দুর্দান্ত জয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
১৮ জুলাই ২০২১ ২১:২৯
অনেকদিন ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না সাকিব আল হাসান। আজকের জন্য হয়তো জমিয়ে রেখেছিলেন! বাকি ব্যাটারদের ভুলের পর ভুলে দল যখন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হার দেখছিল তখন অফ ফর্ম কাটিয়ে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে অনেকটা একাই জেতালেন সাকিব। অপরাজিত ৯৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে তিন উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
রোববার (১৮ জুলাই) হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বল হাতে দুটি উইকেটও নিয়েছেন তিনি। সাকিবময় এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা জিতে নিল বাংলাদেশ।
এ নিয়ে চারবার নব্বই পেরিয়ে সেঞ্চুরি পেলেন না সাকিব। ৯৬ রানে থামতে হয়েছে দুই বার। আজকের মতো আগেরবারও ছিলেন অপরাজিত। নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কারণ আর একটু হলে সেঞ্চুরি সংখ্যা বাড়তে পারত আরও চারটি। তবে অনেকদিন পর যে রানে ফিরতে পারলেন সেটা নিশ্চয় তৃপ্তি দিবে তাকে।
আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটানোর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটা হাফ সেঞ্চুরি ছাড়া ব্যাট হাতে তেমন কিছুই করতে পারেননি সাকিব। আন্তর্জাতিক ম্যাচ কিংবা ঘরোয়া, কোথায় ব্যাট হাসছিল না। আজ এমন সময় তার ব্যাট হাসল যখন খুব করেই দরকার ছিল।
গত এক দেড় যুগ জিম্বাবুয়েকে বলেকয়ে হারিয়ে আসছে বাংলাদেশ। দলটির বিপক্ষে টানা ১৮ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। সেই সংখ্যাটা যখন ১৯ হওয়া নিয়ে ঘোড় শঙ্কা তখনই জ্বলে উঠল সাকিবের ব্যাট। প্রথমে ব্যাটিং করা জিম্বাবুয়ের ২৪০ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শুরুতে বেশ ভালোই এগুচ্ছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাস। দশম ওভারে গিয়ে ঘটল বিপত্তি।
দলীয় ৩৯ রানের মাথায় জংওয়ের বলে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিলেন তামিম ইকবাল (৩৪ বলে ২০)। তারপর আর ১৯ রান যোগ হতেই আরও দুই উইকেট পতন! দলীয় ৪৬ রানের মাথায় ২১ রান করে ফিরে জান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস। চারে নামা মোহাম্মদ মিঠুন টিকতে পেরেছেন মাত্র তিন বল। সেই জংওয়ের বলেই ফিরেছেন ব্যক্তিগত ২ রানের মাথায়।
এরপর মোসাদ্দেক হোসেন শিশুসুলভ এক ভুলে রান আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৫ রানের মাথায়। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৭৪/৪। এরপর মাহমুদউল্লাহ প্রতিরোধ গড়তে চেয়েও পারেননি। ৫৪ রানের জুটি গড়ে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ২৬ রান করে। দুই তরুণ মেহেদি হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেন ধ্রুবও বেশিদূর এগুতে পারেননি। কিন্তু সাকিব উইকেটে পড়ে ছিলেন সেই দশম ওভার থেকে।
তিনে ব্যাট করতে নেমে দেখেছেন একের পর এক উইকটের পতন। অনেকদিন অফ ফর্মে থাকা সাকিবের মনোযোগে সেটা চিড় ধরাতে পারেনি। একাই এগিয়ে নিয়েছেন দলকে। সবচেয়ে বড় সঙ্গটা পেয়েছেন তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের কাছ থেকে। অষ্টম উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েছেন দুজন।
একটা সময় মনে হচ্ছিল, সাকিবের সেঞ্চুরিও হচ্ছে বাংলাদেশ ম্যাচও জিতছে। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সময় বারবারই দেখা গেল নিজের সেঞ্চুরি সম্ভবনা সত্যি করার চেয়ে দলের রান বাড়ানোতেই বেশি মনোযোগ ছিল সাকিবের।
৪৯.১ ওভারে চার মেরে দলের তিন উইকেটে জয় নিশ্চিত করেছেন। অপরাজিত ৯৬ রানের ইনিংসে এটা তার ৮ নম্বর ছয়। ছক্কা নেই, বল খেলেছেন ১০৯টি। সাইফ উদ্দিন ৩৪ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ ২৬, লিটন দাস ২১ ও তামিম ইকবাল ২০ রান করেন।
এর আগে নির্ধারিত ৫০ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান তোলে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে ৪৬ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম।