Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালে ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক
৮ জুলাই ২০২১ ০৩:৩৭

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাস নতুন এক অধ্যয় যোগ করল ইংল্যান্ড। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালে ইংলিশরা। ঘরের মাঠ ওয়েম্বলিতে ডেনমার্ককে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারায় ইংলিশরা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-১ গোলে সমতায় ম্যাচ শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেইনের গোলে ২-১ ব্যবধানে লিড নেয় ইংল্যান্ড। আর শেষ পর্যন্ত টিকিট কাটে প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালে।

গোটা ম্যাচজুড়ে ডেনমার্ক গোলরক্ষক ক্যাস্পার স্মাইখেলের দুর্দান্ত সব সেভ দেখা গেছে। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের ফলাফলের পার্থক্য গড়ে দেওয়া হ্যারি কেইনের পেনাল্টি শটও রুকেহ দিয়েছিলেন তিনি কিন্তু ফিরতি বল পেয়ে শট নেন কেইন। আর তাতেই ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

চলতি টুর্নামেন্টে এটি হ্যারি কেইনের চতুর্থ গোল। আর ইংল্যান্ডের হয়ে মেজর টুর্নামেন্টে সব মিলিয়ে ১০ম গোল। মেজর টুর্নামেন্টে ইংলিশদের হয়ে গ্যারি লিনেকারের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন তিনিই। ডেনমার্কের বিপক্ষে গোলে তিনি টপকে গেছেন কিংবদন্তি অ্যালান শেররকে (৯টি)।

এর আগে ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় ফ্রিকিক থেকে গোল করে ডেনিশদের লিড এনে দেন মিক্কেল ডামসগার্ড। এরপর ৩৯তম মিনিটে সাকার বাড়ানো বলে গোলমুখ থেকে নিজেদের জালেই জড়ান ডেনিশ অধিনায়ক সিমন কাহের। আর তাতেই ইংলিশরা ১-১ গোলে সমতায় ফেরে।

গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে হেরে বিদায়ের ঘণ্টা প্রায় বেজে উঠেছিল ডেনিশদের। তবে রূপকথার ন্যয় দুর্দান্ত খেলে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নকআউটে উঠে আসে ডেনিশরা। এরপর শেষ ষোলতে ওয়েলস আর কোয়ার্টারে চেক প্রজাতন্ত্রকে হারিয়ে ১৯৯২ সালের ইউরো জয়ের পর প্রথমবারের মতো সেমিফাইনলে উঠে আসে ডেনিশরা।

সেমিতে ইংলিশদের বিপক্ষে টক্করটা সমানে সমানেই দিয়েছে ডেনিশরা। গোটা ম্যাচজুড়ে দেখা মিলেছে ক্যাস্পার স্মাইখেলের অবিশ্বাস্য গোলকিপিং। ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম সেভ দেন স্মাইখেল। বাঁ দিক থেকে স্টার্লিংয়ের উদ্দেশে বল বাড়ান হ্যারি কেইন। বল পেয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শট নেন স্টার্লিং তবে তা দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন ডেনিশ গোলরক্ষক।

১৬তম মিনিটে এসে প্রতি-আক্রমণে ইংরেজদের রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় ডেনিশরা। তবে ইংরেজদের রক্ষাকর্তা বনে যান গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। এবারের টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালের আগে পাঁচটি ম্যাচ খেলে সবকটিতেই ক্লিনশিট রেখেছিলেন পিকফোর্ড। হইবার্গের মাটি কামড়ানো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান পিকফোর্ড।

ম্যাচের ২৭তম মিনিটে ইংলিশদের হয়ে ইতিহাস রচনা করেন পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে টানা ৭২০ মিনিট কোনো গোল হজম না করে জাল অক্ষত রেখেছিলেন গর্ডন ব্যাংকস। ১৯৬৬ সাল থেকে এই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন ব্যাংকস। ৫৫ বছর পরে এসে পিকফোর্ড সেই রেকর্ড ভেঙে গড়লেন নতুন এক রেকর্ড। ৭২৫ মিনিট ইংল্যান্ডের জাল অক্ষত রাখলেন তিনি।

তবে পিকফোর্ডের রেকর্ড স্পর্শ করার মিনিট পাঁচেক পরেই গোল হজম করে ইংলিশরা। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে ফ্রিকিক থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে ডেনিশদের লিড এনে দেন মিক্কেল ডামসগার্ড।

পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণের ধার বাড়ায় ইংলিশরা। একের পর আক্রমণে ডেনিশদের রক্ষণ ছিন্নভিন্ন করে ফেলছিল কেইন-স্টার্লিংরা। ডেনিশদের রক্ষণ দেওয়াল ভেদ করতে পারলেও কিছুতেই গোলরক্ষক ক্যাস্পার স্মাইখেলকে পরাস্ত করতে পারছিল না ইংলিশ আক্রমণভাগ।

খেলার ৩৮তম মিনিটে ডি-বক্সের ছয় গজের ভেতর ক্লিপ করে স্টার্লিংয়ের দিকে বল বাড়ান হ্যারি কেইন। ছয় গজের ভেতর থেকে দারুণ শট নেন স্টার্লিং তবে স্মাইখেল আরও দুর্দান্তভাবে তা রুখে দলের লিড ধরে রাখেন। কিন্তু আর বেশি সময় পারেননি রুখে রাখতে। অবশ্য প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় হলে হয়তো পেরে যেতে পারতেন স্মাইখেল তবে নিজের অধিনায়কই যখন  আত্মঘাতী গোল করে বসেন তখন আর কিছুই করার ছিল না স্মাইখেলের।

৩৯তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে যায় ইংলান্ড। ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সের মাঝে স্টার্লিংয়ের উদ্দেশে দারুণ এক ক্রস করেন বুকায়ো সাকা। তবে স্টার্লিংয়ের বল ধরার আগেই তা পা দিয়ে নিজেদের জালে জড়িয়ে ফেলেন ডেনিশ অধিনায়ক সিমন কাহের। আর তাতেই ম্যাচে ১-১ গোলে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড।

বিরতির পর ম্যাচের ৫১তম মিনিটে ক্যাস্পার ডলবার্ডের ডি-বক্সে বাইরে থেকে নেওয়া নিচু শট ঝাঁপিযে ফেরান পিকফোর্ড। চার মিনিট পর হ্যারি মাগুয়েরের হেড দুর্দান্তভাবে রুখে দিয়ে ডেনিশদের সমতায় রাখেন স্মাইখেল। ৭৩তম মিনিটে মেসন মাউন্টের ক্রসও কর্নারের বিনিময়ে ফেরান এই গোলরক্ষক। দুর্দান্ত সব সেভ দিয়ে ডেনিশদের নির্ধারিত ৯০ মিনিট ১-১ গোলে সমতায় ধরে রাখেন স্মাইখেলই।

এরপরঅতিরিক্ত সময়ের ১০৪তম মিনিটে কেইনের গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। তার স্পট কিকও ফিরিয়েছিলেন স্মাইখেল কিন্তু বল ধরে রাখতে পারেননি, আলগা বল ছুটে গিয়ে জালে পাঠান রাশিয়া বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন ওঠার অবকাশ আছে যথষ্টে। ডি-বক্সে স্টার্লিংকে বাধা দিতে জোয়াকিম পা বাড়িয়েছিলেন বটে, তবে একটু সহজেই যেন পড়ে যান ইংলিশ মিডফিল্ডার। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত ভিএআরের বজায় থাকে।

কেইনের ১০৪ মিনিটের করা গোলেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। আর তাতেই নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালের টিকিট কাটে ইংলিশরা। ১৯৬৮ সালে চার দলের আসরে সরাসরি হয়েছিল সেমিফাইনাল, যেখানে তৃতীয় হয়েছিল ইংল্যান্ড। তাই সত্যিকারের সেমিফাইনাল লড়াই হিসেবে নিলে এর আগে একবারই এই ধাপে উঠেছিল তারা; ১৯৯৬ এর ওই আসরে জার্মানির কাছে হেরেছিল দলটি।

আগামী রোববার ওয়েম্বলিতেই স্বপ্নের ফাইনালে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে দারুণ ছন্দে থাকা ইতালি ও ইংল্যান্ড।

সারাবাংলা/এসএস

ইউরো ২০২০ ইংল্যান্ড বনাম ডেনমার্ক টপ নিউজ সেমিফাইনাল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কুষ্টিয়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৮

সম্পর্কিত খবর