পুরস্কৃত হচ্ছেন এরিকসনের জীবন বাঁচাতে সাহায্যকারীরা
২৫ আগস্ট ২০২১ ১০:২৩
জুনের ১২ তারিখ কোপেনহেগেনের পারকেন স্টেডিয়ামের ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচের ৪৩তম মিনিটে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ডেনমার্কের মিডফিল্ডার ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। প্রথমে ডেনমার্কের অধিনায়ক সিমোন কায়ের এগিয়ে এসে তাকে সিপিআর দেন। ততক্ষণে ডেনমার্কের চিকিৎসক দলও চলে আসে মাঠে। এরিকসেনের হৃদযন্ত্রের কাজ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন তারা।
আর তাদের তৎপরতায় বেঁচে গিয়েছিল ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের জীবন। এবার ডেনমার্ক জাতীয় দলের অধিনায়ক সিমোন কায়ের এবং চিকিৎসক দল পাচ্ছেন উয়েফার প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড। ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে বিষয়টি।
মাঠে চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে নেওয়া হয় হাসপাতালে। তার এভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্থম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ক্রীড়া বিশ্ব। সবার চাওয়া ছিল এরিকসেনের সুস্থতা। পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
উয়েফা প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ডে স্বীকৃতি পাওয়া ব্যক্তিদের ২০২০ ইউরোর ‘সত্যিকারের নায়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন উয়েফা প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্ডার সেফেরিন। অসাধারণ সাফল্য, পেশাগত শ্রেষ্ঠত্ব ও অনুকরণীয় ব্যক্তিগত গুণাবলীর স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয় এই পুরস্কার।
‘এই বছরের প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড ফুটবলকে ছাপিয়ে গেছে। জীবন কতটা মূল্যবান তার চিরন্তন স্মারক হিসেবে কাজ করে এটি। সেরে ওঠার পথে থাকা ক্রিস্তিয়ান এরিকসেন ও তার পরিবারের জন্য শুভকামনা জানাই।’—সেফেরিন।
চিকিৎসাবিদদের মধ্যে সে সময় কেউ কেউ বলেছেন, আর হয়তো ফুটবল খেলতে পারবেন না ইন্টার মিলান তারকা। তাতে কী! মাঠে ফিরতে না পারলেও এরিকসেন তো মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছেন।
ডেনিশ তারকা হঠাৎ ওভাবে মুখ থুবড়ে পড়লে উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়ে মাঠের খেলোয়ার, রেফারি, গ্যালারিতে থাকা দর্শক এবং টিভি সেটের সামনে থাকা দর্শকদের মধ্যেও। ডেনমার্ক অধিনায়ক সিমোন কায়ের তখন যে ভুমিকাটা পালন করলেন সেটা মনোযোগ কেড়েছে সাড়া দুনিয়ার।
কাছে গিয়ে বুঝলেন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন এরিকসেন, কায়ের তখন একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের ভূমিকা পালন করেছেন। জিহ্বা যেন এরিকসেনের শ্বাসনালি আটকে না দেয় সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন কায়ের। বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখেন। যতোক্ষণ পর্যন্ত মাঠের বাইরে থাকা চিকিৎসক এরিকসেনের কাছে না পৌঁছে ততোক্ষণ পর্যন্ত এই কাজে দারুণ সফল কায়ের।
অন্য সবাই যখন ভীত সন্ত্রস্ত তখন কায়ের মাথা ঠাণ্ডা রেখে এরিকসেনের জীবন বাঁচাতে যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছেন সেটা নিশ্চয় অনেকদিন মনে রাখবে ফুটবল।
দ্রুত মাঠে প্রবেশ করা ডেনমার্ক দলের চিকিৎসক ম্যাচ শেষে বলেন, একটা সময় এরিকসেনের হৃৎস্পন্দন প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক মার্টিন বোসেন বলেন, ‘আমি প্রথমে ওকে যখন দেখি, তখন সে নিশ্বাস নিতে পারছিল। তাঁর হৃৎস্পন্দন ছিল। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তখন তাঁকে সিপিআর দিতে হয়। পুরো জিনিসটাই খুব দ্রুত হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এরিকসেনকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।’
সারাবাংলা/এসএস
উয়েফা উয়েফা ইউরো উয়েফা প্রেসিডেন্টস অ্যাওয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন ডেনমার্কের মেডিকেল টিম সাইমন কাইয়ের