তুরস্ককে হারিয়ে ইউরোর উদ্বোধনী রাঙাল ইতালি
১২ জুন ২০২১ ০২:৫৪ | আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ১৩:৪৩
করোনা মহামারির কারণে এক বছর পিছিয়ে পড়া ইউরো-২০২০ এর আসর অবশেষে মাঠে গড়াল। ইতালির রোমার এস্তাদিও অলিম্পিয়াকোতে আতশবাজি পুড়িয়ে জমকালোভাবেই শুরু হলো ইউরো। আর উদ্বোধনী দিনে একমাত্র ম্যাচে তুরস্ককে আতিথ্য দেয় ইতালি। ঘরের মাঠে গ্রুপ ‘এ’তে নিজের প্রথম ম্যাচে তুরস্ককে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের শুরুর বার্তা দিয়েছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি।
ঘরের মাঠে ম্যাচের প্রথমার্ধে ইতালি কোনো গোল করতে না পারলেও হজমও করেনি একটিও। তবে দ্বিতীর্ধেই রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বিরতি থেকে ফিরেই ৫৩ মিনিটে বেরার্দির নেওয়া শট তুরস্কের ডিফেন্ডার মেরিহ ডেমিরালের গায়ে লেগে জালে জড়িয়ে পড়ে। আর তাতেই লিড পায় আজ্জুরিরা। এরপর ৬৬ মিনিটে লেওনার্দো স্পিঞ্জজোলার অ্যাসিস্ট থেকে চিরো ইম্মোবিল ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে ইম্মোবিলের অ্যাসিস্ট থেকে লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন।
এর আগে রিমোর্ট কন্ট্রোল চালিত ছোট্ট একটি গাড়িতে মাঝমাঠে পাঠনো হলো বল। শুরু হলো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। ছোট্ট কিন্তু প্রাণ প্রাচুর্যে পূর্ণ একটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দিয়ে পর্দা উঠল ইউরো ২০২০-এর।
ঘরের মাঠে তুরস্কের ওপর গোটা ম্যাচ জুড়েই ছড়ি ঘুরিয়েছে আজ্জুরিরা। ম্যাচের ৬৩ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে তুরস্কের গোলবরাবর ২৪টি শট নেয় ইতালি। আর গোলের সুযোগ তৈরি করে ১৮টি। আজ্জুরিদের আক্রমণের পর আক্রমণ কোনো রকমে ঠেকিয়ে প্রথমার্ধ পার করে তুরস্ক। তবে দ্বিতীয়ার্ধে এমন গোছালো আক্রমণের সামনে আর দাঁড়াতেই পারেনি তারা।
অবশ্য ম্যাচের প্রথম থেকেই তুরস্কের ওপর চড়াও আজ্জুরিরা। তবে ম্যাচে নিজেদের প্রথম সুযোগ তৈরি করতে ইতালি সময় নেয় ১৭ মিনিট। সতীর্থের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে ডি-বক্সে ঢুকে বাঁকানো শট নেন লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে। তবে তাঁর শট ডান প্রান্তের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এর মিনিট পাঁচেক পর ইনসিনিয়ের নেওয়া কর্নার থেকে ডি-বক্সের মাঝখানে ফাঁকা পেয়ে লাফিয়ে উঠে হেড করেন ইতালির অধিনায়ক জর্জ কিয়েলিনি। কিন্তু তাঁর হেড দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন তুরস্কের গোলরক্ষক চাকির।
প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে এসে স্পিনাজ্জোলার করা ক্রস তুরস্কের ডিফেন্ডার চেলিকের হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে আজ্জুরিরা। তবে ভিএআরের মাধ্যমে তা পুনরায় দেখে রেফারি জানান হ্যান্ডবল হয়নি আর তাতেই পেনাল্টিও পাওয়া হয়নি ইতালির। এভাবে গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতি থেকে ফিরেই আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করে ইতালি। শুরু থেকেই তুরস্কের রক্ষণের ওপর চেপ দিতে থাকে আজ্জুরিরা। দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র আট মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত এক আক্রমণে বেরার্দি তুরস্কের ডি-বক্সে বল ক্রস করেন। এরপর সেখান থেকে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে তা নিজেদের জালেই জড়িয়ে ফেলেন তুরস্কের ডিফেন্ডার ডেমিরাল। আর তাতেই ১-০ গোলের লিড পেয়ে যায় স্বাগতিক ইতালি।
৬৬তম মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে বেরার্দি ডি-বক্সের ভেতর বল ক্রস করেন স্পিনজ্জোলার উদ্দেশ্যে। স্পিনজোলা শট নিলেও তা রুখে দেন তুরস্কের গোলরক্ষক। কিন্তু বিপদমুক্ত করতে পারেননি, আর বল চলে যায় চিরো ইম্মোবিলের কাছে। ডি-বক্সের ভেতর থেকে ইনসিনিয়ে সহজে টোকাতে বল জালে জড়ান আর ইতালি ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
২-০ গোলে লিড নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি আজ্জুরিরা। একের পর এক আক্রমণের পশরা সাজিয়ে বসেছিল এদিন রোমে। ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে চিরো ইম্মোবিলের অ্যাসিস্ট থেকে দলের তৃতীয় গোলটি করেন লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে। ডি-বক্সের ভেতর ইম্মোবিলের দুর্দান্ত এক পাস পেয়ে বল জালে জড়াতে একচুলও ভুল করেননি ইনসিনিয়ে। এরপর আরও কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করলেও শেষ পর্যন্ত আর কোনো দলই গোলের দেখা না পেলে ইতালি ৩-০ গোলের ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
ইউরো-২০২০’তে শনিবার (১২ জুন) রয়েছে তিনটি ম্যাচ।
গ্রুপ এ: ওয়েলস বনাম সুইজারল্যান্ড (বাকু অলিম্পিক স্টেডিয়াম, আজারাবাইজান, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা)
গ্রুপ বি: ডেনমার্ক বনাম ফিনল্যান্ড (পার্কেন স্টেডিয়াম, কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা)
গ্রুপ বি: বেলজিয়াম বনাম রাশিয়া, (সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম, সেন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া বাংলাদেশ সময় রাত ১টা)।
সারাবাংলা/এসএস