তুমি পাকিস্তানের গুপ্তচর— শামিকে ভারতীয় সমর্থকরা
২৫ অক্টোবর ২০২১ ১৫:০১
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের এটা প্রথম জয়। ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি, কোনো বিশ্বকাপেই ভারতের বিপক্ষে জয় ছিল না পাকিস্তানের। বিশ্বমঞ্চে দুদলের আগের ১২ দেখায় প্রতিবারই জিতেছিল ভারত। দুর্দান্ত বাবর-রিজওয়ানে আজ সেই আক্ষেপ ঘুচল পাকিস্তানিদের।
পাকিস্তানের কাছে ভারতের ১০ উইকেটের লজ্জা
ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে বিরাট কোহলি ও রিশভ পন্ত ছাড়া কেউই রান করতে পারেননি। বোলিং একটু ভালো করেছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। বাদ বাকি সবাই ছিলেন চরম ব্যর্থ। সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তাই বাকি ৮ ক্রিকেটার।
এর মধ্যে আবার একটু বেশি ঝড় যাচ্ছে মোহাম্মদ শামির ওপর দিয়ে। দলের বাকি বোলারদের চেয়ে খরুচে ছিলেন এই পেসার। ইনিংসের ১৮তম ওভারে পাঁচ বলেই দিয়ে ফেলেন ১৭ রান। তাতেই ‘বলির পাঠা’ শামি। তার ওপর মুসলিম হওয়ায় অনেক উগ্রপন্থী সমর্থকদের রোষানলে এখন এই পেসার।
ম্যাচ শেষের পরপরই শামির ইনস্টাগ্রামে হামলে পড়েন ওই উগ্র সমর্থকরা। একজন তাকে বিশ্বাসঘাতক বলে লেখার অযোগ্য গালাগাল করেন। কেউ তাকে বলেছেন, ‘ভারত দলের পাকিস্তানি খেলোয়াড়।’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘পাকিস্তানি দলের দ্বাদশ খেলোয়াড়।’ একজন আবার ছাড়িয়ে গেছেন সমস্ত মাত্রা। সরাসরি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে লিখেছেন দিয়েছেন, ‘মুসলিম।’
এখানেই শেষ নয়, তার বিরুদ্ধে এক ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থক এনেছেন ম্যাচ পাতানোর মতো বড় অভিযোগ। তিনি লেখেন, ‘মহারাজ, নিজের জাতভাইদের জেতানোর জন্য পাকিস্তান থেকে কত টাকা খেয়েছ? অন্তত একটু লজ্জা দেখাও।’ আরেকজন তাকে পাকিস্তানের চর বলে আখ্যা দিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন সেদেশেই চলে যেতে।
২০১৫ বিশ্বকাপে যেবার ভারত পাকিস্তানকে হারিয়েছিল সেবার ভারতের সেরা বোলার ছিলেন এই মোহাম্মদ শামিই। আর তাই তো টুইটারে শামির প্রতি সমর্থন দিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিক ও বিশ্লেষক জ্যারড কিম্বার। তিনি লেখেন, ‘আজ যাকে আপনারা পাকিস্তানি বলে গালি দিচ্ছেন, সর্বশেষ দেখায় এই শামিই ভারতের সেরা বোলার ছিলেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে শামির স্পেলের কাছে ধরাশায়ী হয়েছিল পাকিস্তান।’
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট বরখা দত্ত। তিনি এক টুইটে লেখেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেট দল ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনে শরীক হয়ে, হাঁটু গেঁড়ে প্রতিবার করল। অথচ ভারতীয়দের সঙ্গে এর কোনো সংযোগ নেই। কিন্তু মোহাম্মদ শামিকে ধর্মীয়ভাবে অনলাইনে হেয় করা হলো, আর সবাই চুপ। আমরা আরও ভালো কিছু আশা করেছিলাম বিরাট কোহলি।’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনেক আগে থেকেই পাকিস্তানের মূল শক্তি বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানের ওপেনিং জুটি। শক্তির জায়গাই ম্যাচ জেতালো পাকিস্তানকে। তরুণ পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির ভূমিকাও কম না। শুরুতেই রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলকে বিদায় করে ভারতকে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন পাকিস্তানের তরুণ এই পেসারই। ফলে দুর্দান্ত দুটি হাফ সেঞ্চুরি করা বাবর, রিজওয়ানরে রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটা উঠেছে শাহিনের হাতেই।
ভারতের আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিশ্বকাপের খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/
সারাবাংলা/এসএস
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত-পাকিস্তান ভারতীয় সমর্থকরা মোহাম্মদ শামি