ছয় উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ
১৬ জুন ২০২২ ২২:৩৪
অ্যান্টিগায় স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ৭৬ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। যার ভেতর চার ব্যাটারই ফিরেছেন শূন্যতে। এক ইনিংসে শূন্য রানে সবচেয়ে বেশি ব্যাটার আউট হওয়ার বিশ্বরেকর্ড যৌথভাবে বাংলাদেশেরই। যদিও লজ্জার এই রেকর্ডে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত এবং নিউজিল্যান্ডও। তবে দুইবার এই রেকর্ড করা দেশ কেবল বাংলাদেশই।
প্রথমবার এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছয় ব্যাটার শূন্য রানে আউটের লজ্জায় বাংলাদেশ পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। সেটা ২০০২ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ৮৭ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশের ছয় ব্যাটার ফিরেছিলেন শূন্যতে।
এরপর ২০২২ সালে এসে ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে আবারও বাংলাদেশের ছয় ব্যাটার ফেরেন শূন্যতে। এর মাসখানেক পরে আবারও একই লজ্জার সামনে টিম বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭৬ রান তুলতে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৬টি উইকেট যার ভেতর ৫জনই ফিরেছেন শূন্যতে। অর্থাৎ আর একজন ব্যাটার শূন্যতে ফিরলেই আবারও লজ্জার এই রেকর্ডে নাম উঠবে বাংলাদেশের।
অ্যান্টিগায় ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় টিম টাইগার্স। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে আর নিজের প্রথম বলেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে সেই রোচের শিকার হয়েই ফিরেছেন টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত।
সিরিজের আগে পুরোপুরি ফিটই ছিলেন না কেমার রোচ। তবে ম্যাচ শুরুর আগে জানা গেল খেলবেন রোচ। আর কেন তাকে নিয়ে এত মাতামাতি তা ইনিংসের প্রথম ওভারেই জানান দিলেন এই ক্যারিবীয় পেসার।
ইনিংসের প্রথম বলটি কোনো রকমে মোকাবিলা করে এক রান নিয়ে স্ট্রাইকে মাহমুদুল হাসান জয়কে পাঠান তামিম ইকবাল। কফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলটি খোঁচা দেন জয় আর এতেই বল গিয়ে পড়ে স্লিপে থাকা বোনারের হাতে। স্কোরবোর্ডে ১ রান উঠতেই ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
এরপর জেডন সিলসের করা দ্বিতীয় ওভার থেকে দুই রান নেন তামিম ইকবাল। তৃতীয় ওভারে কেমার রোচের সামনে নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম বলটি অফ স্ট্যাম্পেই ছিল। রোচের বল সুইং করে শান্তর ব্যাট এবং প্যাডের ফাঁক গলিয়ে উপড়ে ফেলে স্ট্যাম্প। ২.১ ওভারে মাত্র ৩ রানে বাংলাদেশ হারায় টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে। নাজমুল হোসেন শান্ত ৫ বলে কোনো রান করেই ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে।
এই সিরিজের আগে নাটকীয়ভাবে অধিনায়কত্ব থেকে বিদায় নেওয়া মুমিনুল হক এবারও ব্যর্থ। নেতৃত্বের ভার সরিয়েও ফিরতে পারেননি ছন্দে। সিডন সিলসের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন ৬ বলে ০ রান করে।
১৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর এক পাশে টিকে থাকা তামিম ইকবাল কিছুটা আশা দিচ্ছিলেন। লিটন দাসের সঙ্গে গড়েন প্রতিরোধ। কিছু ভালো শটের বাহার দেখা যায় তার ব্যাটে। পেরিয়ে যান টেস্টে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক। এরপরই শেষ তিনি। প্রথম ঘন্টার পর আলজেরি জোসেফের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে।
তামিম ফেরেন ৪৩ বলে ২৯ রান করে। তাতে ভাঙ্গে ২৫ রানের জুটি। পরের ওভারে বিদায় লিটনেরও। ছন্দে থাকা এই ব্যাটার কাইল মেয়ার্সের মুভমেন্টে হন কাবু। কিছুটা এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন কিপারের গ্লাভসে। তিন বল পর কিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। তিনিও রানের খাতা খুলতে পারেননি। ৪৫ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে প্রথম সেশনের বাকি সময়টা পার করেন সাকিব। তবে পুরোটা সময়ই অস্থিরতায় ভুগতে দেখা যায় তাকে। রান আউটের হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি আকাশে উড়িয়ে ফাঁকা জায়গায় পড়েও রক্ষা হয় তার। মিরাজের সঙ্গে এখন পর্যন্ত ইনিংস সেরা ৩১ রানের জুটি গড়েছেন তিনি। তবে তারা শেষ স্বীকৃত ব্যাটার। আর এক উইকেট পড়লে শেষের পথে হাঁটবে সফরকারীদের ইনিংস।
মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৭৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান ৩৯ বলে ২৭ আর মেহেদি হাসান মিরাজ ২১ বলে ২ রানে অপরাজিত আছেন। উইন্ডিজের হয়ে কেমার রোচ ৮ ওয়ারে ২টি, জেডন সিলস ৬ ওভারে ১টি, আলজারি জোসেপ ৫ ওভারে ১টি আর কাইল মায়ার্স ৫ ওভার ২টি উইকেট নিয়েছেন।
সারাবাংলা/এসএস