ম্যানসিটির আকাশচুম্বী ব্যায়ের সাফাই গাইলেন গার্দিওলা
১৫ আগস্ট ২০২১ ১৫:৪০
গেল মৌসুমের শেষে সার্জিও আগুয়েরো বিদায়ের দিনই ম্যানচেস্টার সিটি কোচ জানিয়েছিলেন তাদের পক্ষে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে কোনো স্ট্রাইকারকে কেনা সম্ভব নয়। সে সময় তিনি বলেছিলেন মহামারি কালে তাদেরও ঠিকই ততটাই লোকসান গুনতে হয়েছে যতটা অন্যান্য ক্লাব গুনেছে। তাই এই মৌসুমে তারা হয়তো কাউকে কিনতে পারবে না। কিন্তু কয়েক মাস যেতেই বদলে গেল গার্দিওলার ভোল।
উয়েফা ইউরো চলাকালীনই শোনা যায় অ্যাস্টন ভিলা থেকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়য়ে জ্যাক গ্রিলিশকে দলে ভেড়াচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটি। কদিন আগে সিটির হয়ে অফিসিয়ালি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। এছাড়াও জোর গুঞ্জন ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড ইতোমধ্যেই হ্যারি কেইনের জন্য প্রস্তাব করেছে সিটিজেনরা। তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
তাহলে মহামারিকালে এত লোকসানের মধ্যেও কিভাবে তারা এত খরচ করে প্লেয়ার দলে ভেড়াচ্ছেন? তারা কি ফাইনান্সিয়াল ফেরা প্লে’র (এফএফপি) নিয়ম ভাঙছেন না? অবৈধভাবে ক্লাবের মালিক ব্যক্তিগত অর্থ ক্লাবের জন্য খরচ করছেন না? এমন প্রশ্ন উঠছে অহরহ। যারা এমন প্রশ্ন তুলে সিটির সমালোচনায় মেতেছেন তাদের নিয়ম ভাঙার প্রমাণ করতে বলছেন গার্দিওলা।
গার্দিওলা জানালেন তারা খেলোয়াড় বিক্রি করে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড উপার্জন করেছে বলেই গ্রিলিশের জন্য ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করতে পেরেছে। খেলোয়াড় বিক্রির ৬০ মিলিয়নের সঙ্গে জডান সানচোর বিক্রির জন্য বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছ থেকেও ১১ মিলিয়ন পাউন্ড বাগিয়ে নিয়েছে সিটি। আর তাতেই গার্দিওলা সাফাই গাইলেন তার ক্লাব এফএফপি’র কোনো নিয়ম ভাঙছে না।
‘আমরা যদি কোনো অপরাধ করে থাকি তাহলে সেটা প্রমাণ করুন।’—গার্দিওলা
এর আগে সিটি কিভাবে এত অর্থ খরচ করছে তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে লিভারপুল ম্যানেজার ইয়্যুর্গেন ক্লপ বলেছেন, ‘অবশ্য এটা সত্য যে তাদের খরচের কোনো সীমা নেই।’
‘অবশ্যই আমাদের সীমা আছে। কারণ এফএফপি আছে এখানে। আমরা বাকি সবার মতোই। এরপর ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত। আমরা প্রত্যেক মৌসুমেই নিজেদের সীমারেখা ঠিক রেখেই খরচ করি বাকিদের মতো। আর আমরা যদি কোনো অপরাধ করে থাকি তাহলে প্রমাণ করে দেখাক।’—বলেন গার্দিওলা।
গার্দিওলা মনে করেন আবু ধাবি ভিত্তিক ম্যানচেস্টার সিটির মালিকদের উদ্দেশ করে যেগুলো বলা হচ্ছে এগুলো তারাই বলছে যারা নিজ নিজ ক্লাবের অর্থ বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক নয়।
তিনি বলেন, ‘’আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি এখানে অনেক মালিকপক্ষ আছে যারা কেবল নিজেদের লাভের কথা ভাবে। আমাদের মালিকপক্ষ লোকসান করতে চায় না তবে প্রয়োজনে তারা বিনিয়োগ করবে। অতীতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড অসংখ্য শিরোপা জিতেছে কারণ তারা ক্লাবে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। সবার মনে আছে তো? ওই সময়ে তারা সিটির থেকে অনেক বেশি অর্থ খরচ করেছে।’
‘এর আগে কেবল একটা অথবা দুইটা ক্লাবই ছিল যারা খরচ করতে পারত। তবে এরপর অন্যান্য ক্লাবও বিনিয়োগ শুরু করে। চেলসিতে রোমান আব্রাহামোভিচ আসেন, আর আমাদের শেখ মনসুর। তারাও ফুটবল বিশ্বে থাকতে চায় তাহলে এখানে সমস্যাটা কোথায়?’—যোগ করেন গার্দিওলা।
তবে খরচ করলেই যে সাফল্য আসবে সেটা নিশ্চিত নয় বলেই মনে করেন গার্দিওলা। খরচ না করেও যে সাফল্য আসতে পারে সেব্যাপারে এই স্প্যানিশ ম্যানেজার বলেন, ‘এক এক ক্লাবের ধরন এক এক রকম। ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়াড় নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থায় শিরোপা জেতা সম্ভব। যেমন বার্সেলোনাতে আমি আমার দেখা সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসিকে পেয়েছি, সেই সঙ্গে একাডেমি থেকেও সাত খেলোয়াড় নিয়ে দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছি।’
সারাবাংলা/এসএস
খেলোয়াড়দের পেছনে খরচ দলবদলের মৌসুম পেপ গার্দিওলা ম্যানচেস্টার সিটি