ডি কককে দোষ দিচ্ছেন না ফখর
৫ এপ্রিল ২০২১ ১০:২০
দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে দেওয়া ৩৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গোটা পাকিস্তান ব্যাটিং লাইন আপই ব্যর্থ। তার প্রমাণ মিলবে স্কোরকার্ডের দিকে তাকালেই। ফখর জামান ব্যতিত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে অধিনায়ক বাবর আজমের ব্যাট থেকে মাত্র ৩১। এক প্রান্তে একাই লড়াই চালাচ্ছিলেন ফখর জামান। শেষ পর্যন্ত যদিও ১৯৩ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন। আর বিতর্কের শুরুটা এখানেই।
ইনিংসের শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৩১ রানের। প্রথম বলে ডাবল নিতে গিয়ে রান আউটে কাটা পড়েন ১৯৩ রান করা ফখর। আর সেখানেই বেশ চালাকি দেখিয়েছেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কক। তিনি ওই সময় এমন একটা ভাব করেছিলেন যেন বলটি বোলারের প্রান্তের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে আদতে বলটি আসছিল তার দিকেই। আর ডি ককের এমন চালাকিতে দৌড়ানোর সময় কিছুটা গতি কমিয়ে দেন ফখর। আর শেষ পর্যন্ত রান আউট হয়ে ফিরতে হয়ে তাকে।
তবে ম্যাচ শেষে প্রশ্ন উঠেছে ডি ককের এই কাজটি যদি ইচ্ছাকৃত হয় তবে তা আইন ভঙ্গ করে। আইসিসি’র নীতিমালার ৪১.৫.১ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট লেখা আছে, ‘কোনো ফিল্ডার যদি তার কথাতে কিংবা তার কোনো অঙ্গভঙ্গিতে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তবে সেটা অবৈধ হবে।’
কিন্তু ম্যাচ শেষে ফখর জামান ডি কককে কোনো দোষ দেননি ফখর জামান। তিনি দোষটা সম্পূর্ণ নিজের ঘাড়েই নিচ্ছেন। দা ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে একটুর জন্য দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির হাতছাড়া হওয়া ফখর ১০টি ছক্কা ও ১৮টি চারে সাজান ইনিংসটি। ১৯৩ রান করা ফখর দলকে জেতাতে না পারলেও দুর্দান্ত ইনিংসের জন্য জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
এই ইনিংসের পথে দারুণ এক কীর্তি গড়েন ফখর। রান তাড়ায় ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডটি এখন তার। টপকে গেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে শেন ওয়াটসনের করা অপরাজিত ১৮৫ রান।
ফখর বলেন, ‘এটা আমার ভুল ছিল। আমি আসলে হারিস রউফের দিকে দেখছিলাম। ও যেহেতু একটু দেরি করে ক্রিজ ছেড়েছিল তাই আমি ভাবছিলাম যে ও বিপদে আছে। আমার মনে হয় না এটাতে কুইন্টনের কোনো দোষ আছে আর বাকিটা ম্যাচ রেফারির ওপর নির্ভর করছে।’
ম্যাচ শেষে প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেন, ‘কুইন্টন যা করেছে তাতে সে অনেক চালাকি দেখিয়েছে। কিছু মানুষ হয়তো তার সমালোচনা করতা পারে খেলোয়াড়িসুলভ আচরণ না করার জন্য। কিন্তু ওই সমতে ফখর জামানের উইকেটটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ তারা লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। হ্যাঁ কুইন্টন আসলেই দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।’
শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে দেওয়া ৩৪২ রানের লক্ষ্য থেকে ১৭ রান দূরে ইনিংস শেষ করে পাকিস্তান। আর দুর্দান্ত ম্যাচটি জিতে সিরিজে সমতায় ফেরে প্রোটিয়ারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩৪১/৬ (ডি কক ৮০, মারক্রাম ৩৯, বাভুমা ৯২, ফন ডার ডাসেন ৬০, মিলার ৫০*, ক্লাসেন ১১, ফেলুকওয়ায়ো ৩, রাবাদা ১*; আফ্রিদি ১০-১-৭৫-১, হাসনাইন ১০-০-৭৪-১, ফাহিম ৯-০-৬২-১, রউফ ১০-০-৫৪-৩, শাদাব ৯-০-৬৪-০, আজিজ ২-০-১১-০)।
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩২৪/৯ (ইমাম ৫, ফখর ১৯৩, বাবর ৩১, রিজওয়ান ০, আজিজ ৯, শাদাব ১৩, আসিফ ১৯, ফাহিম ১১, আফ্রিদি ৫, রউফ ১*, হাসনাইন ১২*; রাবাদা ১০-২-৪৩-১, এনগিডি ৯-০-৬৬-১, ফেলুকওয়ায়ো ১০-০-৬৭-২, নরকিয়া ১০-১-৬৩-৩, শামসি ৭-০-৬০-১, মারক্রাম ৪-০-১৬-০)।
ফলাফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায়।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ফখর জামান।
সারাবাংলা/এসএস