কান্নায় ভেঙে পড়ে রামোস বললেন, ‘আমি আবারও রিয়ালেই ফিরব’
১৭ জুন ২০২১ ২১:৩৫
২০০৫ সালে সেভিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখানোর পর দীর্ঘ ১৬টি মৌসুম রিয়ালের রক্ষণদূর্গের অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করেছেন সার্জিও রামোস। আর ২০১৪ সাল থেকে ক্লাবের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে কাটিয়েছেন সাতটি বছর। এরপর এলো বিদায়ের ক্ষণ। বুধবার (১৬ জুন) স্প্যানিশ সময় রাত পৌনে দশটার দিকে ঘোষণা এলো রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে খেলোয়াড়ি সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে বিদায় নিচ্ছেন সার্জিও রামোস।
আর বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিদায়ী সংবাদসম্মেলনে ক্লাব প্রাঙ্গনে উপস্থিত হলেন সার্জিও রামোস। সেখানে নিজের বিদায়ী বার্তা দিলেন বিশ্বের সকল মাদ্রিদ সমর্থকদের উদ্দেশে। এ সময় দীর্ঘ ১৬ বছরের সম্পর্ক ছিন্নের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রামোস।
আরও পড়ুন: রিয়াল ছাড়লেন রামোস
কান্না বিজড়িত কণ্ঠে রামোস বললেন, ‘আমার জীবনের কঠিনতম মুহূর্তগুলোর একটি এসে গেছে। এসেছে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলার সময়। বাবার হাত ধরে আমি এখানে এসেছিলাম….(এরপর চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি)। আবেগাক্রান্ত না হওয়াটা অসম্ভব। সান্তিয়াগো বের্নাবেউ থেকে বিদায় নিতে পারলে ভালো লাগত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একদিন রিয়ালে আবার ফিরে আসবো। এবং আমি নিশ্চিত আমি অবশ্যই ফিরব। আমি রিয়াল মাদ্রিদকে আমার হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
দীর্ঘ ১৬ বছর রিয়ালে কাটানো রামোসের চুক্তি শেষ হচ্ছে। তবে গত মৌসুম থেকেই গুঞ্জন ছিল রিয়াল মাদ্রিদ তাকে এক বছরের নতুন চুক্তির প্রস্তাব দিবে কিন্তু রামোস চাইছিলেন দুই বছরের। আর এখানেই রিয়ালের সঙ্গে বনিবনা হয়নি এই স্প্যানিশ কিংবদন্তির। মার্কার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০ শতাংশ বেতন কমানোসহ ৩৫ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে এক বছরের চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল ক্লাব।
তবে শেষ দিকে এসে সেই এক বছরের চুক্তির প্রস্তাবেও সম্মত হয়েছিলেন রামোস। কিন্তু যখন তিনি সেই প্রস্তাবে রাজী হলেন তখন আর কোনো রাস্তা খোলা ছিল না। রামোস বলেন, ‘আমি এক সপ্তাহ আগে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য রাজী হয়েছিলাম। কিন্তু তখন আমি জানতে পারি যে চুক্তির সেই প্রস্তাব শেষ হয়ে গেছে। আমি জানতাম না যে চুক্তির প্রস্তাবের স্বাক্ষর করার কোনো শেষ তারিখ আছে। আমাকে কেউ সে সম্পর্কে জানায়নি।’
রিয়াল ছেড়ে রামোসের আগামী গন্তব্য কোথায়? সে সম্পর্কে এখনও কিছু নিশ্চিত না বলেই জানিয়েছেন রামোস। রিয়ালের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলাপকালে অন্যকোনো ক্লাবের সঙ্গে আলোচানাও করেননি রামোস। সে সম্পর্কে তিনি জানান, ‘অন্যকোনো ক্লাবের কথা আমার মাথাতেও আসেনি। আমি কখনো অন্য ক্লাব নিয়ে ভাবিনি। আমি বেশকিছু ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেলেও নতুন কোনো ক্লাব আমি দেখিনি।’
রিয়াল মাদ্রিদে দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে মোট চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগের সঙ্গে আছে পাঁচটি লা লিগা, দুটি স্প্যানিশ কোপা দেল রে। আরও আছে চারটি স্প্যানিশ সুপার কাপ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ এবং চারটি ক্লাব ওয়ার্ল্ডকাপ।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ১৬ মৌসুমে ৬৭১টি ম্যাচ খেলেছেন রামোস আর নামের পাশে ১০১টি গোলও যোগ করেছেন তিনি। যার মধ্যে ২০১৪ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ম্যাচের ৯২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান। এবং শেষ পর্যন্ত নিজেদের ১০ চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় করে রিয়াল।
২০২০/২১ মৌসুমে ইনজুরির কারণে বেশিরভাগ সময়ই মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে রামোসকে। আর ইনজুরির কারণে ইউরো-২০২০ এর স্পেন দলেও ডাক পাননি তিনি।
সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে রামোস তাঁর সংবাদসম্মেলন শেষ করেন, ‘সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এটা বিদায়ের চেয়েও বেশি কিছু; আবারও দেখা হবে, কেননা আমি ফিরে আসব।’
সারাবাংলা/এসএস
১৬ বছর কান্নায় ভেঙে পড়লেন রামোস রিয়াল ছাড়লেন রিয়াল মাদ্রিদ সার্জিও রামোস