মেসি জাদুতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
৪ জুলাই ২০২১ ০৯:১৬
ম্যাচের শুরুর দিকে দারুণ এক সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি লিওনেল মেসি। তবে পরে সেটা পুষিয়ে দিলেন কী দুর্দান্ত ভাবেই! দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিক গোল করেছেন, গোল করিয়েছেনও। অধিনায়কের দারুণ পারফরম্যান্সের দিনে ইকুয়েডরকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠে গেছে আর্জেন্টিনা।
সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। আজ দিনের অপর ম্যাচে টাইব্রেকারে উরুগুয়েকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেমি নিশ্চিত করেছে কলম্বিয়া। অন্যদিকে আরেকটি সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল ও পেরু।
জিততে মাঠে নানান চেষ্টা করবে আর্জেন্টিনা, কিন্তু ব্যর্থ হবে। শেষমেস সেই মেসিকেই কোনো একটা রাস্তা বের করতে হবে। শুধু এই কোপা আমেরিকা নয়, গত কয়েক বছর ধরেই দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের খেলায় চলে আসছে এমন চিত্রনাট্য। আজও তেমনই হলো। ম্যাচের ২২ মিনিটে সুবর্ণ এক সুযোগ নষ্ট করেছিলেন মেসি।
মাঝমাঠ থেকে পাঠানো ইকুয়েডরের ব্যাকপাস পেয়ে যান আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। সামনে ছিলেনে কবল গোলরক্ষক। কিন্তু মেসির নেওয়া শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এই সুযোগ মিসটা ভোগাবে কিনা তেমনটাও মনে হচ্ছিল একটা সময়। কারণ ৮৪ মিনিটে মার্টিনেজের গোলটা হওয়ার আগে ভালোভাবেই ম্যাচে ছিল ইকুয়েডর। গোলের বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল দলটি। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে না পারাতে আর পেরে ওঠা হয়নি। তাছাড়া শেষদিকে নায়ক হয়ে উঠলেন মেসি।
ম্যাচের প্রথম শটটা নিয়েছিলেন মার্টিনেজ। তৃতীয় মিনিটে তার নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক। ১৬ মিনিটে মার্টিনেজের আরেক প্রচেষ্টা বিপদমুক্ত করেন ডিফেন্ডার আরবোলেদা। ২২ মিনিটে মেসির সেই মিস। ৩৮ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় ইকুয়েডর। কিন্তু এনের ভ্যালেন্সিয়ার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
৪০ মিনিটে প্রথম গোল পায় আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের ভুলে আলগা বল পেয়ে তা অরক্ষিত রদ্রিগো দি পলকে বাড়ান মেসি। সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি তরুণ মিডফিল্ডার। পাঁচ মিনিট পর মেসির ফ্রি-কিক রুখে দেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ পেয়েছিল ইকুয়েডর। কিন্তু আবারও সুযোগ হাতছাড়া করেন ভ্যালেন্সিয়া।
৫৭ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়ার দারুণ এক শট কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক। ৬৪ মিনিটে অল্পের জন্য আত্মঘাতি গোল থেকে বাঁচে আর্জেন্টিনা। ফরোয়ার্ড গনসালেজের ফ্লিক একটুর জন্য জালে জড়েনি। ৭৪ মিনিটে মেসির শট বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
৮৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে হঠাৎই আক্রমণে ওঠে আর্জেন্টিনা। ডি-বক্সের ঠিক সামনে বল হারান ইকুয়েডর ডিফেন্ডার হিনচাপি। ডি মারিয়া হয়ে মেসির কাছ থেকে বল পান মার্টিনেজ। সহজেই গোল করেন ইন্টার মিলান তারকা। যোগ করা সময়ে ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ এক গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন মেসি।
হঠাৎ ওঠা আক্রমণে বল নিয়ে ডি-বক্সে ছোটেন ডি মারিয়া। তাকে রুখতে ফাউল করে বসেন একুয়েডর ডিফেন্ডার হিনচাপি। প্রথমে পেনাল্টির সংকেত দেন রেফারি। পরে ভিএআর এর সাহায্যে সিদ্ধান্ত বদলে বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক দেন। তা থেকে দারুণ বাঁকানো এক শটে বল জালে জড়িয়ে দেন মেসি। ঝাঁপিয়ে পড়লেও তা রুখতে পারেননি তিনি। তার কিছুক্ষণ পরই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি।
কোপা আমেরিকায় এ নিয়ে টানা চতুর্থবার সেমিফাইনালে উঠল আর্জেন্টিনা।