Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্যারিবীয় তীরে গিয়েও তরী ভিড়ল না ফারজানা-সালমাদের

স্পোর্টস ডেস্ক
১৮ মার্চ ২০২২ ১১:০০

আগের ম্যাচেই পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আসরের প্রথম জয় তুলে নিয়েছিলন ফারজানা-সালমারা। টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জয়েরও খুব কাছাকাছিই চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তীরে তরী ভেড়েনি। টান টান উত্তেজনার ম্যাচ চলে গিয়েছিল শেষ ওভার পর্যন্ত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য থেকে ৪ রান আগেই থেমে গেছে ইনিংস। টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৪ রানে হেরে গেছেন প্রমীলা ক্রিকেটাররা।

বিজ্ঞাপন

নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে শুক্রবার (১৮ মার্চ) ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। লো স্কোরিং ম্যাচে বল হাতে দারুণ ভেলকি দেখান টাইগ্রেসরা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একদিকে চেপে ধরে রেখেছিলেন রানের চাকা, অন্যদিকে নিয়মিত বিরতিতে তুলে নিচ্ছিলেন উইকেট। তাতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ১৪০ রানের বেশি তুলতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা।

জবাব দিতে গিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে একই দশায় পড়েন টাইগ্রেস ব্যাটাররাও। রানের চাকা ছিল ভীষণ স্লথ। উইকেটের পতনও  থামিয়ে রাখা যায়নি। তাই শেষ পর্যন্ত তাদের ইনিংস থেমেছে ১৩৬ রানে। ১০ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ক্যারিবিয়ান বোলার হেইলি ম্যাথিউস। ৪ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকাতেও প্রোটিয়া দুই বোলারের সঙ্গে শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি।

বাংলাদেশি বোলারদের তোপে স্বস্তিতে থাকতে পারেননি ক্যারিবীয় ব্যাটাররা। ম্যাচের নবম ওভারে ডিনড্রা ডটিনের উইকেট তুলে নেন জাহানারা আলম। এরপর ম্যাচের ১৩তম ওভার থেকে ১৬তম ওভার পর্যন্ত বলা চলে ঝড় বয়ে যায় ক্যারিবীয় ইনিংসে। ১৩তম ওভারে আরেক ওপেনার হেইলি ম্যাথিউকে তুলে নেন নাহিদা আক্তার। এক ওভার পরেই তুলে নেন স্টেফানি টেইলরের উইকেট। ১৬ম ওভারের প্রথম বলেই রাশাদা উইলিয়ামসকে তুলে নেন সালমা খাতুন। ৪৮ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটাররা।

এর পরের ১৩ ওভার মাটি কামড়ে ক্রিজে পড়ে থাকেন শেডিন ন্যাশন ও আলিয়া অ্যালেইন। এই ১৩ ওভারে রান আসে মাত্র ১২টি। এরপর ৬০ থেকে ৭০ রানের মধ্যে পতন ঘটে আরও তিন উইকেটের। ২৮তম ওভারে ন্যাশন রান আউট হয়ে যান। ৩২তম ওভারে অ্যালেইনকে তুলে নেন রুমানা। ৩৬তম ওভারে শিনেল হেনরিকে তুলে নেন সালমা।

বিজ্ঞাপন

এরপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ১৪০ রান পর্যন্ত টেনে নেওয়ার মূল কৃতিত্ব শিমেইন ক্যাম্পবেলের। অ্যাফি ফ্লেচারকে নিয়ে ৭ ওভারের জুটিতে তুলে নেন ৩২ রান। এরপর কারিশমা রামহারাককে নিয়ে শেষ ছয় ওভারে তুলে নেন আরও ৩৬ রান। এর মধ্যে ফ্লেচারের অবদান ২৮ বলে ১৭, কারিশমার ১৪ বলে ৭। শেষ বলে শামিলিয়া কনেল ২ রান তুলে নেন। আর ক্যাম্পবেল ১০৭ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ৫৩ রানে।

বাংলাদেশিদের মধ্যে সালমা ও নাহিদা দু’জনেই ১০ ওভারে ২৩ রান করে দিয়ে তুলে নেন ২টি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন জাহানারা, রুমানা ও রিতু মনি।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যান শামিমা। দ্বিতীয় উইকেটে যোগ হয় ২৯ রান। ৯ম ওভারে শারমিন আক্তার আউট হয়ে যাওয়ার পর তৃতীয় উইকেটে যোগ হয় আরও ৩১ রান। এরপরই বিপর্যয়। ৬০ রানে দাঁড়িয়েই তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। একে একে আউট হয়ে যান ফারজানা হক, রুমানা আহমেদ এবং রিতু মনি।

ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে নিগার সুলতানা ও সালমা কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। ৩৩তম ওভারে গিয়ে আউট হয়ে যান নিগার। এক বল পরেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ফাহিমা খাতুন। তখনো জয় থেকে ৫৬ রান দূরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু হাল ছাড়েননি সালমা। নাহিদাকে নিয়ে গড়ে তোলেন ২৫ রানের একটি জুটি। ৪৪তম ওভারের প্রথম বলে নিজেই সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিয়নের পথ ধরেন সালমা। এরপর জাহানারা আলম আর ফারিহা তৃষ্ণা ক্রিজে এলেও বলার মতো কিছু করতে পারেননি। ১৩৬ রানে দাঁড়িয়ে ইনিংস শেষ হওয়ার ৩ বল আগে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেছেন দু’জন ব্যাটার— নিগার সুলতানা (৭৭ বল) ও নাহিদা আক্তার (৬৪ বল)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রানও করেছেন দু’জন— ফারজানা (৬৫ বল) ও সালমা (৪০ বল)। এর বাইরে দুই অঙ্কে পৌঁছেছেন কেবল শারমিন— ২৫ বলে করেছেন ১৭ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ম্যাচসেরা ম্যাথিউসের বোলিং ফিগার তো বলা হয়েছে আগেই। এর বাইরে অ্যাফি ফ্লেচার ১৯ ওভারে ২৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। স্টেফানি টেইলরও ২৯ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট, বল করেছেন ৯ ওভার ৩টি। এর বাইরে কারিশমা ১০ ওভার বল করে কোনো উইকেট না পেলেও রান দিয়েছেন মাত্র ১৫টি।

সারাবাংলা/টিআর

প্রমীলা বিশ্বকাপ বিশ্বকাপ ক্রিকেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর