বিপিএল ও নিউজিল্যান্ড সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ ২১ ডিসেম্বর
১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:৫২
দুটি টেস্ট খেলতে নিউজিল্যান্ড গিয়ে বড় বিপদেই পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা যে ফ্লাইটে নিউজিল্যান্ড পৌঁছেছে সেখানে ছিলেন করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমন ওমিক্রম আক্রান্ত এক রোগী। নিউজিল্যান্ড পৌঁছে করোনা পজিটিভ হয়েছেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ। এমন অবস্থায় শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজটি। সিরিজের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে ২১ ডিসেম্বর।
নিউজিল্যান্ডে ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশি ক্রিকেটার ও স্টাফদের চতুর্থ ধাপের করোনা পরীক্ষা হবে। ওই পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে ২১ ডিসেম্বর। ওই পরীক্ষায় সকলের নেগেটিভ ফল এলে সিরিজ নিয়ে শঙ্কা কেটে যাওয়ার কথা। তবে কারও পজিটিভ ফল এলে সিরিজ পেছানোসহ বাতিলের শঙ্কাও রয়েছে। নিউজিল্যান্ড সিরিজ পেছালে সেটি প্রভাবিত করবে আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকেও (বিপিএল)। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলছিলেন এমনটিই।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিসিবি কার্যালয়ে পরিচালকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন বিসিবি সভাপতি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এমন কথা জানান তিনি। বিসিবি সভাপতি বলেন, টানা কোয়ারেন্টাইনে থেকে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে আছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হওয়াতে সিরিজ বাতিলের কথাও সহজে ভাবা যাচ্ছে না।
সূচী অনুযায়ী আগামী ১ জানুয়ারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামার কথা বাংলাদেশের। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ৯ জানুয়ারী, শেষ ১৪ জানুয়ারী। এদিকে বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগামী ২০ জানুয়ারী থেকে এবারের বিপিএল শুরু করতে চায় তারা। সামনেই বিশ্বকাপ বলে এবারের বিপিএলকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে বিসিবি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ওই করোনা ইস্যু বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিপিএলের সামনেও।
কারণ করোনার কারণে নিউজিল্যান্ড সিরিজ পেছাতে হলে সিরিজ শেষও হবে পরে। সেক্ষেত্রে পরিকল্পনা মতো বিপিএলে যোগ দিতে পারবেন না নিউজিল্যান্ডে থাকা ক্রিকেটাররা। বিপিএল পেছানোর সুযোগও নেই। কারণ বিপিএল শেষ হওয়ার দিনই বাংলাদেশ সফরে আসার কথা আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের। ফলে ২১ তারিখের করোনা টেস্টের ফলের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলেছেন বিসিবি সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদশে দল যে ফ্লাইটে নিউজিল্যান্ড গেলো সেখানে একজন ছিল কোভিড এবং ওমিক্রম। নিউজিল্যান্ডে যেটা কিনা প্রথম ওমিক্রম। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওরা (নিউজিল্যান্ড) অনেক সাবধান হয়ে যায়। একটা বিষয় হলো ওরা (ক্রিকেটাররা) ওমিক্রম আক্রান্ত এক জনের সঙ্গে গেছে। দ্বিতীয় বিষয় ওখানে গিয়ে আমাদের একজন মানে রঙ্গনা হেরাথ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে অনুশীলন শুরুর সুবিধাটা পেয়েও আমরা পাচ্ছি না।’
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘২১ তারিখে ওদের আরেকটা পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে। সেদিন যদি সকলের নেগেটিভ আসে তাহলে তারা অনুশীলন শুরু করতে পারবে। ২১ তারিখে পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর যদি বুঝা যায় আমাদের ক্রিকেটারদের আরও কোয়ারেন্টাইন করতে হবে তাহলে আমরা নিউজিল্যান্ড বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব যে, কী করা যায়। তবে ২১ তারিখের আগে ওরাও (নিউজিল্যান্ড) কিছু বলতে পারছে না, আমরাও কিছু বলতে পারছি না।’
ভিন্নভাবে বিপিএল আয়োজনের চিন্তাও করছে বিসিবি। কয়েকটি বিকল্প নিয়ে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে জানালেন তিনি। নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘বিপিএলটা আমাদের দরকার। আমাদের বিশ্বকাপ আছে সামনে। আর বিপিএলের মাধ্যমে লোকাল ক্রিকেটারদের পরখ করা যায়। কিন্তু এটা কিভাবে করব? আমরা যে প্ল্যান করেছিলাম সে অনুযায়ী বিপিএল নাও হতে পারে। বিপিএলে কাটছাট করতে হতে পারে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘যেমন আমি উদাহরণ দিচ্ছি- নিউজিল্যান্ডে যারা আছে তাদের রেখেই বিপিএল শুরু করতে হতে পারে। ওরা পরে এসে যোগ দিবে। সেক্ষেত্রে ক্রিকেটাররা যদি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে তাহলে বোর্ড তাদের সে পরিমান অর্থ দিয়ে দিবে। আর একটা অপশন হতে পারে ভেন্যু কমানো। আমরা তিনটি ভেন্যুর কথা চিন্তা করেছি। সেখানে দুই ভেন্যু করা হলে ভ্রমণের সময়টা বাঁচবে। দুই তিনটা দিন সময় কমিয়ে আসবে। আর একটা হতে পারে দল কমানো। ছয়টি দলের বদলে পাঁচ দলের কথা চিন্তা করা হতে পারে। তাহলেও আমরা বেশ কিছু সময় পাবো। এসব নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। ২১ তারিখের ফলটা জানার পর আমরা আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পারব। তার আগে মন্তব্য করাটা আসলে কঠিন। ২১ তারিখে সব কিছু বুঝা যাবে।’
নাজমুল হাসান পাপন বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজ বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সিরিজ বিপিএল