Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাল শুরু বাংলাদেশের অজি আক্ষেপ ঘুচানোর মিশন


২ আগস্ট ২০২১ ২১:৪১

২০০৬ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১০২টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে ৩৪ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এই ৩৪ জয়ের একটির প্রতিপক্ষও অস্ট্রেলিয়া নয়, অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়াকে এখনো টি-টোয়েন্টিতে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার এই আক্ষেপটা ঘুচানোর চ্যালেঞ্জ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের। পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশে এসেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। কাল মাঠে গড়াবে প্রথম ম্যাচ।

সোমবার (২ আগস্ট) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। চ্যালেঞ্জ জিততে পারবে বাংলাদেশ? উত্তরটা সময়ের জন্যই তোলা থাক।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ যে খুব বেশি টি-টোয়েন্টি খেলেছে তেমনটি কিন্তু নেই। এখন পর্যন্ত শুধু আইসিসি আয়োজিত টুর্নামেন্টেই এই ফরম্যাটে দেখা হয়েছে দুই দলের। যাতে চার বারের দেখায় প্রতিবারই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। অন্য ফরম্যাটেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশে পরিসংখ্যান যাচ্ছে-তা। ২১ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র ১টিতে, মোহাম্মদ আশরাফুলের সেই অবিস্মরণীয় সেঞ্চুরির দিন। ছয় টেস্ট খেলে বাংলাদেশ জিতেছে একটিতে, ২০১৭ সালে ঘরের মাটিতে। এবারের পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা সেসব পরিসংখ্যান উন্নতির বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রথম কারণ, খেলাটা বাংলাদেশের মাটিতে। দেশের মাটিতে নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশ কয়েক বছর ধরেই শক্ত প্রতিপক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কন্ডিশনের সুবিধা আরও বেশি পাবেন টাইগাররা। কারণ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা অভ্যস্ত তাদের দেশের স্বাভাবিক পেসবান্ধব উইকেটে খেলে আর বাংলাদেশের পিচ স্পিনবান্ধব, পিচের সুবিধা নিশ্চয় পাবে বাংলাদেশ। তার ওপর স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, প্যাট কামিন্স, অ্যারন ফিঞ্চের মতো তারকা ক্রিকেটারদের রেখে বাংলাদেশে খেলতে এসেছেন অজিরা। অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে ব্যাটিং লাইনআপে বড় কোন নাম নেই বললেই চলে। এদিকে বাংলাদেশ দলও আছে বেশ ফর্মে।

জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই জেতার আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশের সঙ্গে। দলে ডাক পেয়েই জিম্বাবুয়ে সিরিজে পারফর্ম করেছেন শামীম পাটোয়ারী, নুরুল হাসান সোহানরা। রান পেয়েছেন সৌম্য সরকার, নাইম শেখরা। বল হাতে বরাবরের মতোই দুর্দান্ত অবদান রাখা সাকিব আল হাসান জিম্বাবুয়েতে ব্যাট হাতেও রান পেয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন ধ্রুবরা ছন্দে আছেন। অজি বধে এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর কি-ই বা হতে পারে! তবে সুযোগ পেলেই তো হবেনা, কাজেও লাগাতে হবে।

ম্যাচপূর্ব ভার্চ্যূয়ালী সংবাদ সম্মেলনে সেটাই বলতে চাইলেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ‘সেরা সুযোগ কিনা সেটা বলা এই মুহূর্তে কঠিন। তারা টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল, ভালো ক্রিকেট খেলেই তাদের হারাতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল আমরা আমাদের স্কিল কতটা ম্যাচে প্রয়োগ করতে পারি। পরিস্থিতি অনুসারে কতটা প্রয়োগ করতে পারছি সেটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আমার মনে হয় ভালো একটা সিরিজ হবে। আমরা জিম্বাবুয়েতে আলহামদুলিল্লাহ ভালো খেলেছি এবং আমাদের আত্মবিশ্বাসও আছে। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি যেন নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারি।’

অজিদের বাগে পাওয়ার সময়ে আক্ষেপও আছে বাংলাদেশের। সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ তিন ক্রিকেটারকে পাচ্ছে না স্বাগতিকরা। তামিম ইকবাল চোটের কারণে সিরিজ থেকে আগেই ছিটকে গেছেন। বাবা-মা করোনায় আক্রান্ত হলে মুশফিকুর রহিম জিম্বাবুয়ে সিরিজের মাঝপথে দেশে ফিরে বায়ো বাবল ভেঙেছিলেন। পরে সব গুছিয়ে যখন ফিরতে চাইলেন ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়ার বেঁধে দেওয়া কোয়ারেন্টাইন সময় পেরিয়ে যায়, ফলে ইচ্ছা থাকলেও সিরিজটা খেলা হচ্ছে না মুশফিকের। লিটনও জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষ হওয়ার আগে দেশে ফিরেছিলেন অসুস্থ স্বজনের পাশে থাকতে। তিনিও নির্ধারিত সময়ে জৈব-সুরক্ষা বলয়ে ঢুকতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহ বলছিলেন, ‘আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে মিস করছি আমরা। লিটন, তামিম, মুশফিককে মিস করছি।’

অভিজ্ঞ তিনজনের অভাব মাঠে কতটা অনুভব করবে বাংলাদেশ সেটা নির্ভর করছে তরুণদের পারফরম্যান্সের ওপর। মুশফিকের জায়গায় সুযোগ পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মোহাম্মদ মিঠুন জিম্বাবুয়ে সিরিজে সফল হতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও হয়তো তাদের ওপর আস্থা রাখা হবে। নিচ থেকে ওপেনিংয়ে নেমে অবশ্য জিম্বাবুয়েতে রান পেয়েছেন সৌম্য সরকার। তবে তামিম, লিটন ছিটকে যাওয়ার পর স্কোয়াডে ওপেনার আছেন মাত্র দুজনই, সৌম্য আর নাইম শেখ। তরুণ এই দুজন শুরুতে মিচেল স্টার্ক ও জস হ্যাজেলউডের গতির ঝড় কতটা সামলাতে পারেন সেটা বাংলাদেশের স্কোরে নিশ্চয় বড় ভুমিকা রাখবে।

অস্ট্রেলিয়ার মূল ব্যাটারদের অনেকে না এলেও বোলিং ইউনিটে এক প্যাট কামিন্স ছাড়া কিন্তু বাকি প্রায় সবাই আছেন। মিচেল স্টার্ক কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার। যে কোনো উইকেটেই ঝড় তোলার সামর্থ আছে তার, শুরুতে ঝড় তুলতে পারদর্শী হ্যাজেলউডও। স্পিন বিষ ছড়াতে অ্যাডাম জাম্পা আছেন।

নিশ্চয় ছেড়ে কথা বলবেন না অজিরা। স্মিথ, ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েলদের অনুপস্থিতিতে সুযোগ পাওয়ারাও নিশ্চয় চাইবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এশিয়ার উইকেটে নিজেদের সামর্থের জানান দিয়ে নির্বাচকদের দৃষ্টি কাড়তে। ফিঞ্চের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব পাওয়া ম্যাথু ওয়েড বাংলাদেশ সিরিজকে নতুনদের প্রমাণে বড় সুযোগই বলরেন।

ওয়েড বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এই সিরিজ জিততে চাই। প্রতিটি ম্যাচই আমরা জিততে চাই। তবে এটা একটা সুযোগ সবাইকে দেখার যে বিভিন্ন ভূমিকায় তারা কেমন করছে, যাতে বিশ্বকাপের দল নির্বাচনের সময় বোঝা যায় কোন ভূমিকায় কে কেমন করছে। সেই সুযোগটি নিতে সবাই রোমাঞ্চিত। নানা জায়গায় নিজেদের তুলে ধরতে মুখিয়ে থাকবে অনেকেই। হ্যাঁ, অবশ্যই (বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়া) আমরা এটা চাই।’

দুই দলের ক্রিকেটারদের বাইরে বড় ভূমিকা রাখতে পারে উইকেট। মিরপুরের বরাবরই মন্থর। ব্যাটে সেভাবে বল আসে না, পেসাররা সুবিধা পান না কিন্তু স্পিনাররা পান যথেষ্ট সুবিধা। কালও এমন উইকেট হলে অস্ট্রেলিয়ার জন্য সেটা যতোটা কঠিন বাংলাদেশের জন্য ততোটাই সহজ। কিন্তু বাংলাদেশ উইকেটের ফয়দা কতোটা নিতে পারবে সেটাই প্রশ্ন, কারণ টি-টোয়েন্টিতে টাইগাররা বরাবরই অধারাবাহিক।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবগুলো ম্যাচই দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে দেখা যাবে র‍্যাবিটহোলে। লাইভ দেখতে Rabbitholebd Sports Youtube Channel -এ সাবস্ক্রাইব করুন। সাবস্ক্রাইবের জন্য ক্লিক করুন এই লিংকে র‍্যাবিটহোলবিডি স্পোর্টস

টপ নিউজ টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ মাহমুদউল্লাহ সাকিব আল হাসান


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর