ওমানকে হারিয়ে মূল পর্বের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ
২০ অক্টোবর ২০২১ ০০:০২
বিশ্বকাপের মূল পর্বের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে জিততেই হতো বাংলাদেশকে। ব্যাটিংয়ের শেষটা এবং বোলিংয়ের শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে মাহমুদউল্লাহর দল। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে আজ ২৭ রানে জিতেছে বাংলাদেশ।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছিল মাহমুদউল্লাহর দল। আজ জয় মিলল ওমানের বিপক্ষে। একদিন বাদে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে জিতলেও পরের রাউন্ড নিশ্চিত নয় টাইগারদের। যদি স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ওমান তাদের তৃতীয় ম্যাচটি জিতে যায় তাহলে রান রেটের হিসেবে তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ওমানের রাজধানী মাসকটের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বোলিং ইনিংসের সূচনা হয়েছে বড্ডই বাজেভাবে। বাজে বোলিংয়ে প্রথম ওভারে ১২ রান খরচ করেন তাসকিন আহমেদ। একটা উইকেট মিললেও দ্বিতীয় ওভারটা ছিল আরও দৃষ্টিকটু।
এই ওভার শেষ করতে ১১টি ডেলিভারি করতে হয়েছে মোস্তাফিজুর রহামনকে। পাঁচটি ওয়াইড দেন তরুণ পেসার। শুরুতে পথ হারানো বোলিং করেছে বাংলাদেশ। মোস্তাফিজ-মাহমুদউল্লাহর পিচ্ছিল হাতও হতাশ করল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিস করেছেন দুজন। ১১ ওভারে ওমানের স্কোর ছিল ৮০/২। এমন অবস্থা থেকে ওমানের জয় খুব সম্ভবই মনে হচ্ছিল।
১২তম ওভারে ওমানি অধিনায়ক জীসান মাকসুদকে ফিরিয়ে স্বস্তি আনেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে সাকিব আল হাসান দুর্দান্ত খেলতে থাকা যতিন্দ্রন সিংকে ফেরালে ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। এরপর একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে ওমানকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেননি সাকিব, মোস্তাফিজ। স্পিনিং অলরাউন্ডার মাহেদি হাসান আজও ভালো বোলিং করেছেন।
ওমানের মিডল ও লোয়ার অর্ডার এই তিনজনের বিপক্ষে রীতিমতো ভেঙে পড়ে। শেষ দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো ওমান ২০ ওভারে ৯ উইকেটে থেমেছে ১২৯ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচায় নিয়েছেন চার উইকেট। সাকিব চার ওভারে ২৮ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। মাহেদি একটা উইকেট পেলেও চার ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ১৪ রান।
এর আগে সাকিব আল হাসান ও নাইম শেখের ৮০ রানের দুর্দান্ত জুটির ওপর ভর করে ১৫৩ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। শুরুর এবং শেষের ব্যাটিংটা ভালো হয়নি টাইগারদের। প্রতিপক্ষ ফিল্ডারের পিচ্ছিল হাতের কল্যাণে ‘জীবন’ পেলেও ওপেনার লিটন দাস সুবিধা করতে পারেননি। ৭ বলে ৬ রান করে যখন ফিরলেন বাংলাদেশের রান তখন ১১। পাওয়ার প্লেতে দ্রুত রান তোলার ছক কষে স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মাহেদি হাসানকে নামানো হয়েছিল তিনে। মেহেদি সফল হতে পারেননি। ৪ বল খেলে কোন রান না করেই ফিরেছেন। তারপরের জুটিটাই বাংলাদেশকে দেড়শর ওপারে নিয়েছে।
তরুণ ওপেনার নাইম শেখ ও সাকিব আল হাসান তৃতীয় উইকেটে ৫৩ বলে তোলেন ৮০ রান। এই দুজন ক্রিজে থাকার সময় বড় সংগ্রহ খুবই সম্ভব মনে হচ্ছিল। কিন্তু দুর্দান্ত খেলতে থাকা সাকিব আল ১৪তম ওভারে আলসে রান আউট হওয়ার পরই পাল্টে যায় ইনিংসের গতিপথ। দ্রুত রান তোলার লক্ষ্যে আজ ব্যাটিং অর্ডারের তোয়াক্কা করেনি বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আগে পাঠানো হয় নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। দুজন উইকেটে নেমেই হিট করতে চেয়েছেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি একজনও, দুজনই সীমানায় ধরা পড়েছেন। এরপর মুশফিকুর রহিমের আউটটি ছিল একদমই দৃষ্টিকটু। ফায়াজ ভাটের এক নির্বিশ স্লোয়ারে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুশি।
সাকিব-নাইম জুটি ভাঙার পর বাকিদের কেউই সুবিধা করতে পারেননি। এই দুজন ছাড়া দুই অঙ্কের কোটা পেরুতে পেরেছেন কেবল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ১০ বলে একটি করে চার ছয়ে ১৭ রান করেছেন রিয়াদ। ৫২ রানে শেষ আট উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ওভারের শেষ বলে ১৫৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
সাকিব আল হাসান ২৯ বল খেলে ৬টি চারে ৪২ রান করেন। নাইম ৫০ বলে ৩টি চার ৪টি ছয়ে ৬৪ রান করেছেন। ওমানের হয়ে তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন বেলাল খান ও ফায়াজ ভাট।
ভারতের আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিশ্বকাপের খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/