শেষবার ২০১৯ সালে কলকাতায় দিবারাত্রীর টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতকের দেখা পেয়েছিলেন বিরাট কোহলি। সময়ের হিসেবে ২১ মাসের বেশি। আর টানা ৫০ ইনিংস শতকহীন কোহলি। ক্যারিয়ারে এর আগের এত দীর্ঘ সময় শতকের খরা ছিল ২৫ ইনিংস সেটিও ২০১৪ সালে। এবারের খরা ইনিংসের হিসেব আগের চেয়েও দ্বিগুন। হেডিংলিতে অ্যান্ডারসনের বলে মাত্র ৭ রানে ফিরেছেন কোহলি। আর তাতেই শতকের খরা ছুঁয়েছে ৫০ ইনিংসে।
দীর্ঘ এই ৫০ ইনিংসে ১৭টি অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন কোহলি। যেখানে তার রানের গড় ৪০ দশমিক ২৭। অথচ তিন ফরম্যাটেই তার ক্যারিয়ার গড় পঞ্চাশেরও বেশি, ওয়ানডেতে প্রায় ৬০। গত ৫০ ইনিংসে পাঁচবার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। চলতি ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্টে নটিংহ্যামে ফিরেছিলেন শূন্য রানে। লর্ডস টেস্টের দুই ইনিংসে করেছেন ৪২ ও ২০ রান। লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংসে অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে আউট হয়েছেন।
লর্ডস টেস্টে শেষ দু’দিন কোহলি-অ্যান্ডারসনের কথার লড়াই বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। সেই কারণেই বুধবার হেডিংলিতে কোহলিকে ফেরানোর পর অ্যান্ডারসনকে বাড়তি উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়। তবে এবার কথার লড়াই বা কোনো হুংকার ছাড়েননি অ্যান্ডারসন। বরংচ উল্টো সুর গেয়েছেন কোহলির প্রশংসা করে। এই নিয়ে চলতি সিরিজে দু’বার বিরাট কোহলির উইকেট তুলে নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। ২০১৪-র সিরিজেও কোহলিকে বারবার বিপদে ফেলেছিলেন জেমস অ্যান্ডারসন। এই নিয়ে মোট সাতবার ভারত অধিনায়ককে আউট করলেন তিনি।
অ্যান্ডারসন বলেন, ‘কোহলির উইকেটটা অবশ্যই বিশেষ। আমার আর বিরাটের মধ্যে বহু বছর ধরেই একটা লড়াই চলছে। কোনো সন্দেহ নেই, ও দারুণ ব্যাটার। কিন্তু যেকোনো বিপক্ষ দলই চাইবে, ওর ব্যাটকে চুপ করিয়ে রাখতে। বিশেষ করে এরকম পাঁচ ম্যাচের সিরিজে। কারণ ও একবার ভালো খেলতে শুরু করলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।’
অবশ্য অ্যান্ডারসন একাই নয়, কোহলির বিপক্ষে গোটা ইংলিশ বোলিং বিভাগই বিশেষ পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। আর সে অনুযায়ী বল করতে পেরেই অ্যান্ডারসন তৃপ্তি প্রকাশ করেছেন।
‘যে ভাবে আমরা গোটা সিরিজে বিরাটের বিরুদ্ধে বল করছি, সেটা দারুণ কাজে দিয়েছে। ওকে দমিয়ে রাখতে আমাদের এটাই করে যেতে হবে। আমরা যেটা করতে চেয়েছিলাম, সেটাই করে গিয়েছি। লক্ষ্য থেকে সরতে চাইনি। বাকি কোনও কিছু নিয়ে মাথা ঘামাইনি।’—অ্যান্ডারসন।
ইংল্যান্ডের অন্য ভেন্যুর তুলনায় হেডিংলির উইকেটে সুইং একটু বেশিই হয়। তবু টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এটিই ভারতীয়দের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল! প্রথমে বোলিং করতে নেমে ইংল্যান্ডের পেসারদের সুইং আর পেসে বিধ্বস্ত ভারতীয়রা। বিরাট কোহলির দলের প্রায় প্রতিরোধহীন ইনিংসটিকে মাত্র ৭৮ রানে গুটিয়ে দিয়েছে ইংলিশরা।
টেস্টে ভারতীয়দের নবম সর্বনিম্ন স্কোর এটি। ইংল্যান্ডের মাটিতে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডে ৪২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। ইংল্যান্ডের মাটিতে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ড সেটিই।