ওল্ড ডিওএইচএসের মন্থর ব্যাটিংয়ে আবাহনীর প্রত্যাশিত জয়
৩ জুন ২০২১ ১৮:১২
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে জয়রথ ছুটিয়ে চলেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী লিমিটেড। প্রথম ম্যাচের পর লিগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও ওল্ড ডিওএইচএসের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় তুলে নিয়েছে আকাশী-নীল জার্সিধারিরা। ১৯ ওভারে আবাহনীর দেওয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ডিওএইচএস ৩ উইকেটের খরচায় সংগ্রহ করে ১১৩ রান। ততে ডিএল ম্যাথডে ২২ রানের জয় ধরা দিল মুশফিকুর রহিম শিবিরে।
ধুম-ধারাক্কার এই টি-টোয়েন্টির যুগে আজ ওল্ড ডিওএইচএসের ব্যাটিংটা হলো বড্ডই দৃষ্টিকটু। ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা দলটি শুরু থেকেই উইকেট আঁকড়ে থেকে রান তুলতে যেন ভুলেই গেল! ৫৩ রানে প্রথম উইকেট হারানো ওল্ড ডিওএইচএস দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে ৮৩ রানে, কিন্তু ততোক্ষণে প্রায় ১৫ ওভার খেলা শেষ। ইনিংসের শেষ অবদি এমন মন্থর ব্যাটিং অব্যাহত ছিল দলটির। দুই ওপেনার আনিছুল ইসলাম ইমন ও রাকিন আহমেদ অনেকক্ষণ উইকেটে থাকলেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে ব্যর্থ। তিনে নামা মাহমুদুল হাসান জয়ও সেই ধারা অব্যহত রাখেন। আবাহনীর টানা দ্বিতীয় জয় পাওয়ার রাস্তাটা পরিস্কার হয়েছে তাতেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আবাহনীকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওল্ড ডিওএইচএস। ইনিংসের সাত বল শেষ হতেই বৃষ্টি হানা দিলে বৃষ্টি আইনে ২০ ওভারের পরিবর্তে ম্যাচ নির্ধারিত হয় ১৯ ওভারে। ওভার কাস্ট কন্ডিশনের ম্যাচে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্তে সফলও হয়েছিলেন ওল্ড ডিওএইচএসের অধিনায়ক মোহাইমিনুল খান। কেননা দলীয় ৫০ রান তুলতেই ইনিংসের এপিটাফ লিখেছেন আবাহনীর তিন টপ অর্ডার নাইম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুনিম শাহরিয়ার।
২১ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে আব্দুর রশিদের বলে মোহাইমিনুলের তালুবন্দি হয়েছেন ওপেনার নাইম শেখ। নাজমুল হোসেন শান্তকে ১১ রানে (১০) আনিসুল ইসলাম ইমনের ক্যাচে পরিণত করেছেন অধিনায়ক মোহাইমিনুল খান। আর মুনিম শাহরিয়ার ১৩ বল থেকে ১৬ রান সংগ্রহ করে রকিবুল হাসানের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন রাকিবুল ইসলামকে।
ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। ১১ বল থেকে ৬ রান করে তরুণ স্পিনার রকিবুল হাসানের বলে হয়েছেন বোল্ড। আর নামের সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১২ টি বল খেলে নামের পাশে মাত্র ৮ রান যোগ করে পা হড়কেছেন মোহাইমিনুলের বলে। দলের রান তখন ৭২ রান।
ইনিংসের মাঝামাঝি ওল্ড ডিওএইচএস’র বোলাররা যেভাবে চেপে ধরেছিলেন তাতে খালেদ মাহমুদের শিষ্যদের শতরানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। কিন্তু মান বেঁচেছে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে।
ত্রাতার ভুমিকায় অবতীর্ন হয়ে এই জুটিতে আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন দলকে ৬১ রান এনে দিলে ১৯ ওভারে ৬ উইকেটের খরচায় স্কোর বোর্ডে ১৩৫ রানের সংগ্রহে সমর্থ হয় আবাহনী।
আফিফ হোসেন ২৯ বলে খেলেছেন ২৭ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস। আর সাইফ উদ্দিন ১৯ বলে ঝড়ো ব্যাটে করেছেন ৪০ রান।
জয়ের জন্য ১৩৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা দৃঢ়ই করেছিল ওল্ড ডিওএইচএস। ওপেনিং জুটিতে আনিসুল ইসলাম ইমন ও রাকিন আহমেদ যোগ করেন ৫৩ রান। এরপরেই অবশ্যই পা হড়কান ইমন। ব্যক্তিগত ২০ (২৭) রানে শহিদুল ইসলামের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে ৩০ রান যোগ করে সাইফ উদ্দিনের বলে ইনিংসের ফুল স্টপ টানেন রাকিন আহমেদ। যাওয়ার আগে নামের পাশে যোগ করেন ৪৩ রান। যা সংগ্রহে তিনি বল খেলেছেন ৪৪টি। তাদের এই ধীর গতির ইনিংসই দলের হারের পথ সুগম করে।
শুধুই তারাই কেন? মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটেও ধীর গতি দেখা গেছে। ১৫ রান সংগ্রহে এই টপ অর্ডার খেলেছেন ২০ বল। এরপর আরাফাত সনির বলে হয়েছেন কট অ্যান্ড বোল্ড।
মোহাইমিনুল খান অপরাজিত থেকেছেন ১০ রানে কিন্তু বল খেলেছেন ১১টি। তবে অপরাজিত থাকা অপর ব্যাটার রায়ান রহমান ১৩ বলে সংগ্রহ করেছেন ১৯ রান।