Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এই ট্রফি বাংলাদেশের সকলের জন্য— সাবিনা খাতুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:২৩

ঢাকা: দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে দেশে ফিরেছে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বের বাংলাদেশ দল। শিরোপা জয়ের পর থেকেই গোটা বাংলাদেশ অপেক্ষায় ছিল তাদের। কবে আসবে শিরোপাজয়ী বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা—এই অপেক্ষায় বুধবার সকাল থেকেই ভক্তদের অপেক্ষার প্রহর শুরু। ভক্তদের সেই অপেক্ষার পর্ব শেষে দেশে ফিরে এসেছেন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন-সানজিদারা। দেশে ফিরেই জানালেন, দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের যে শিরোপা তা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে চান তারা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে সাবিনা খাতুনদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের কাঠমান্ডু দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সাফ ফাইনালে স্বাগতিকদের ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবার দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এরপর থেকেই মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে শুধু একটাই প্রশ্ন আর তা হলো কবে দেশে ফিরবে চ্যাম্পিয়নরা? তাদের কিভাবে বরণ করবে বাংলাদেশ?

তবে এবার শিরোপাজয়ী ফুটবলারদের বরণে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বাফুফে।

আর তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই বিমানবন্দরে সাবিনা খাতুন, সানজিদাদের বরণ করতে পৌঁছে যান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির একটি অংশ।

শিরোপাজয়ী দলের খেলোয়াড়, কোচ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বরণ করে নেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির একটি অংশ।

তবে এর পরবর্তী ধাপেই ছিল কিছুটা বিশৃঙ্খলা। শিরোপাজয়ীদের বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার কথা সাবিনা খাতুন ও কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটনদের। তবে স্বল্প স্থানে সেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন রাখার বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, বাফুফে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এগিয়ে এলেও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এমন সময় জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনই বাতিল করা হয়েছে। তবে তারপরেই জানানো হয়, সংবাদ সম্মেলন করার পরেই বিমানবন্দর ছাড়বেন ফুটবলাররা। এমন পরিস্থিতির মাঝেই সংবাদ সম্মেলনের স্থানে এসে পৌছান সাবিনা খাতুন ও বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অন্যান্যরা।

বিজ্ঞাপন

গণমাধ্যমকর্মীদের সাবিনা খাতুন বলেন, ‘সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত। আমাদের এভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যে বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবল এত ভালোবাসেন, এই জন্য আমরা অনেক অনেক অনেক গর্বিত। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর এই ট্রফি বাংলাদেশের ১৬ কোটি বলুন, ১৮ কোটি বলুন, ২০ কোটি বলুন; সকলের জন্য।’— যোগ করেন সাবিনা খাতুন।

এরপরেই বিমানবন্দরের বাইরের দিকে এগিয়ে যান দেশের জন্য শিরোপা জয় করে আসা বাংলাদেশ নারী দলের সকল খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তারা।

এ সময় বিমানবন্দরের বাইরের দিকে অবশ্য ভিন্ন চিত্র।

অন্যান্যবারের মতো নীরবে নয় বরং শিরোপাজয়ী দলের সবাইকে বরণের জন্য প্রস্তুত ছিল ভক্তরাও। সানজিদা-কৃষ্ণা-রুপনাদের বরণের জন্য প্রস্তুত ছিল বিআরটিসির দ্বিতল বিশিষ্ট বাসের উপরের অংশ সরিয়ে বানানো ছাদখোলা বাস। আর সেই বাসের সামনে বিভিন্ন বাদ্য বাজনা ও সমর্থকদের ভিড়। শতাধিক পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলেন তবে সেই চেষ্টায় ছিল না কঠোরতা।

প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছিল তখন সানজিদারা প্রস্তুত ছাদখোলা বাসে উঠে বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবনের উদ্দেশে যাত্রা করার জন্য।

চ্যাম্পিয়নদের জন্য ছাদ খোলা বাসটিতে বড় স্টিকার দিয়ে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। চ্যাম্পিয়নদের বাফুফে ভবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পরে বাজবে একটি বিশেষ থিম সং।

আর সেই বাস যেদিকে বের হয়ে আসবে সেদিকেও ভক্তদের ভিড়। স্কুল শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অনেক পেশাজীবিরাও আজ চ্যাম্পিয়নদের বরণ করে নেওয়ার অপেক্ষায়।

ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যস্ত থাকলেও চোখে মুখে নেই বিরক্তির ছাপ। তারাও অনুরোধ করে অপেক্ষায় থাকা ভক্তদের বলছেন, সবাম্পিয়নদের বরই মিলে লাইন ধরে সড়কের দুইপাশে নিরাপদে দাঁড়াতে হবে। সবাই মিলেই চ্যাণে সাহায্য করতে হবে।

ভক্তরাও নির্দেশনা মেনেই কড়া রোদ উপেক্ষা করেই সেই চ্যাম্পিয়নদের অপেক্ষায়।

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, সবসময় তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ পাই না আমরা। আমাদের আপুরা সেই সুযোগ এনে দিয়েছে। আজ তাই তাদের বরণ করে নিতে এসেছি বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে। আমরাও এখন বুক ফুলিয়ে গর্ব করতে পারি শিরোপা নিয়ে। আমাদের খেলোয়াড়রাও এখন ট্রফি হাতে নিয়ে উঁচু করে বাতাসে তুলে ধরতে পারে। এমন দৃশ্য তো আর সবসময় দেখা যায় না। রোদ হোক বা বৃষ্টি কোনো কিছুই আজ ব্যপার না।

এদিকে ট্রাফিক বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, বাসের প্রাথমিক রুট — বিমানবন্দর থেকে কাকলী, জাহাঙ্গীর গেট, পিএম অফিস, তেজগাঁও, মৌচাক, কাকরাইল হয়ে বাফুফে ভবন।

সারাবাংলা/এসবি/এসএস

চ্যাম্পিয়নদের সংবর্ধনা বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর