ঋণের বোঝা আরও বাড়ল বার্সেলোনার
২১ আগস্ট ২০২১ ১১:৩৩
ঋণের বোঝায় জর্জরিত ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। সেটা কতটা বোঝা গেল লিওনেল মেসির বিদায়ে। অর্থ সংকটের কারণে ক্লাব ইতিহাসের সেরা রত্ন মেসির সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে বার্সা। আবার করোনা মহামারির কারণে ক্লাবের উপার্জনও কমেছে অনেকাংশে। এরফলেই খেলোয়াড়দের বেতনের থেকে শুরু করে ক্লাব চালানোটাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে বার্সা প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তার জন্য।
ক্লাবের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে খেলোয়াড়দের বেতনটাই ঠিকমতো দিতে পারছে না বার্সা। কেবল খেলোয়াড়দের বেতনই নয়, বার্সা সভাপতির নিজের বেতনটাও পাচ্ছেন না ঠিকমতো। এসম্পর্কে সভাপতি বলেছেন, বাধ্য হয়েই ছাড়তে হয়েছে মেসিকে। বার্সার আর্থিক অবস্থা এমন বাজে যে নিজের বেতনের জন্যও ঋণ করতে হয়েছে বললেন লাপোর্তা।
অর্থনৈতিক এই দৈন্য দশা থেকে ক্লাবকে রক্ষা করতে আরও ঋণ নিচ্ছে বার্সা। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে বার্সেলোনা নতুন করে আরও ৫৯৫ মিলিয়ন ইউরো ঋণ নিচ্ছে। তবে এই ঋণ দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ বলে তা শোধ করার জন্য খুব বেশি মাথা ঘামাতে হবে না ক্লাবটিকে। এই ঋণ ১০ বছর ধরে শোধ করবে বার্সা। আর ঋণের সুদের হার থাকবে মাত্র ১ দশমিক ৯৮।
প্রথম ধাপে ৪৫৫ মিলিয়ন ইউরো ঋণ গ্রহণ করবে বার্সা। এই ঋণের অর্থ ক্লাবের খেলোয়াড়সহ অন্যান্য কাজে ব্যয় করা হবে। পরবর্তীতে আরও ১৪০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে বার্সা। এবং তাতেও যদি ক্লাবের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান না হয় তবে আরও অতিরিক্ত ৭০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে।
ঋণের এই অর্থ পাওয়ার পরপরই নতুন করে অর্থনৈতিক কৌশল দাঁড় করাবে বার্সা। যাতে করে ভবিষ্যতে ঋণের এই বোঝা থেকে ক্লাবটি বেরিয়ে আসতে পারে।
উল্লেখ্য, বার্সার বর্তমান সভাপতি গত সপ্তাহে বলেছিলেন, আজকের দিন পর্যন্ত বার্সার মোট ঋণের পরিমান ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৩ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা।
লাপোর্তা বলেন, ‘আমাদের ঋণ এবং আমাদের কাছে অন্যদের ঋণের মধ্যে পার্থক্য ৫৫১ মিলিয়ন ইউরো। অনেক বড় অঙ্ক। ব্যাংকের কাছে ঋণ অনেক বেড়ে ৬৭৩ মিলিয়ন ইউরোয় ঠেকেছে। (সভাপতির) দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা গোল্ডম্যান স্যাকসের কাছে সংক্ষিপ্ত মেয়াদে ৮০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ নিই। তা না হলে আমরা বেতন দিতে পারতাম না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার বেতনের জন্যও ঋণ নিতে হয়েছিল।’
বার্তেমেউ এর বোর্ড অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন লাপোর্তা, ‘টেলিভিশন স্বত্বের আয়ের থেকে ৫০ শতাংশ অগ্রিম হিসেবে আগের বোর্ড ব্যাংক থেকে ৭৯ মিলিয়ন ইউরো ধার নিয়েছে, যার সুদ ৯ শতাংশ। খেলোয়াড়দের বেতন কমানোর বিষয়টিও সত্যি নয়। আমরা অনেক ধরণের বোনাস ও অন্যান্য খরচ দেখেছি। এজেন্টদের বাইরেও অন্যান্যদের পেছনে ৪০ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়েছে খেলোয়াড় কিনতে। প্রতিটি কেনার পেছনে ৮ মিলিয়ন দিতে হয়েছে সঙ্গে ২ মিলিয়ন ইউরো প্রিমিয়াম। দক্ষিণ আমেরিকায় খেলোয়াড় খোঁজার জন্য একজনকে ৮ মিলিয়ন ইউরো দেওয়া হয়েছে।’
খেলোয়াড়দের সঙ্গে আগের কমিটির চুক্তিপ্রাথা নিয়েও সমালোচনা করেছেন লাপোর্তা, ‘বেতননীতি এবং ভুল দলবদলনীতি আমরা দেখেছি দায়িত্ব নেওয়ার পর। কিংবদন্তিদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিপত্র এবং তরুণদের জন্য সংক্ষিপ্ত মেয়াদের চুক্তি, এসব সামলানো খুব কঠিন।’
সারাবাংলা/এসএস