এক ম্যাচে সাকিবের তিন রেকর্ড
২১ অক্টোবর ২০২১ ২০:৩৯
আগে ব্যাট হাতে ৩৭ বল খেলে ৪৬ রানের কার্যকর এক ইনিংস খেলে দলের বড় সংগ্রহে বড় অবদান রাখলেন সাকিব আল হাসান। পরে বল হাতে আরও কার্যকর। চার ওভার বোলিং করে মাত্র ৯ রান খরচায় তুলে নিলেন চার উইকেট। আর এই চার উইকেটে পাপুয়া নিউগিনির বিরুদ্ধে রেকর্ড গড়া জয়ের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। ব্যক্তি সাকিবের অর্জনটাও কম নয়— টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটধারীতেও পরিণত হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, আরও দুই রেকর্ড ঝুলিতে পুরেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
বিশ্বকাপের আগে সাকিবকে নিয়ে ছিল বড় দুশ্চিন্তা। নিউজিল্যান্ড সিরিজে রান পাননি। আইপিএলে অনেকদিন বেঞ্চে বসে থাকার পর সুযোগ মিললেও ব্যাট হাতে সাফল্য ধরা দেয়নি। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ ও আইপিএলে সুযোগ পাওয়া ম্যাচগুলোতে উইকেট খরায় ভুগেছেন। আইপিএলে পাঁচ ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন মাত্র দু’টি। নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ দুই টি-টোয়েন্টিতে উইকেট মেলেইনি। তবে বড় খেলোয়াড়রা বড় মঞ্চে ঠিকই পারফর্ম করতে জানেন— আরেকবার যেন সেটিরই প্রমাণ দিলেন সাকিব।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে ‘মোটমুটি’ পারফরম্যান্সের পর দ্বিতীয় ম্যাচেই সাকিব ছিলেন দুর্দান্ত। তৃতীয় ম্যাচে এসে ছাড়িয়ে গেলেন সেই ম্যাচকেও। ব্যাট হাতে ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পর বল হাতে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হওয়ার সঙ্গে গড়েছেন তিনটি রেকর্ড। ৯ রানে চার উইকেট বিশ্বকাপে সাকিবের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। আজ চার উইকেট নিয়ে যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও বনেছেন বাংলাদেশি এই অলরাউন্ডার।
৩৪ ম্যাচে ৩৭ উইকেট নিয়ে এতদিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ছিলেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি শহিদ আফ্রিদি। আজ ২৮তম ম্যাচ খেলতে নেমে ৩৭তম উইকেট তুলে নিয়ে আফ্রিদিকে ধরে ফেলেছেন সাকিব।
এ নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিন বার চার উইকেট পেলেন সাকিব। সেটিও যৌথভাবে রেকর্ড। এর আগে এক পাকিস্তানি পেসার ওমর গুলই কেবল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিন বার চার উইকেট নিতে পেরেছিলেন। সাকিব আজকের আগে ২০১৬ সালে ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে ১৫ রানে ও ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৪ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন।
এদিকে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও সবচেয়ে বেশি ম্যাচে চার উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে ওমর গুলের সঙ্গে নাম লিখিয়েছেন সাকিব। এই ফরম্যাটে কেবল ওমর গুলই ছয়টি ম্যাচে চার উইকেট করে নিয়েছিলেন। আজকের ম্যাচের পর সাকিবও ছয় ম্যাচে সেই কৃতিত্ব দেখাতে সমর্থ হলেন। এই ফরম্যাট অজন্তা মেন্ডিস আর রশিদ খান চারটি করে উইকেট নিয়েছেন পাঁচ ম্যাচে। অন্যদিকে চারটি করে ম্যাচে চার উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির, পাকিস্তানের সাঈদ আজমল আর বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবের রেকর্ডও সমৃদ্ধ হলো আরও এক ধাপ। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে তেমন সাফল্য না পেলেও রয়েছেন ২০ রান। সে ম্যাচে বল হাতে ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন। পরের ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪২ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ২৮ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। শেষ ম্যাচের পর ৩ ম্যাচে সাকিবের ঝুলিতে মোট রান ১০৮টি, উইকেট ৯টি।
ভারতের আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিশ্বকাপের খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/