অবিশ্বাস্য শেষ দিনে লর্ডস টেস্ট জিতল ভারত
১৭ আগস্ট ২০২১ ০৮:৪১
এখানেই হয়তো মাহাত্ম্য। যেখানে ক্ষণে ক্ষণে বদলায় রঙ বদলায়। লর্ডসে ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের শুরুটা ছিল ইংলিশদের পক্ষেই। তবে ভারতের ছুঁড়ে দেওয়া ২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রিত বুমরাহদের বোলিং তোপের মুখে পড়ে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত সিরজের ৪ উইকেট আর বুমরার ৩ উইকেটে ইংলিশরা মাত্র ১২০ রানেই গুটিয়ে যায় আর তাতেই ভারত পায় ১৫১ রানের বিশাল জয়।
লর্ডস টেস্ট জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। লর্ডসে রানের ব্যবধানে কোনো সফরকারী দলের এটিই সবচেয়ে বড় জয়।
পঞ্চম দিনে শুরুতেই মোহাম্মদ শামি আর জাসপ্রিত বুমরাহের ৮৯ রানের দুর্দান্ত জুটিতে ভর করে ভারত ২৯৮ রানের ইনিংস ঘোষণা করে। তাতেই ইংলিশদের সামনে ২৭২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য।লর্ডসে শেষ দিনে ৬০ ওভারে ইংল্যান্ডের ২৭২ রানের লক্ষ্য।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডকে শুরুতে চেপে ধরেন ভারতের পেসাররা। ইনিংসে তৃতীয় বলেই বুমরাহ ফিরিয়ে দেন ররি বার্নসকে। এই পেসারের লেগ সাইডের বলে আগে ব্যাট চালিয়ে ইংল্যান্ড ওপেনার সহজ ক্যাচ তুলে দেন মিড-অফে। শামির দারুণ এক ডেলিভারিতে পান্তের গ্লাভসে জমা পড়েন ডম সিবলি।
ইংল্যান্ডের দুই ওপেনারই আউট হন শূন্য রানে। আর এতে নিজেদেরই গড়া ২৩ বছর আগের বিব্রতকর এক রেকর্ড ভাঙে ইংলিশরা। টেস্টে কোনো দলের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি ১৬ বার শূন্যতে আউট হওয়ার রেকর্ডটি ছাড়িয়ে যায় তারা।
প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পাওয়া হাসিব হামিদ ব্যর্থ এবারও। ৪ রানে জীবন পেয়েও তিনি যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। আগের ইনিংসের শতক হাকানো রুট দলের বিপদে খেলতে থাকেন আস্থার সঙ্গেই। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি জনি বেয়ারস্টো। দ্বিতীয় সেশনের শেষ বলে তাকে এলবিডব্লিউ করে দেন ইশান্ত। সফল রিভিউয়ে মিলে এই উইকেট।
এরপর চা-বিরতি থেকে ফিরেই জো রুটকে ফেরায় ভারত। বুমরাহর বলে প্রথম স্লিপে থাকা বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। মাত্র ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ডের হাল ধরার চেষ্টা করেন মইন আলি ও জস বাটলার। উইকেটে পড়ে থাকাতেই নজর দেন তারা। পার করে দেন একের পর এক ওভার। ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকা এই জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সিরাজ।
প্রায় একই ডেলিভারিতে পরের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে যান স্যাম কারান। প্রথম ইনিংসের পর এবারও গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পেলেন তিনি। লর্ডসে এটাই ‘কিং পেয়ার’ এর প্রথম নজির।
অন্যরা আসা যাওয়ার মিছিলে থাকলেও উইকেটের এক প্রান্ত আকড়ে ধরে দলকে ড্রয়ের পথে রেখেছিলেন বাটলার। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন রবিনসনও। তবে বুমরাহর দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে রবিনসনকে ফিরিয়ে ইংলিশদের স্বপ্ন ভঙ্গ করেন। পরের ওভারে এসে ৯৬ বলে ২৫ রান করা বাটলার ও জেমস অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে ভারতকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন সিরাজ। ইংল্যান্ড অল-আউট হয় ১২০ রানে। আর ভারত পেয়ে যায় ১৫১ রানের বিশাল জয়। সেই সঙ্গে সিরিজেও ১-০ ব্যবধানে লিড নেয় বিরাট কোহলির দল।
সারাবাংলা/এসএস