
আকিলা ধনাঞ্জয়া কাইরন পোলার্ড ছয় বলে ছয় ছক্কা শ্রীলংকা বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ