ইংলিশদের গুড়িয়ে অ্যাশেজ অস্ট্রেলিয়ার
২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:৫২
৪ ওভারে ৭ রান খরচে নিলেন ৬ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক টেস্টেই ম্যান অব দ্যা ম্যাচ। আর তার আগুন ঝরা বোলিংয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে মাত্র ৬৮ রানে অলআউট করে দেয় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। আর এতেই তিন ম্যাচ জিতে অ্যাশেজ নিশ্চিত করে অজিরা। বক্সিং ডে টেস্ট দিয়েই অ্যাশেজের ট্রফিটা ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া।
লড়াইটা ঠিক জমিয়ে তুলতে পারলো না ইংলিশরা। দুই দিন আর এক ঘণ্টায় শেষ বক্সিং ডে টেস্ট। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ২৬৭ রানের জবাবে দুই বার ব্যাট করেও ১৪ রান কম করেছে ইংল্যান্ড। আর এতেই ইনিংসসহ ১৪ রানে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
গত ৩৫ বছরের ইতিহাসে ২৬৭ এর থেকে কম রান করে আর কোনো দল ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট ম্যাচ জেতেনি। অ্যাসেজের ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। এর কম করে শেষবার ১৮৮৮ সালে ১৭২ রান করে জিতেছিল ইংল্যান্ড। অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ৬৮ রান ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর।
মেলবোর্নে মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে প্রথম পানি পানের বিরতির একটু পর ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় কেবল ৬৮ রানেই। ১১৭ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন রান এটি। সবশেষ ১৯০৪ সালে মেলবোর্নেই তারা গুটিয়ে গিয়েছিল ৬১ রানে।
মাত্র ৪ ওভার বল করে ৭ রানে ছয়-ছয়টা উইকেট তুলে নিয়েছেন মেলবোর্নের ঘরের ছেলে বোল্যান্ড। তৃতীয় দিন সকালে মাত্র ৮১ বল টিকতে পেরেছে ইংল্যান্ড। ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে সকাল শুরু করা ইংলিশরা অলআউট হয়েছে ৬৮ রানে। মেলবোর্ন টেস্টে ইনিংস ও ১৪ রানে জিতে অ্যাশেজ জয় নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ শুরু হওয়ার মাত্র ১২ দিনের মাথায় অ্যাশেজের ছাইদানিটা নিজেদের করে নিল অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ইংল্যান্ড এর চেয়ে বেশি দিন তো কোয়ারেনটাইনে থেকেছে!
৬ উইকেটের প্রথম ৫টি নেন তিনি ১৯ বলের মধ্যে। তাতে টেস্ট ইতিহাসের দ্রুততম ৫ উইকেটের রেকর্ডে স্পর্শ করেন আর্নি টোশাক ও স্টুয়ার্ট ব্রডের রেকর্ড।
মাত্র ৮২ রানের লিড নিয়েই ইনিংস ব্যবধানে জিতল অস্ট্রেলিয়া। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৪ বছরের ইতিহাসে এর চেয়ে কম লিড নিয়ে ইনিংসে জয় আছে আর কেবল দুটি।
জয়ের পথটা আগের দিনই সুগম করে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড তৃতীয় দিন শুরু করে ৪ উইকেটে ৩১ রান নিয়ে। তৃতীয় দিনের শুরু মিচেল স্টার্ক ছোবল দেন সবার আগে। দিনের পঞ্চম ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বাঁহাতি ফাস্ট বোলার ফিরিয়ে দেন বেন স্টোকসকে। ১৪৫ কিলোমিটার গতির গোলা সিমে পিচ করে ভেতরে ঢুকে ছত্রখান করে দেয় স্টাম্প।
ইংল্যান্ডের হয়ে মাত্র দুইজন ব্যাটার দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন। ডেভিড মালান, জ্যাক লিচ, মার্ক উড এবং ওলে রবিনসন তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। অধিনায়ক রুট করেন সর্বোচ্চ ২৮ রান। এছাড়া ১১ রান আসে স্টোকসের ব্যাট থেকে।
এরপর সবকিছু যেন বোল্যান্ডময়। ঘরের ছেলের অভিষেকে দর্শকেরা গলা ফাটিয়ে উৎসাহ দিয়ে যান প্রতিটি বলে। উজ্জীবিত বোল্যান্ড প্রতিদান দেন আগুনঝরা বোলিংয়ে। জনি বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে এ দিন তার শিকার ধরার শুরু। পরে ফিরিয়ে দেন মূল বাধা জো রুটকেও।
রবিনসনের শূন্য রানে বিদায়ে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি রেকর্ডে নাম লেখা হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। ৫৪টি ‘ডাক’ নিয়ে এক বছরে সবচেয়ে বেশি দলীয় শূন্যের রেকর্ডে তারা স্পর্শ করে ১৯৯৮ সালে গড়া নিজেদেরই রেকর্ড।
পরের ওভারেই জিমি অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে ম্যাচের ইতি টেনে দেন ক্যামেরন গ্রিন। ১ হাজার ৮৪ বলেই শেষ ম্যাচ ম্যাচ। গত ৭০ বছরে অস্ট্রেলিয়ায় সংক্ষিপ্ততম ম্যাচ এটি। দারুণ জয়ে বাঁধনহারা উল্লাসে মাতে অস্ট্রেলিয়ানরা। পুরো মাঠ প্রদক্ষিণ করে তারা জবাব দেয় দর্শকের অভিনন্দনের।
সারাবাংলা/এসএস
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশেজ জয় দ্যা অ্যাশেজ স্কট বোল্যান্ড