আবারও স্বপ্নপূরণের কাছাকাছি নেইমার
১৪ এপ্রিল ২০২১ ১৫:০৪
‘আমরা পরের রাউন্ডে উঠে গেছি। এখন আমরা আরও বড় কিছুর দিকে তাকাতেই পারি।’- কথাটা নেইমারের। কাল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বায়ান মিউনিখকে বিদায় করে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করার পর একথা বলেছেন ব্রাজিলের পোস্টারবয়। ‘বড় কিছু’ বলতে নিশ্চয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফির কথা বুঝিয়েছেন নেইমার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা তিনি আগেও জিতেছেন। বার্সেলোনার হয়ে ২০১৪-১৫ মৌসুমে। কিন্তু তখন তিনি ছিলেন লিওনেল মেসির ছায়ায়। কোনো দলকে নিজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাবেন সেই স্বপ্ন নিয়ে ২০১৭ সালে বার্সেলোনা ছেড়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। আজও সেই স্বপ্ন অপূর্ণ। গত মৌসুমে স্বপ্নপূরণের একদম কাছাকাছি গিয়েছিলেন। কিন্তু ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। এবার সেই বায়ার্নকেই বিদায় করে সেমিতে উঠল নেইমারের পিএসজি। নেইমার এবার স্বপ্ন দেখতেই পারেন!
বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদের আগের সেই ধার হারানোর পর সম্প্রতি বায়ার্ন আর পিএসজিকেই বিশ্বে সেরা দুই ক্লাব ভাবা হচ্ছে। সেই দুই ক্লাবের মধ্যে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন যখন বাদ পড়ে গেল তখন নেইমার-এমবাপেদের ভালো সুযোগ যে আছে সেটা বলতেই হবে।
গত মৌসুমের ফাইনালে বায়ার্নের বিপক্ষে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিলেন নেইমার। জার্মানির ক্লাবটির বিপক্ষে এবার শেষ আটের দুই লেগে ব্রাজিলিয়ান তারকা ছিলেন আরও ধারালো। মাঠে বল পজিশন ও আক্রমণে বায়ার্ন দুই ম্যাচেই এগিয়ে ছিল। ফলে পিএসজি কোচ প্রতিআক্রমণের ছক কষেছিলেন। আর এই ছক বাস্তবায়নে প্রধান হাতিয়ান ছিলেন নেইমার আর এমবাপে। দুজন সফলও হয়েছেন। প্রথম লেগের ম্যাচে অনেকটা এগিয়ে থাকা বায়ার্নকে ঘরের মাঠে হারতে হলো তো নেইমার-এমবাপের প্রতিআক্রমণের কাছেই!
বল পেলেই প্রতিআক্রমণে উঠে বায়ার্নের রক্ষণকে ব্যস্ত করে তুলেছেন নেইমার। তাতে যখনই এমবাপে কিছুটা ফাঁকা হয়েছেন তখনই তাকে বল বাড়িয়ে দিয়েছেন নেইমার। এই কৌশলের সঙ্গেই পেরে উঠেনি বায়ার্ন। প্রথম লেগে পিএসজির তিন গোলের দুটিই বানিয়ে দেওয়া নেইমারের। তার মধ্যে মার্কুইনহোসকে দিয়ে করিয়ে নেওয়া গোলটি চোখে লেগে থাকার মতো। নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে নেইমার নিজেদের গোলরক্ষককে পাস না দিয়ে কীভাবে হঠাৎ প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে অরক্ষিত মার্কুইনহোসের পায়ে ক্রস পাঠালেন সেটাই রহস্য বায়ার্ন ফুটবলারদের কাছে!
কাল দ্বিতীয় লেগে তো ম্যাচ সেরাই হয়েছেন নেইমার। পিএসজির মাঠেও বলের দখলে এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। কিন্তু বল পেলেই নেইমার যেভাবে ভোঁ-দৌড়ে রক্ষণ কাঁপাচ্ছিল তাতে আক্রমণ করতে গিয়েও দুবার ভাবতে হয়েছে বায়ার্নকে। এমবাপে- ডি মারিয়াকে নিয়ে মাঝমাঠ থেকে রক্ষণ পর্যন্ত বায়ার্নকে নাচিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার।
নেইমার কাল গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন অন্তত চারটি। তার মধ্যে দুবার বল পোস্টে লেগে ফিরেছে। একবার ম্যানুয়াল ন্যুয়ার পোস্ট ছেড়ে বেড়িয়ে এসে তাকে গোলবঞ্চিত করেছেন। একবার ডি মারিয়ার পাস ঝাঁপিয়ে পড়েও পা লাগাতে পারলেন না।
তাতে কী! দল তো সেমির টিকিট পেয়েই গেছে। বড় ম্যাচগুলোর জন্যই হয়তো গোল জমিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। সমীকরণ বলছে সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি বা বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে যেকোনো এক দলে মোকাবিলা করতে হবে নেইমারের পিএসজিকে। সেটা জিতলেই স্বপ্নের ফাইনাল। তারপর আবারও স্বপ্নপূরণের মঞ্চ।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কিলিয়ান এমবাপে নেইমার পিএসজি বায়ার্ন মিউনিখ