ব্যাটারদের টেকনিক্যাল সমস্যা— সাকিবের পর বললেন দুর্জয়ও
২১ জুন ২০২২ ২০:০১
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হতশ্রী পারফরম্যান্স চলছে দীর্ঘদিন যাবত। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। বারবার একই ভুলে আউট হচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। একদিন আগে সদ্য টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়া সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, টেকনিক্যালি নিখুঁত ব্যাটার বাংলাদেশে খুব বেশি নেই। সমস্যাটা হচ্ছে সেখানেই। সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক নাইমুর রহমান দুর্জয়ও সাকিবের সঙ্গে একমত।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ, ছয়জন ব্যাটার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৯ রানে পড়েছে ছয় উইকেট। শুধু অ্যান্টিগা টেস্ট নয়, ব্যাটিংয়ে এমন দৈন্য দশা অনেকদিন যাবতই চলছে।
পরিসংখ্যান বলছে সর্বশেষ ১৬ ইনিংসে ১০০ বা এর নিচে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়েছে ১৩ বার! কোচিং প্যানেলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, টেকনিক্যালি কোনও সমস্যা নেই। ব্যাটারদের সমস্যাটা হচ্ছে আত্মবিশ্বাসে। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতির কারণে মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্তরা বারবার একইভাবে আউট হচ্ছেন, কদিন আগে এমন কথা বলেছিলেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
কিন্তু সাকিব বলেন, টেকনিকেই সমস্যা ব্যাটারদের। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমানও বললেন একই কথা।
মঙ্গলবার (২১ জুন) মিরপুরে সাংবাদিকদের দুর্জয় বলেন, ‘সাকিব যেটা বলেছে ঠিকই বলেছে যে টেকনিক্যালি সাউন্ড ব্যাটার নাই। কিছু বিশেষ জায়গা আছে টেস্টে, সেটা স্পিনারদের ক্ষেত্রে বলেন ব্যাটারদের ক্ষেত্রে বলেন। পেস বোলারদের বল সুইং করাতে হবে, স্পিনারদের টার্ন করাতে হবে। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির মতো গৎবাঁধা প্রক্রিয়ায় যদি বল করে যাই সেটা টেস্টে তেমন ফল দেয় না।’
দেশে টুকটাক সাফল্য মিললেও বিদেশে এই টেনকিকেই ধরা খাচ্ছেন মুমিনুল, শান্তরা মনে করছেন দুর্জয়। তিনি বলেন, ‘হয়তো হোমে আমরা যে ধরণের উইকেটে খেলি…একই বল এখানে যেরকম আচরণ করে আমার সেটা ওয়েট ইন্ডিজ বা দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে একই রকম আচরণ করবে না। ঐ কন্ডিশনের জন্য আমাকে আলাদা ওয়ার্ক আউট করতে হবে। আলাদা স্ট্রেটেজি নিতে হবে।’
টানা হারে পরিকল্পনাকেও কিছুটা দায়ি করলেন দুর্জয়। সম্প্রতি জয়ের টার্গেট ঠিক করেই সব ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। দুর্জয়ের মতে, সব ম্যাচে জয়ের চিন্তা না করে ড্র’য়ের চিন্তাও খেলা দরকার।
সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের যে ৫-৬ জন প্লেয়ার (সিনিয়র) তারা জ্বলে উঠছে। কিন্তু একসাথে জ্বলে উঠা হচ্ছে না, দলের যেটা প্রয়োজন, টেস্টের প্রতি ঘন্টায় পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। আমরা হয়তো ৫০ করছি কিন্তু ইনিংসটা ১০০ হওয়া উচিৎ। অনেক সময় সময় ক্ষেপণ করার জন্য যেভাবে খেলা দরকার সেটা করতে পারছি না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেস্টে যে সময় পার করা এবং আরেকটা বিকল্প যে ড্র আছে সেটা আমরা মনে হয় চিন্তা করি না।’
তিনি বলেন, ‘ড্র করলে কিন্তু অন্তত মাঝখানে একটা জায়গায় থাকা যায়। আমরা সবসময় জিততে গিয়ে হেরে যাচ্ছি। টেস্টে ড্রয়ের বিকল্প আছে সেটা মাথায় রাখা উচিৎ। দায়িত্ব সবাই নিচ্ছে কিন্তু হয়তো কারও ভাগ্য সহায় হচ্ছে কারও হচ্ছে না। ভাগ্যটা তৈরি করতে হবে, আমরা যদি আর একটু মনযোগী হই। ঘুরে দাঁড়াবার সামর্থ্য আছে আমাদের আমি মনে করি।’
সারাবাংলা/এসএইচএস