উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কখনোই জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। এমন এক দুর্ভাগা রেকর্ড নিয়ে লন্ডনে ওয়েম্বলিতে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। আর নিজেদের প্রথম ম্যাচে এমন ইতিহাসকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে ইংলিশরা। ইংল্যান্ডের হয়ে জয়সূচক একমাত্র গোলটি আসে রহিম স্টার্লিংয়ের পা থেকে। আর তাঁর গোলের যোগান দেন ক্যালভিন ফিলিপ্স।
এর আগে ১৯৬৮ সালের ইউরোতে যুগস্লোভাকিয়ার কাছে ১-০ গোলে হার, ১৯৮০ সালে বেলজিয়ামের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র, ১৯৮৮’তে আয়ারল্যান্ডের কাছে ১-০ ব্যবধানের হার; ১৯৯২ সালে ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র; ১৯৯৬ সালে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র; ২০০০ সালে পর্তুগালের কাছে ২-৩ গোলের ব্যবধানের হার; ২০০৪ সালে ফ্রান্সের কাছে ২-১ গোলের হার; ২০১২ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র; ২০১৬ সালের ইউরোতে রাশিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র ছিল ইংলিশদের ইউরোতে প্রথম ম্যাচে ফলাফল। অবশেষে ২০২১ সালে এসে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে ইউরোর যাত্রা শুরু হলো ইংলিশদের।
এদিন ইংল্যান্ডের জার্সিতে খেলতে নামা জুড বেলিংহাম সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক ঘটল। ১৭ বছর ৩৪৯ দিন বয়সে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরে অভিষেক হয় তাঁর।
ম্যাচের শুরু থেকেই ফেভারিট হিসেবেই খেলতে থাকে ইংলিশরা। আর ম্যাচের শুরুতেই এগিয়েও যেতে পারতো তারা। ষষ্ঠ মিনিটে ফিল ফোডেনের নেওয়া শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসলে এ যাত্রায় রক্ষা পায় ক্রোটরা। এর মিনিট তিনেক পরে কর্নার থেকে ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান ক্যালভিন ফিলিপ্স। সেখান থেকে দুর্দান্ত এক ভলি শট নেন তিনি, তাঁর দুর্দান্ত শটটি কোনো রকমে ফেরান ক্রোট গোলরক্ষক লিয়াকোভিচ।
এরপর প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা মেলেনি কোনো দলেরই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দুই দলই বেশ আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করে। তবে প্রথম গোলের সুযোগটা আসে ইংলিশদের কাছেই। ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে ফিলিপ্সের জাদুকরী এক মুহূর্তে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণকে দুমড়ে বল জালে জড়ান রহিম স্টার্লিং। বল পেয়ে ক্রোয়েশিয়ার দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে স্টার্লিংয়ের উদ্দেশ্যে থ্রু পাস দেন ফিলিপ্স। আর ডি-বক্সের ভেতর এমন দারুণ বল পেয়ে লিভাকোভিচের পায়ের মাঝখান দিয়ে বল জালে জড়ান রহিম স্টার্লিং। তাতেই খেলার সময় এক ঘণ্টা স্পর্শ করার আগেই ১-০ গোলে লিড নেয় ইংলিশরা।
এর মিনিট তিনেক পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন হ্যারি কেইন। মেসন মাউন্টের দারুণ এক ক্রস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সের দিকেই এগোচ্ছিলেন হ্যারি কেইন। তবে ডি-বক্সের ঠিক আগেই তাকে ফাউল করে ফেলে দেন ব্রোজোভিচ। আর তাতেই হাতছাড়া হয় গোলের সুযোগ।
৬৫তম মিনিটে সমতায় ফেরার দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে ক্রোটরা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে কোভাচিচের নেওয়া শট রুখে দেয় ইংলিশ রক্ষণভাগ। সেখান থেকে ফেরত আসা বলে জোরালো শট নেন রেবিচ তবে তা গোলপোস্টের অনেকখানি বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত দুই দলই আরও কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করলেও আর কোনো গোল না হওয়ায় ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই টুর্নামেন্টে শুভসূচনা করে ইংলিশরা।