শুরু হচ্ছে বহু প্রশ্নের বিপিএল
২০ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৩৭
করোনাভাইরাসের কারণে গতবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) হয়নি। করোনার নতুন সংক্রমন ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে প্রশ্ন জাগছিল, ‘এবার হবে তো?’ সেই শঙ্কা কাটিয়ে রাত পোহালেই মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএলের অষ্টম আসর।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মধ্যকার লড়াই দিয়ে শুরু হবে বিপিএল। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল ও সিলেট সানরাইজার্স।
করোনার কারণে এবারের বিপিএল আয়োজন হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগে থেকেই। শুরুর আগ মুহূর্তে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়াতে প্রশ্নটা আরও জোড়ালো হয়। সেই প্রশ্ন এক পাশে রেখে বিপিএল আয়োজনে কর্তৃপক্ষকে ছাড় দিতে হয়েছে অনেকটাই। ডিআরএস থাকছে না এবারের বিপিএলে। ভালোমানের বিদেশি ধারাভাষ্যকার বা আম্পায়ারও পাওয়া যাচ্ছে না। সকল কিছুরই কারণ ওমিক্রন।
ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার কারণে ডিআরএস সুবিধা দানকারি কোম্পানি বাংলাদেশে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আম্পায়ার বা ধারাভাষ্যকারদের ক্ষেত্রেও ঘটেছে একই ঘটনা। আগে ধারনক্ষমতার অর্ধেক দর্শক প্রবেশের কথা শোনা গেলেও ওমিক্রনের প্রভাব বাড়লে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে বিপিএল কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ দর্শকহীন মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বিপিএল। তাতে টুর্নামেন্টের রং আরও হারাবে নিশ্চয়। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে ডিআরএস না থাকা। বিপিএলে আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন উঠা পুরনো বিষয়। ডিআরএস না থাকলে প্রশ্ন বাড়ার সম্ভবনা থাকবে।
বিষয়গুলোতে ছাড় দিয়েই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হচ্ছে কারণ পরবর্তীতে ফাঁকা সময়ও নেই। জাতীয় দল আন্তর্জাতিক সূচিতে ঠাঁসা। তার মধ্যে বিপিএলের জন্য পরবর্তীতে সময় বের করা প্রায় অসম্ভব। ফলে সমন্বয় করে এই সময়টাতেই বিপিএল শেষ করতে চায় বিসিবি।
আজ বিপিএলের স্পন্সরশিপ ঘোষণা অনুষ্ঠানে বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচীব ইসমাইল হায়দার মল্লিক যেমন বলছিলেন, ‘আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছাড়া বিপিএল হবে না। আমরা তো ইংল্যান্ড না বা অস্ট্রেলিয়া না যে জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছাড়া বিপিএল খেলব। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি সাকিবকে ছাড়া খেলতে রাজি হবে? আমরা ভারতও না যে চাইলেই যে কোনো সিরিজ বাদ দেব। ভারত যদি সামনের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের সঙ্গে খেলতে চায় তাহলে কোনোভাবেই ওই সময়ে বিপিএল আয়োজন করতে পারবে না। ওই সিরিজ আমাদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমাদের সিরিজ যখন তখন হচ্ছে। এফটিপি চূড়ান্ত হলে সেই বিষয়গুলো খেয়াল রেখেই করা হবে।’
এতো বাঁধা পেরিয়ে বিসিবি বিপিএল আয়োজন করছে সেটা বড্ড ইতিবাচক মনে করছেন মুশফিকুর রহিম। খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক আজ সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘এটা সবার জন্য বড় সুযোগ, বিশেষ করে স্থানীয়দের জন্য। সামনে বিশ্বকাপসহ অনেক খেলা আছে। কোভিড পরিস্থিতি আগের মত ভালো নেই। তারপরও যে খেলার সুযোগ পাচ্ছি, পরিবেশ পাচ্ছি এটা আমাদের জন্য অনেক বড় বিষয়। স্থানীয়দের জন্য অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম। এখান থেকে অনেকেই ভালো পারিশ্রমিক পেয়ে থাকে। বিসিবিকে ধন্যবাদ, অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আশা করছি আমার দল ও অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি সবাই সহায়তা করবেন, যেন বিপিএল ভালোমত শেষ করতে পারি।’
বিপিএলে পুরনো আর এক চ্যালেঞ্জও আছে, সেটা উইকেট। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের উইকেট এমনিতেই বেশ মন্থর। মাঠ সংকটের কারণে মিরপুরে পরপর খেলা হয় বলে অতি চাপে আরও মন্থর হয়ে পড়ে। ইসমাইল হায়দার চৌধুরী অবশ্য স্পোর্টিং উইকেট পাওয়ার কথা জানালেন। সংশ্লিষ্ট অন্যসবের মতো সাকিব আল হাসানের প্রত্যাশাও তেমনটি।
আজ ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক বলছিলেন, ‘আমি যদিও এখনো দেখতে পাইনি…আমি বিশ্বাস করি ভাল স্পোর্টিং উইকেট হবে। যেখানে সবার জন্য কিছু না কিছু থাকবে, আশা করছি ভাল একটা ম্যাচ দিয়ে বিপিএলটা শুরু হবে।’
ছয় দলের এবারের বিপিএলে শুরু হচ্ছে আগামীকাল। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এই তিন ভেন্যু মিলিয়ে আয়োজিত হতে যাওয়া টুর্নামেন্টটির ফাইনাল ১৮ ফেব্রুয়ারি।