কার্টিস তোপে বিধ্বস্ত নেদারল্যান্ডস
১৮ অক্টোবর ২০২১ ১৯:২০
বল হাতে কার্টিস ক্যাম্পারের বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পর গ্যারেথ ডিলনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নেদারল্যান্ডসকে ৭ উইকেটের হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। ডাচদের দেওয়া ১০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৯ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে তরী ভেড়ায় আইরিশরা।
টুর্নামেন্টের তৃতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়েছিল আয়ারল্যান্ড। টসে জিতে নেদারল্যান্ডসই ব্যাটিং বেছে নিয়েছিল। ডাচ অধিনায়ক পিটার সিলারের সেই সিদ্ধান্ত যে খুব একটা ভুল ছিল না, ৯ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৫০ রান সংগ্রহ করে সেটিই প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন ব্যাটাররা। তবে দশম ওভারে গিয়েই সব হিসাব পালটে দিলেন ক্যাম্পার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যত অঘটন
ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলটি ক্যাম্পার ওয়াইড দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বলটি কলিন অ্যাকারম্যান ড্রাইভ করেছিলেন, তবে সেটি থমকে যায় এক্সট্রা কভারে। তৃতীয় বলটি লেগ স্ট্যাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাট চালিয়েছিলেন অ্যাকারম্যান। কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় আয়ারল্যান্ড। আল্ট্রা এজে ব্যাটের স্পর্শ পাওয়া গেলে ম্যাচে প্রথম উইকেট পেয়ে যান ক্যাম্পার। ব্যাটিংয়ে আসেন নেদারল্যান্ডসের অন্যতম নির্ভরতা রায়ান টেন ডয়েসকেট। প্রথম বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি।
ক্যাম্পারের হ্যাটট্রিক বলের সামনে দাঁড়ান স্কট এডওয়ার্ডস। ফুল লেন্থের বল আঘাত হানে তার সামনের পায়ে। উইকেটের গন্ধে সমন্বরে আবেদন করে আয়ারল্যান্ড, তবে নাকচ করে দেন রড টাকার। তবে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ক্যাম্পার। ফের রিভিউ নেন। হক আইয়ের রিপ্লেতে ধরা পড়ে, বলটি লেগ স্টাম্পেই আছড়ে পড়ত। আর এরই মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডের প্রথম কোনো বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক বাগিয়ে নিলেন ক্যাম্পার। শুধু তাই নয়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই এটি মাত্র দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে সেই ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন অজি পেস মায়েস্ত্রো ব্রেট লি।
হ্যাটট্রিকের পর স্বাভাবিকভাবেই আয়ারল্যান্ড শিবিরে উচ্ছ্বাস। ক্যাম্পার নিজেই ভাসছিলেন সতীর্থদের অভিনন্দনে। তখনো হয়তো ভাবেননি, হ্যাটট্রিক পেরিয়ে আরও এক অনন্য অর্জনের পথেই রয়েছেন তিনি।
ওভারের পঞ্চম বলটিতে ভ্যান ডার মারউই ছিলেন স্ট্রাইক এন্ডে। ক্যাম্পার বল করেছিলেন অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। শট খেলতে গিয়েছিলেন মারউই। তা করতে গিয়ে বল স্টাম্পে টেনে নিয়ে গেলে চার বলে চার উইকেটপ্রাপ্তির অনন্য রেকর্ডের ভাগীদার হয়ে যান ক্যাম্পার।
ক্যাম্পারের বোলিং তোপের পর অবশ্য ডাচদের ইনিংসের শেষ তিন বলেও পড়েছে উইকেট। এর মধ্যে ওভারের চতুর্থ বলে পিটার সিলার আর শেষ বলে বেন্ডন গ্লোভার ক্যাচ তুলে আউট হয়েছেন। তবে মাঝের, তথা ওভারের পঞ্চম বলটিতে লগান ফন বিক রান আউট হলে মার্ক অ্যাডেয়ারের হ্যাটট্রিকটি হয়নি। তবে আইরিশ বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হতে হয়েছে নেদারল্যান্ডসকে।
১০৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দারুণ ব্যাট করতে থাকে আইরিশরা। পল স্টার্লিং এবং কেভিন ও’ব্রেইন উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ২৭ রান। এরপর গ্লোভারের বলে ভ্যান বিকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ও’ব্রেইন। আউট হওয়ার আগে ১০ বলে ৯ রান করেন ও’ব্রেইন।
এরপর অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নিও ৬ বলে ৮ রান করে ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে আইরিশরা। তবে পল স্টার্লিং এবং গ্যারেথ ডিলনের ৫৯ রানের জুটিতে জয়ের বন্দরে তরী ভেড়ে আয়ারল্যান্ডের। দলকে অবশ্য জয় থেকে মাত্র ১২ রান দূরে থাকতে ২৯ বলে ৪৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ডিলনে।
এরপর বাকি কাজটা সারেন পল স্টার্লিং এবং কার্টিস ক্যাম্পার। ৭ বলে ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন কার্টিস আর স্টার্লিং করেন ৩৯ বলে ৩০ রান। এতেই ১৫ দশমিক ১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আয়ারল্যান্ড।
ডাচদের হয়ে একটি করে উইকেট নেন ফ্রেড ক্লাসসেন, ব্র্যান্ডন গ্লোভার এবং পিটার সেলার।
ভারতের আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিশ্বকাপের খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/
সারাবাংলা/এসএস
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আইরিশদের জয় কার্টিস ক্যাম্পার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নেদারল্যান্ডস বনাম আয়ারল্যান্ড