‘আশা করি, শ্রীলংকার মানুষদের গর্বিত করতে পেরেছি’
১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:৩৫
মাঠে শ্রীলংকান ক্রিকেটার এবং গ্যালারীতে থাকা শ্রীলংকান সমর্থকদের উল্লাস যেন থামছিলই না! না থামারই কথা। যে পরিস্থিতিতে লংকানরা এশিয়া কাপের শিরোপা জিতল সেটাকে সিনেমাটিকই বলতে হবে। টুর্নামেন্টে ফেভারিট তত্বের আশেপাশেও ছিল না শ্রীলংকা। টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্সও ছিল তেমন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে স্রেফ উড়ে যাওয়া।
বিশ্বাস করুণ আর নাই করুণ, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেনি শ্রীলংকা। কদিন পর থেকে খেলতে হবে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব। সেই দলটাই শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপের শিরোপা উৎসব করবে কেই-বা ভেবেছিলেন।
ওদিকে দেশের পরিস্থিতি বড্ড নাজুক। এই টুর্নামেন্ট আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল শ্রীলংকাতেই। কিন্তু দেশটিতে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকট ক্রমেই বাড়ছিল। এর মধ্যে এতোগুলো দলকে আতিথেয়তা দেওয়ার সাহস করতে পারেনি শ্রীলংকা বলেই টুর্নামেন্ট সরে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
শ্রীলংকান ক্রিকেটাররা বারবারই বলছিলেন, টুর্নামেন্টে অসাধারণ কিছু করে অর্থকষ্টে থাকা দেশের মানুষের মুখে একটু হাসি ফোটাতে চান। কাল ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে অসাধারণ সেই কাজটা করেও দেখালেন লংকানরা।
শুরুতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে উড়ে গেলেও পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো। তারপর ভারত, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে শ্রীলংকা। ফাইনালে পাকিস্তানি পেসারদের গতির ঝড়ে ৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে কঠিন চাপে পরেছিলেন লংকানরা। ভানুকা রাজাপাক্ষে, হাসারাঙ্গাদের ভয়ডরহীন ক্রিকেটে সেই দলটাই শেষ পর্যন্ত ফাইনাল জিতেছে ২৩ রানে।
এই জয় শ্রীলংকার দুঃখী মানুষদের জন্য নিশ্চয় একটু স্বস্তির কারণ। ম্যাচ শেষে তারই তৃপ্তি ফুটে উঠল অধিনায়ক দাসুন শানাকার কণ্ঠে, ‘আমি এখানে আমাদের সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁরা আমাদের দারুণ সমর্থন দিয়েছেন। দেশের মানুষকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আশা করি, আমরা তাদের গর্বিত করতে পেরেছি।’
৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ভানুকা রাজাপাক্ষে ও হাসারাঙ্গা প্রথমে ধস ঠেকিয়েছেন। শেষ দিকে পাকিস্তানি বোলারদের স্রেফ কচুকাটা করেছেন রাজাপাক্ষে।
ফাইনাল সেরা রাজাপাক্ষে ম্যাচ শেষে বলছিলেন, ‘ওরকম চাপে কাজটা সহজ ছিল না। তারা ভাল বল করছিল। ভানিন্দু (হাসারাঙ্গা) ও আমি খুব সুন্দর পরিকল্পনা করি। শ্রীলঙ্কা দলের চরিত্র হচ্ছে ইতিবাচক থাকা এবং চাপ না নেওয়া। এটাই আমাদের রান করতে সাহায্য করেছে।’
শ্রীলংকা শেষ পর্যন্ত ১৭০ রানের স্কোর পেয়েছিল। তবে রাজাপাক্ষে বলছেন একটা সময় তার মনে হচ্ছিল ১৪০ রানই যথেষ্ট, ‘আমি আমার খেলার ধরণে কিছুটা বদল এনেছিলাম যখন পাকিস্তান টপে ছিল। কিছুটা সময় পার করতে চেয়েছিলাম। চাপের সময়ে একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল ১৪০ রানই ভাল পুঁজি হবে এই পিচে। আসলে আমরা চেয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত থাকতে তাহলে লক্ষ্যটা বড় দিতে পারব আর মোমেন্টাম আমাদের দিকে চলে আসবে।’
সারাবাংলা/এসএইচএস