রাশিয়ার সরকারি মালিকানাধীন এয়ারলাইন্সের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ইউক্রেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে অ্যারোফ্লটের সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তির এক বছর বাকি থাকতেই বাতিল করল রেড ডেভিলরা।
২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের সফলতম দলের এয়ারলাইন্স পার্টনার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল অ্যারোফ্লট। এরপর ২০১৭ সালে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছিল দুই পক্ষ। শেষবার চুক্তি অনুযায়ী আরও এক বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল পর্যন্ত ইউনাইটেডের এয়ারলাইন্স পার্টনার ছিল অ্যারোফ্লট।
গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষলো’র লড়াইয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মাঠে প্রথম লেগের ম্যাচ খেলতে যাওয়ার কথা ছিল নিজেদের নিয়মিত এয়ারলাইন্স পার্টনারের সঙ্গেই। তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রতিবাদে শেষ মুহূর্তে টাইটান এয়ারওয়েসে করে মাদ্রিদে পাড়ি জমায় রেড ডেভিলরা।
ইউনাইটেডের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই হামলার কারণে অ্যারোফ্লটের সঙ্গে আমরা চুক্তি বাতিল করেছি। আমরা আমাদের সমর্থকদের আবেগ, অনুভূতি ভাগাভাগি করে নেই।’
অ্যারোফ্লট বিশ্বের ৫২টি দেশের ১৪৬টি গন্তব্যে পাড়ি জমাতে পারে। তবে বিশেষ এই পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এক বছর বাকি থাকতেই চুক্তি বাতিল করে।
ইউক্রেনে রাশির আক্রমণের পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শেয়ারের দাম প্রায় এক ডলার করে পড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবারের হিসাব অনুযায়ী ইউনাইটেডের শেয়ারের দাম ১৪.০৮ ডলার থেকে কমে ১৩.১০ ডলারে এসে থেমেছে। ধারণা করা হচ্ছে রাশিয়ার অ্যারোফ্লটের সঙ্গে চুক্তি থাকার কারণেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শেয়ারের দাম পড়ে গেছে।
এছাড়া জার্মান ক্লাব এফসি শালকে রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। গ্যাজপ্রমের সঙ্গে উয়েফাও চুক্তিবদ্ধ আছে। এবার তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য চাপে আছে উয়েফাও। কোম্পানিটির বেশিরভাগ শেয়ার রাশিয়ার সরকারের অধিনে। আর ২০১২ সাল থেকেই উয়েফার বিজ্ঞাপনদাতা গ্যাজপ্রম।
এদিকে রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ২০২২ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল সরিয়ে প্যারিসে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে উয়েফা।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেন স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায়) ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। দিনভর জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে তিন দিক থেকে ইউক্রেনের ৮০টির বেশি সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অভিযান চালিয়েছে রুশ সেনারা। রুশ হামলার প্রথম দিনে ইউক্রেনের ১৩৭ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভলদোমির জেলেনস্কি। অন্যদিকে মস্কো জানিয়েছে, প্রথম দিনের অভিযানে রাশিয়ার ১২ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।