Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কলকাতার একাদশে সাকিবের সুযোগ কতটুকু?


৬ এপ্রিল ২০২১ ১৫:১৬

গত কয়েক বছর ধরে আইপিএলে শিরোপার দেখা পাচ্ছে না কলকাতা নাইট রাইডার্স। গত দুই মৌসুমে প্লে-অফেই উঠতে পারেনি দলটি। কলকাতা আইপিএলে এখন পর্যন্ত শিরোপা জিতেছে দু’বার, ২০১২ সালে ও ২০১৪ সালে। এই দুবারই ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে খেলেছিলেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ‘লক্ষী’ মনে করেই কিনা শিরোপাক্ষরা ঘুচাতে সাকিবকে এবার দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা।

গত দুই মৌসুম হানরাইজার্স হায়দ্রাবাদে খেলা সাকিবকে এবার নিলামে মোটা অঙ্কেই কিনেছে কলকাতা। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বাংলাদেশি অলরাউন্ডারের দাম উঠেছিল ৩ কোটি ২০ লাখ রুপি। প্রশ্ন হলো এবার দাম দিয়ে কেনা সাকিবের ভূমিকা কেমন হবে? একাদশে কি নিয়মিত দেখা যাবে তাকে?

কলকাতার বিদেশি ক্রিকেটারের সংগ্রহশালা বেশ শক্ত। সাকিবের সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক এইডেন মর্গান, কলকাতার ঘরের ছেলে বনে যাওয়া দুই ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, মোটা দামে কেনা অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার প্যাট কামিন্স, হার্ড হিটার বেন কাটিং, গতির ঝড় তোলার ক্ষমতাসম্পন্ন লোকি ফার্গুসন. শেল্ডন জ্যাকসন ও টিম সাইফার্ট আছেন কলকাতার ভান্ডারে। নিয়ম অনুযায়ী এদের মধ্যে প্রতি ম্যাচে চারজন বিদেশিকে খেলাতে পারবে দলটি। সাকিব চারজনের একজন হতে পারবেন কিনা সেটাই প্রশ্ন।

গত মৌসুমে অধিনায়কত্ব নিয়ে হাতবদল করলেও এবার শোনা যাচ্ছে শুরু থেকে বিশ্বকাপজয়ী মর্গানের ওপর ভরসা করবে কলকাতা। সে হিসেবে মর্গানের জায়গা অনেকটা নিশ্চিত। পেস আক্রমণে প্যাট কামিন্সকে উপেক্ষা করা সুযোগ কম। অজি পেসার খুবই বাজে করলে তবেই হয়তো তার বদলে লোকি ফার্গুসনকে ভাবতে পারে কলকাতা। অথবা গতিময় উইকেটে বা প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের গতি দুর্বলতা থাকলে হয়তো কামিন্স, ফার্গুসন দুজনকেই খেলাতে পারে কলকাতা। তবে প্রতি ম্যাচে এই দুজনের একজন যে খেলবেন তা অনেকটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

বাকি দুই জায়গায় এতোদিন আন্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারিন ছিলেন ‘অটো চয়েস’। দুই ক্যারিবিয়ান কলকাতার হয়ে বছরের পর বছর ধরে খেলে যাচ্ছেন। তবে এবার এই দুই জায়গাতেই পরিবর্তনের সম্ভবনা বেশি। চোটের সঙ্গে লড়তে থাকা আন্দ্রে রাসেলের আগের সেই ধার আর দেখা যাচ্ছে না। গত আইপিএলে ক্যারিবিয়ান তারকা ছিলেন একেবারেই নিস্প্রভ। একাদশ থেকে বাদও পড়তে হয়েছিল তাকে। গত দুই মৌসুম ধরে রাসেলকে কেন্দ্র করে ব্যাটিং লাইনআপ সাজিয়েছে কলকাতা। গত মৌসুমে রাসেল ব্যর্থ হওয়াতে কলকাতার ব্যাটিং লাইনআপকেও ছন্নছাড়া মনে হয়েছে। সর্বশেষ লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন রাসেল। সেখানে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। এসব ভেবেই হয়তো পেস বোলিং অলরাউন্ডার বেন কাটিংকে কিনেছে কলকাতা। গতবার কলকাতায় রাসেলের বিকল্প কেউ ছিলেন না। এবার রাসেল ব্যর্থ হলে নিশ্চয় কাটিংকে বাজিয়ে দেখবে কলকাতা। উইকেট স্পিনবান্ধব হলে এই জায়গায় সাকিবকেও ভাবতে পারে কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট।

সাকিবের সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুনীল নারিনের জায়গা নেওয়া। বারবার প্রশ্নবিদ্ধ বোলিং অ্যাকশন শুধরে আসা নারিনের আগের সেই ধার আর নেই। গতবার পুরো মৌসুম মিলে উইকেট পেয়েছিলেন মাত্র ৫টি। তাকে আরামসে খেলেছেন তরুণ ব্যাটসম্যানরাও। অনেকদিন ধরে ওপেনার হিসেবেও ব্যর্থ নারিন।

পিঞ্চ হিটিংয়ে নিজেকে টি-টোয়েন্টিতে কার্যকারী একজন ওপেনার হিসেবে পরিচিত করেছিলেন নারিন। তবে অনেকদিন ধরে পিঞ্চ হিটিংয়ের এই ফাটকা আর কাজে লাগছে না। প্রতিপক্ষ বুঝে গেছে, দ্রুতগতির পেসারদের বাউন্সে বড্ড দুর্বল নারিন। ফলে গতির ঝড়ে এখন অল্পতেই নারিনকে তুলে নিতে পারছেন প্রতিপক্ষ। এখন আর নিয়মিত ওপেনিং করতেও দেখা যায় না ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারকে। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে সুবিধা করতে পারেননি তিনি।

এসব মূল একাদশের জায়গা নড়বড়ে করে দিচ্ছে নারিনের। অপর দিকে তার জায়গায় খেলার সম্ভবনা উজ্জ্বল হচ্ছে সাকিবের। হয়তো শুরুতে নারিনের ওপরই ভরসা করবে কলকাতা। তিনি ব্যর্থ হলে সুযোগ মিলতে পারে সাকিবের। যদি তাই হয় তাহলে শুরুর কয়েকটা ম্যাচে হয়তো বেঞ্চে কাটাতে হবে সাকিবকে।

নিলাম থেকে সাকিবকে দলে ভেড়ানোর পরে কলকাতার পারফরম্যান্স এবং স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিস্ট এআর শ্রীকান্তও বলেছিলেন, উপযুক্ত বিকল্প হিসেবে সাকিবকে দলে ভেড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন নিলাম নিয়ে আলোচনা শুরু করি এবং নিলামে কোন খেলোয়াড়কে নেবো কিংবা বিকল্প চিন্তা করে রাখবো সেখানে একটি নাম বারবার এসেছে, সাকিব আল হাসান। দলে তার প্রভাব বলার বাইরে। সে ব্যাটিং করতে পারে, বোলিং করতে পারে এবং তার নেতৃত্বগুণও রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের তিনজন প্রথম সারির খেলোয়াড়ের বিকল্প সে। যেমন সুনীল, আন্দ্রে রাসেল ও মরগ্যান।’

কলকাতার পূর্ণ স্কোয়াড:

ব্যাটসম্যান: এইডেন মর্গান, শুভমান গিল, নিতিশ রানা, রাহুল ত্রিপাঠি, করুণ নায়ার, গুরকিরাত সিং মান।

পেসার: প্যাট কামিন্স, লকি ফার্গুসন, প্রসিধ কৃষ্ণ, কমলেশ নাগরকোটি, শিবম মাভি, সন্দ্বীপ বারিয়র, বৈভব অরোরা।

স্পিনার: হরভজন সিং, কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তী, পবন নেগি।

অলরাউন্ডার: সাকিব আল হাসান, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, বেন কাটিং, ভেঙ্কটেশ আইয়ার।

উইকেটকিপার: দীনেশ কার্তিক, টিম সাইফার্ট, শেল্ডন জ্যাকসন।

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৯ এপ্রিল থেকে মাঠে গড়াবে এবারের আইপিএল। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

আইপিএল-২০২১ আন্দ্রে রাসেল কলকাতা নাইট রাইডার্স সাকিব আল হাসান সুনীল নারিন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর