গুরু ওয়ার্নের বিদায়ে স্তব্ধ রশিদ
৫ মার্চ ২০২২ ২০:১৫
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নের আকস্মিক বিদায়ে ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া। ৫২ বছর বয়সী ওয়ার্নের বিদায় মেনেই নিতে পারছেন না রশিদ খান। একটা সময় যার কাছে লেগ স্পিনের বহু দীক্ষা নিয়েছেন সেই ওয়ার্নের বিদায় যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না আফগানিস্তান তারকার। শোকাগ্রস্ত রশিদ জানালেন, আজ বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে মনে হয়েছিল খেলতে পারবেন তো!
গতকাল না ফেরার দেশে পারি জমান অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে থাইল্যান্ডের কোহ সামুই শহরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
আজ রোববার (৫ মার্চ) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে আফগানিস্তান। ম্যাচে আফগানদের ৮ উইকেটে জয়ের পর ওয়ার্ন প্রশ্নে স্মৃতিকাতর হয়ে উঠলেন রশিদ।
অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ খেলতে গিয়ে ওয়ার্নের বহু দীক্ষা নিয়েছেন রশিদ। অনেক আগ থেকেই নিয়মিত বিগ ব্যাশ খেলেন আফগানিস্তানের তারকা লেগ স্পিনার। আর যখনই এই টুর্নামেন্ট খেলতে যেতেন তখনই ছুটে যেতেন লেগ স্পিনার কিংবদন্তি ওয়ার্নের কাছে। ওয়ার্নও কতো যত্নেই দীক্ষা দিতেন পরবর্তী প্রজন্ম রশিদকে।
মিরপুরে ম্যাচ শেষে ওয়ার্ন প্রসঙ্গ উঠলে পুরনো সেই দিনগুলোর কথাই মনে করলেন রশিদ। বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে এটা এমন এক সত্য যা মেনে নেওয়া কঠিন। শুধু আমি না গোটা ক্রিকেট বিশ্ব স্তব্ধ। খুব দ্রুত তিনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে দিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে মানতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে আপনি যদি লেগ স্পিনার হয়ে থাকেন শেন ওয়ার্ন অবশ্যই আপনার জন্য অনুপ্রেরণার। শব্দ দিয়ে আমি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারবো না। তার পরিবার, বন্ধবান্ধবদের জন্য সমবেদনা। এই শোক বহন করার শক্তি দান করুক।’
‘এটা প্রমাণ করে যে, জীবন কতোটা অনিশ্চিত। আপনি কখনোই জানবেন না কখন আপনার সময় চলে আসবে। আপনার সময় আসলে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। আমি মনে করি, নিজেদের প্রত্যেকের আজকের অবস্থানের জন্য আমাদের খুশি থাকা উচিত। নিশ্চিতভাবেই এটা ক্রিকেটের ক্ষতি। ক্রিকেটারদের জন্যও এটা বিরাট ক্ষতি।’
ওয়ার্ন বলেন ‘আমার জন্য বিশাল সম্মানের বিষয় যে, এমসিজিতে আমি তার সঙ্গে বোলিং করেছি। আমরা সেদিন লেগ স্পিন নিয়ে কথা বলেছি। আমি লম্বা ফরম্যাটে কিভাবে বল করবো তা নিয়ে ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলার জন্য উদগ্রিব ছিলাম। উনি সবসময়ই আমাকে সাহায্য করার জন্য রাজি ছিলেন। যখনই বিগ ব্যাশে খেলতে যেতাম তার সঙ্গে কথা বলেছি। এ বছরও আমি লম্বা ফরম্যাটে বোলিংয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তার প্রস্থান সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমার এখনও ওই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। যখনই তার চলে যাওয়ার খবরটা শুনলাম আমার স্মৃতিতে এমসিজি চলে এসেছিল। কতটা ভালো এবং বন্ধুসুলভভাবে তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন! তার ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা আমার সঙ্গে ভাগাভাগি করেছিলেন। তার মৃত্যু ক্রিকেটের জন্য বিশাল ক্ষতি।’
‘আজ ম্যাচের জন্য তৈরি হওয়াটা খুব কঠিন ছিল। আমি বুঝছিলাম না কিভাবে নিজের খেলাটা খেলবো। পুরো রাত ওয়ার্ন আমার মাথায় ছিলেন। এমনকি আমি সকালে উঠেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কয়েকবার ফোন চেক করেছি যে কাল সত্যিই কি এমন কিছু হয়েছিল! কিন্তু এটাই জীবন। আপনি কখনই জানবেন না আপনার সময় কখন শেষ হবে। কিন্তু মেনে নিতেই হবে। তবে ওয়ার্নের চলে যাওয়াটা খুব দ্রুত…উনার থেকে আরও অনেক শেখার ছিল। তরুণদের বিশেষ করে আমার।’