যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে ফিরল ফুটবল
২৪ আগস্ট ২০২২ ১৩:১৫
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ এখনও চলমান। দুই দেশের মধ্যকার সংঘাত ঠিক কবে নাগাদ থামবে সে সম্পর্কেও নেই কোনো তথ্য। যেকোনো সময় ইউক্রেনের যেকোনো স্থানে রাশিয়ার বোমা পড়তে পারে, উড়ে যেতে পারে যেকোনো স্থাপনা আর হতে পারে সাধারণ মানুষের মৃতুও। তবে এর মধ্যেই মাঠে গড়াল ফুটবল, শুরু হলো ইউক্রেন প্রিমিয়ার লিগ।
সোমবার (২২ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে ইউক্রেনের ঘরোয়া ফুটবল লিগ। চলতি বছরের শুরুতে দেশটিতে রাশিয়ান আগ্রাসনের ফলে দেশটির শীর্ষ ফুটবল লিগ বাতিলই করে দেওয়া হয়। গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে নতুন মৌসুম।
ইউরোপের অন্যান্য দেশের ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুম মাঠে গড়িয়েছে। তবে বাকিদের সঙ্গে ইউক্রেনের ব্যাপারটি মেলানো ঠিক হবে না। সেখানে আছে বোমা বিস্ফোরণের ভয় আর একারণেই দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হচ্ছে লিগের সব ম্যাচ। আতঙ্ক যে শুধু দর্শকদের, বিষয়টা মোটেও তেমন নয়। ফুটবলাররাও আছেন আতঙ্কে। বোমা তো আর খেলোয়াড়-দর্শক বোঝে না!
‘যখন আমাদের জাতীয় দল ১ জুন স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল, জাতীয় সংগীত শুরু হওয়ার পর আমি কেঁদেছিলাম। আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। এবারও একই ব্যাপার ঘটতে যাচ্ছে। এখানে ফুটবল হবে সেই বিশুদ্ধ নিশ্বাস, যা আমাদের মনে করিয়ে দেবে, কেন আমরা লড়াই করছি এবং মারা যাচ্ছি’—যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে লিগ শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে কথাগুলো বলছিলেন ইউক্রেনীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি আন্দ্রেই পাভেলকো।
বোমা থেকে বাঁচতে প্রতিটি স্টেডিয়ামে রাখা হয়েছে বোমা শেল্টার। খেলার মাঝে সাইরেন বাজলেই সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফরা। ভয় কেটে গেলে আবার শুরু হচ্ছে অনুশীলন-খেলা।
বিস্ফোরক অস্ত্র প্রতিরোধী স্টেডিয়ামে শাখতার দোনেৎস্ক ও মেটালিস্ট ১৯২৫ ম্যাচ দিয়ে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ইউক্রেনের ঘরোয়া লিগ। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পাহাড়সম প্রতিকূলতার মধ্যে ফুটবল ফিরিয়ে আনা নিছকই খেলায় ফেরার ব্যাপার নয়, একে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির জায়গা থেকেও দেখছেন ইউক্রেনীয়রা। তবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ আর এটির বাস্তবায়ন মোটেই সহজ ছিল না।
এখানেই শেষ নয়, প্রতিটি ম্যাচ চলাকালে স্টেডিয়ামের ভেতর সেনাবাহিনী থাকবে। যদি কখনো এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সাইরেন বাজে তা হলে সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলছে স্টেডিয়াম। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরে তারা জানাচ্ছে খেলা শুরু করা যাবে কি না।
সারাবাংলা/এসএস