তামিমের সহজ স্বীকারোক্তি ‘হচ্ছে না’
২৫ জুন ২০২২ ১৩:১৫
আরেকটা টেস্ট ম্যাচ, আরেকবার বাংলাদেশের অপ্রত্যাশিত ব্যাটিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেন্ট লুসিয়া টেস্টে কাল বাংলাদেশ ব্যর্থ হলো অবশ্য একটু ভিন্নভাবে। এতোদিন টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় শুরুতেই বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ। কাল টপ অর্ডার বেশ ভালোই খেলেছে। একটা সময় ১০৫ রানে ছিল ২ উইকেট। মনে করা হচ্ছিল, এবার বুঝি ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে। কিন্তু তারপরই ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবারও খাদের কিনারায় পরে যায় সফরকারীরা। শেষ পর্যন্ত ২৩৪ রানে অলআউট। দিন শেষে তামিম ইকবালের সহজ স্বীকারোক্তি ব্যাটিংটা ‘হচ্ছে না’।
টেস্টে দিনের পর দিন পুরো ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট ব্যর্থ হচ্ছে, সেটাই বলতে চেয়েছেন তামিম।
সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে তামিম ইকবাল সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, ওই অবস্থা থেকে এই অবস্থায় চলে এসেছি। মূলত ব্যাপারটা হচ্ছে, হয় প্রথমে হচ্ছে না, না হলে মাঝে হচ্ছে না। এটিই সমস্যা। আমি এমন কেউ নই যে বলব, অমুকের কারণে হচ্ছে না বা তমুকের কারণে হচ্ছে না। ব্যাটিং বিভাগ হিসেবেই হচ্ছে না। আমি ভালো করি না করি, ছয় নম্বর ভালো করুক বা না করুক, টপ অর্ডার বা মিডল অর্ডারের দিকে আঙুল তুলে লাভ নেই।’
কিন্তু এই ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার উপায় কি? সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়াম ব্যাটারদের জন্য খুব কঠিন কন্ডিশন নয়। বড় সুইং নেই। অসমান বাউন্সও কম। মনোযোগ দিয়ে ব্যাটিং করলে বড় স্কোর গড়া সম্ভব। কাল শেষ বিকেলে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার যেন সেটাই প্রমাণ করেছেন।
বাংলাদেশি ব্যাটাররা সেখানেই পুরো ব্যর্থ। তামিম ইকবাল নিজে দারুণ শুরু পেয়েছিলেন। কিন্তু উইকেটে সেট হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। লিটন দাসও বড় স্কোর গড়ার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। বড় জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
দিন শেষে তামিম বলেন, ‘দেখুন, জুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যদি বড় জুটি হয়, তখনই বড় ইনিংস খেলা সম্ভব। আজ আমরা ভালো শুরু করেছি। কিন্তু বড় রান হয়নি। তবু একটা পর্যায়ে আমরা ১২০ রানে (১০৫) ২ উইকেট ছিলাম। সেখান থেকে মিডল অর্ডারে ধস নামে। এরপর লোয়ার অর্ডারে শরীফুল, ইবাদত কিছু রান করেছে। অবশ্যই লিটন ভালো খেলেছে। তবে আমাদের আজ ওই মঞ্চটা তৈরি ছিল বড় করার। টেস্টের প্রথম দিন ১২০ রানে ২ উইকেট, এমন শুরু যে কোনো দিনই নিতে চাইবেন। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারিনি। ৩০০-৩২০ রান যদি করতাম, তাহলে এই উইকেটে সেটা ভালো রান হতো।’
৬৭ বলে ৪৬ রান করে আউট হওয়ার আগে তামিম চার মেরেছিলেন ৯টি। যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন দারুণ আত্মবিশ্বাসী দেখা গেছে তামিমকে। ধারাভাষ্যকররা অনবরত তামিমের পজিটিভ ব্যাটিংয়ের প্রসংশা করছিলেন। কিন্তু হুট করেই আলগা এক শটে কাটা পড়ে নষ্ট করেছেন বড় ইনিংস খেলার সুযোগ।
তামিম স্বীকার করেছেন নিজের ভুল। বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে এমন শুরু পেলে আমার ইনিংসগুলো সাধারণত বড় হয়। দুঃখজনক যে আজ বড় করতে পারিনি। বলটা হয়তো আমি ছেড়ে দিতে পারতাম। হয়তো বলটা যতটা ওঠার কথা ছিল না, ততটুকু উঠেছে। এ কারণে আমার ব্যাটের স্টিকারে লাগে। (তবে) আমি এমন অজুহাত দেওয়ার মতো কেউ না। দলের অভিজ্ঞ সদস্য হিসেবে এমন শুরু পেলে আমার উচিত সেটাকে বড় করা।’
সারাবাংলা/এসএইচএস