অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে নাটকীয় কতকিছুই না ঘটে যায়। হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ যেমন মুঠো গলে বেরিয়ে যায়। তেমনি মুঠোর বাইরে থাকা ম্যাচও মুঠোয় এসে যায়। পাল্লেকেলে টেস্টের শেষ দিনে তেমনই এক নাটকীয়তার আশা করছেন বাংলাদেশের গতিতারকা তাসকিন আহমেদ। এবং এখন তিনি সেদিকেই তাকিয়ে।
পাল্লেকেলে টেস্টের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের সাত বোলার মিলে বল করেছেন ৭৬ ওভার। বিনিময়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ক্যান্ডির ব্যাটিং ট্র্যাকে সবাই থেকেছেন উইকেটেশূন্য। রান প্রসবা উইকেটে শ্রীলঙ্কা নিজেদের প্রথম ইনিংসে কোন উইকেট না হারিয়ে চেপে বসেছে রান পাহাড়ে। চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটের খরচায় তাদের সংগ্রহ ৫১২ রান। দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ এগিয়ে মাত্র ২৯ রানে। হাতে আছে আর মাত্র ১দিন। সন্দেহাতীতভাবেই ম্যাচটি ড্র’র দিকে এগুচ্ছে। এমতাবস্থায় ম্যাচের পঞ্চম দিনে ধৈর্য্যশীল বোলিংয়ের বিকল্প দেখছেন না টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। আবার নাটকী কিছু হোক তাও তিনি প্রত্যাশা করছেন। এবং সেই নাটকীয়তা অবশ্যই ইতিবচক অর্থে। আরও পরিষ্কার করে বললে, লঙ্কা জয়ের মহাকাব্য রচনা করতে চাইছেন তরুণ এই বোলার।
তার মুখেই শুনুন, ‘এই টেস্টটা ড্র হওয়ার সুযোগ বেশি। তবে ক্রিকেটে যে কোন সময় যে কোন কিছুই হতে পারে। টেস্ট ক্রিকেটে বেসিক হল ধারাবাহিকভাবে বল করা। ভাল লেংথে বল করা, সারপ্রাইজড বাউন্সার করা। সেগুলো আমরা করছি। কিছু সুযোগও তৈরী হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হয়ত গ্যাপে গিয়েছে বা চার হয়ে গিয়েছে। আমি মনে করি এটা খুব ভাল ব্যাটিং ট্র্যাক। এখানে আমাদের ধৈর্য ধরে ভাল জায়গায় বল করা ছাড়া তেমন কিছু করার নেই।’
শনিবার (২৪ এপ্রিল) স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
চতুর্থ দিনের খেলায় দলের পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলারদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের দুই অনিয়মিত বোলার মুমিনুল হক ও অপরজন সাইফ হাসান। কিন্তু তবুও কেউই একটি ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারেননি। কেন এমন হল? হুট করে সবাই কেন নির্বিষ হয়ে উঠলেন? সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নে উইকেটের দায় দিলেন তাসকিন।
‘টেস্ট ক্রিকেটে এমন উইকেটে বোলারদের জন্য অনেক কঠিন। ওদের বোলাররাও দেখেন লাকমাল (সুরঙ্গ লাকমাল) ৩৫ ওভার বল করেছে। বাকি যারা আছে ভাল করেছে। আসলে উইকেটটাই এমন সুযোগ তৈরী করার অপশন কম। ভাল বলও একটু ঊনিশ বিশ হলে সেটা বাউন্ডারি হয়ে যাচ্ছে। আমরাও ৫৪১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছি। উইকেটে আরেকটু সুবিধা পাওয়া গেলে ভাল হত। বোলারদের জন্য অবশ্যই কঠিন ছিল।’
পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৫৪১ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। জবাবে দিমুখ করুনারত্মের ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি (২৩৪*) ও ধনঞ্জয় ডি সিলভার ১৫৪* রানের সুবাদে চতুর্থ দিন শেষে স্বোর বোর্ডে ৩ উইকেটে ৫১২ রান তোলে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ এগিয়ে ২৯ রানে।