ইউরো ২০২০: ‘এ’ গ্রুপের রাজা ইতালি
৫ জুন ২০২১ ০১:১৫
ক্লাব ফুটবলের মৌসুম শেষ হলো কিছুদিন আগে। করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই মৌসুম ধরেই ঘনঘন ম্যাচ খেলতে হচ্ছে ফুটবলারদের। মৌসুম শেষে তাই নিশ্চয় ক্লান্ত ফুটবলাররা। এর মধ্যেই একদিকে শুরু হচ্ছে কোপা আমেরিকা অন্য দিকে ইউরো। ক্লান্তি নিয়ে ফুটবলের জনপ্রিয় এই দুই টুর্নামেন্টে ফুটবলাররা কেমন খেলেন সেটাই দেখার।
সবকিছু ঠিক থাকলে ইউরো শুরু হবে ১১ জুন, শেষ হবে ১১ জুলাই। কারা জিতবে এবারের ইউরো? ফাইনালের আগে এটা শত কোটি টাকার প্রশ্ন! এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন দল প্রাইমমানি পাবে ১ কোটি ইউরো। টাকার অঙ্কে ১ কোটি ইউরো প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ফলে প্রশ্নটাকে ১০০ কোটির টাকার বলাই যায়। দামি প্রশ্নটা টুর্নামেন্টের ফাইনালের দিনের জন্যই তোলা থাক। তার আগে চলুন, গ্রুপ ভিত্তিতে ইউরোর দলগুলোর খুঁটিনাটি জেনে নেই-
সারাবাংলা ডটনেটের পাঠকদের জন্য আজকের আলোচনা গ্রুপ ‘এ’
গ্রুপ ‘এ’তে চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালির সঙ্গী সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক ও ওয়ালস। নিশ্চিতভাবেই এই গ্রুপের রাজা ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটি গতবার বিশ্বকাপ খেলতে পারেনি। অতিরক্ষণাত্মক, ছন্নছাড়া কৌশলের কারণে গতবার বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব পেরুতে পারেনি ইতালি। বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে বিশ্বকাপে না যেতে পারার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর জিয়ানলুইজি বুফনের কান্নাটা হয়তো ভুলতে পারেনি কেউই। আরও একটা বিশ্বকাপ খেলার প্রবল চেষ্টাটা অপূর্ণই থেকেছে ইতালির ইতিহাসে অন্যতম সেরা ফুটবলারের। তবে সেই দুর্দশা ইতালি কাটিয়ে উঠেছে দুর্দান্তভাবে।
রবের্তো মানচিনির কোচের দায়িত্বে বসার পর থেকেই বদলের শুরু ইতালির। গত দুই বছর একটা ম্যাচও হারেনি ফিফা র্যাংকিংয়ের সাত নম্বরে থাকা দলটি। নিশ্চয় গ্রুপ পর্বের বাঁধা টপকে ইউরো জয়ের ছঁকই কষছে মানচিনির দল। সে সামর্থও যে আছে গত দুই বছরে তা বারবার দেখিয়েছে ইতালি।
বুফনের অবসরের পর তার মতো প্রহরী পাওয়া যাবে কিনা সংশয়ে ছিলেন অনেকে। তবে তরুণ জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার উত্থানে সেই শঙ্কা কেটে গেছে কবেই। রক্ষণে দুই অভিজ্ঞ জর্জো কিয়েল্লিনি ও লিওনার্দো বোনুচ্চি গত প্রায় এক দশক ধরেই ইতালির ইঞ্জিন। মাঝমাঠে আছেন মার্কো ভেরাত্তি, জর্জিনিও, পেল্লেগ্রিনির মতো দুর্দান্ত টেকনিক্যাল ক্ষমতাসম্পন্ন ফুটবলার, যারা কিনা হুট করেই উঠে যেতে পারেন আক্রমণে। আক্রমণভাগের দুই সেনানী কিয়েসা আর ইনসিনিয়া আছেন দারুণ ফর্মে। সব মিলিয়ে ইতালি যে ইউরো জিততেই এবার মাঠে নামবে তা আলাদা করে না বললেও চলবে।
গ্রুপের বাকি তিন দলের প্রধান লক্ষ্য নিশ্চয় গ্রুপ পর্ব পেরুনো। বাকি তিন দলের মধ্যে তুরস্ক একটু পিছিয়ে। তবে সুইজারল্যান্ড ও ওয়ালস শক্তির বিচারে কাছাকাছি। ফলে ফেভারিট ইতালির সঙ্গে দ্বিতীয় দল হিসেবে গ্রুপ পেরুনোর যুদ্ধটা জমারই কথা। ওয়ালসের দলটা গ্যারেথ বেলকে কেন্দ্র করে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে যে তিনি বিশেষ কিছু বারবারই তা প্রমাণ করেছেন বেল। অ্যারন রামসের দিকেও নিশ্চয় তাকিয়ে থাকবেন ওয়ালস সমর্থকরা। তবে প্রতিপক্ষ এই দুজনকে বোতলবন্দী করতে পারলে বাকিদের জন্য ম্যাচ জয়ের সুযোগ তৈরি করা কঠিনই হবে। তাছাড়া মাঠের বাইরের সময়টাও ভালো কাটছে না ওয়ালসের। নারী কেলেঙ্কারির কারণে কিছুদিন আগে ছাটাই করা হয়েছে কোচ রায়ান গিগসকে। তার জায়গায় ইউরোতে বেলদের কোচ রব পেজ।
সুইজারল্যান্ডের স্কোয়াডে অভিজ্ঞ আর তরুণ্যের সংমিশ্রন। দলটার মুল কারিগর জেরদান শাকিরি। লিভারপুল তারকাকে সম্প্রতি ইনজুরির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে, বাছাই পর্বে নিয়মিত খেলতে পারেননি তিনি। তবে ইউরোর মূল লড়াইয়ে তিনিই সুইজারল্যান্ডের মেরুদণ্ড। ফিফা র্যাংকিংয়ের ১৩ নম্বরে থাকা দলটি বাছাই পর্বের আট ম্যাচের মধ্যে হেরেছে মাত্র একটিতে। জয় পাঁচটিতে, বাকি দুটি ড্র।
ফিফা র্যাংকিংয়ে তুরস্ক (২৯ নম্বরে) কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও দলটির আক্রমণভাগের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স যেকোনো দলের জন্যই ভীতিকর। বাছাই পর্বে প্রতিপক্ষকে ১৮ গোল দিয়েছে তুরস্ক, বিপরীতে গোল হজম করেছে মাত্র তিনটি। মাত্র ১ ম্যাচ হারার বিপরীতিতে তুরস্ক জিতেছে সাত ম্যাচ।