ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪৯ রানেই আটকে দিল বাংলাদেশ
১১ জুলাই ২০২২ ০১:২৬
ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ দুটি মোটেও ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। তবে ওয়ানডে সিরিজের শুরুটা হলো দুর্দান্ত। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ১৪৯ রানেই আটকে রেখেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ সিরিজে এগিয়ে যেতে ১৫০ রান করতে হবে তামিম ইকবালের দলকে।
রোববার (১০ জুলাই) গায়ানায় বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ওয়ানডে বিলম্বিত হয়েছে অনেকক্ষণ। বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে ৪১ ওভার হয়েছে। পরে বৃষ্টি ভেজা পিচে রাজত্ব করেছে মেহেদি হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্ট।
অভিষিক্ত নাসুম আহমেদকে দিয়ে ইনিংসের সূচনা করান তামিম ইকবাল। নাসুমের স্পিনের শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ছিল প্রতিপক্ষ। প্রথম পাঁচ ওভারে মাত্র ৩ রান খরচ করেছেন অভিষিক্ত স্পিনার। অভিষেকে উইকেট না পেলেও ৮ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ১৬ রান, মেডেন ৩টি।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ধাক্কাটা দেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শাই হোপকে ফেরান মোস্তাফিজ। ১২তম ওভারে অস্বস্তিতে থাকা কাইল মায়ার্সকে সরাসরি বোল্ড করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে ইনসাইড দ্য লাইন খেলার চেষ্টা করে লাইন মিস করে বোল্ড মায়ার্স। সেখানেই ভীতটা নড়ে গিয়েছিল।
স্বাগতিকরা বড় ধাক্কাটা খায় ২১তম ওভারে। পরপর দুই বলে ব্রেন্ডন কিং, সামার্থ ব্রোকসকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। রান আসছিল না। ফলে শরিফুলকে বুঝি আক্রমণ করার প্ল্যান কষেছিলেন দুজন। কিন্তু তাতেই বড় খেসারতটা দিতে হলো। শরিফুলকে সোজা তুলে মারতে গিয়ে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে বদলি ফিল্ডার এনামুলের ক্যাচ হয়েছে ব্রেন্ডন। ফেরার আগে ৮ রান করতে খেলেছেন ৩১ বল। পরের সুইং বলে দাঁড়িয়ে ব্যাট চালাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পরার আগে ৩৩ রান করতে ৬৬ বল খেলেছে ব্রোকস।
এরপর রভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন নিকোলাস পুরনা। টি-টোয়েন্টি সিরিজে এই দুজন বড্ডই ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। তবে আজ ওয়ানডেতে বেশিদূর এগুতে পারেননি দুর্দান্ত মিরাজে। ধীরে ধীরে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করছিলেন দুজন। দুজনকেই দারুণ দুটি বলে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কামড় অনেকটা ভেঙে দিয়েছেন মিরাজ।
টার্ন করে লেগ স্টাপে পরা মিরাজের বলটা সরে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন পাওয়েল। কিন্তু ব্যাটের সংযোগ করতে পারেননি। রিভিউ নিয়েও পরে এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচতে পারেননি পাওয়েল, ১১ বলে ফিরেন ৯ রান করে। খানিক বাদে ২৪ বলে ১৮ রান করা পুরানকে সরাসরি বোল্ড করেন মিরাজ।
সেই মিরাজই দারুণ এক থ্রোতে আকিল হোসেনকে (৩) রান আউট করেছেন। কিছুক্ষণ পর আবারও শরিফুলের জোড়া আঘাত। হাঁকাতে গিয়ে ১৯ বলে ১৬ রান করে শরিফুলের তৃতীয় শিকার হন রোমারিও শেপার্ড। দুই বল পরে গুদাকেশ মতিকে (৭) মিরাজের ক্যাচ বানান শরিফুল। ১১১ রানে নবম উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সে পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু শেষটা বেশ অস্বস্তির হয়ে থাকল। শেষ দিকে ক্যাচ পড়েছে টপাটপ। বোলাররাও কেনজানি আক্রমণাত্মক বোলিং করতে পারলেন না! সেই সুযোগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ দুই ব্যাটার শেষ উইকেট জুটিতে ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটিটা গড়ে ফেললেন।
শেষ উইকেটে সর্বোচ্চ ৩৯ রান তুলে অপরাজিত ছিলেন অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও জেডেন সিলস। ২২ বলে ২১ রান করেন ফিলিপ, আর সিলস ২৩ বলে করেন ১৬ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে পাঁচ বোলারই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। শরিফুল ৮ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ৯ ওভারে ৩৬ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩৪ রানে ১ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তাসকিন ও নাসুম উইকেট না পেলেও ৮ ওভার করে বোলিং করে রান দিয়েছেন যথাক্রমে ১৬ ও ২৫।
সারাবাংলা/এসএইচএস