৬ মিনিটে হ্যাটট্রিক করে সালাহর রেকর্ড, লিভারপুলের গোল উৎসব
১৩ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৫
রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ম্যাচের ১৭ মিনিটে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে লিভারপুল। আর এরপরেই চেহারা পাল্টে ফেললো ফিরমিনো-সালাহরা। শুরুটা ফিরমিনো, নুনেজরা করলেও শেষটা টেনেছেন মোহাম্মদ সালাহ। বদলি হিসেবে মাঠে নামা মিশরীয় এই ফরোয়ার্ড মাত্র ছয় মিনিটে উপহার দিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের দ্রুততম হ্যাটট্রিক। আর তাতেই রেঞ্জার্সকে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত করল অল রেডরা।
ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে ডারউইন নুনেজের বদলি হিসেবে মোহাম্মদ সালাহকে মাঠে নামান ইয়্যুর্গেন ক্লপ। এরপর নিজের প্রথম গোল পেয়ে সালাহ অপেক্ষা করেন মাত্র ৭ মিনিট। তবে এরপরেই যেন তেতে ওঠেন তিনি। পরের ৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডের মধ্যেই পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ে হ্যাটট্রিক করার রেকর্ড নিজের করে নিলেন তিনি।
৭৫তম মিনিটে দারুণভাবে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কঠিন এক কোণ থেকে বল জালে পাঠিয়ে স্কোরশিটে নাম লেখান সালাহ। মিনিট পাঁচেক পর অর্থাৎ ম্যাচের ৮০তম মিনিটে ডিফেন্ডারদের মধ্যে আটকে পড়েও বাঁ পায়ের দারুণ শটে দ্বিতীয় গোল করেন সালাহ। আর এক মিনিট পরে বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তিনি। এতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে দ্রুততম হ্যাটট্রিক করে ফেলেন তিনি।
তার আগে ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার বাফেতিম্বি গোমেস ২০১১ সালে ডায়নামো জাগরেবের বিপক্ষে লিওঁর জার্সি গায়ে মাত্র আট মিনিটে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। দীর্ঘ ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরি এটিই ছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্রুততম হ্যাটট্রিক। এছাড়া ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, রবার্ট লেভান্ডোফস্কি এবং রাহিম স্টার্লিংয়ের ১১ মিনিটে হ্যাটট্রিক করার কীর্তি রয়েছে।
এই নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে সালাহর গোল সংখ্যা ৩৮টই। যা কোনো একটি ইংলিশ ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ। সালাহ ছাড়িয়ে গেলেন চেলসির হয়ে দিদিয়ের দ্রগবা ও ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে সার্জিও আগুয়েরোর রেকর্ডকে (ক্লাব দুটির হয়ে দুজনেরই গোল ৩৬টি করে)।
এর আগে ম্যাচের ১৭ মিনিটে স্কট আরফিল্ড গোল করে রেঞ্জার্সকে এগিয়ে নেন। ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি লিভারপুল গোলরক্ষক, বল পোষ্ট ঘেঁষে জালে জড়ালে উচ্ছ্বাসে কেঁপে ওঠে রেঞ্জার্সের গ্যালারি। পিছিয়ে পড়ার হতাশা থেকে লিভারপুলের মুক্তি মেলে সাত মিনিট পর। কস্তাস সিমিকাসের কর্নারে হেডে কাছের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিরমিনো। সমতার স্বস্তি ফিরলেও ক্লপের আক্রমণভাগে ধার ফেরেনি। ৪২তম মিনিটে ইব্রাহিম কোনাতের দারুণ ব্লক রক্ষা করে লিভারপুলকে। সাকালার ক্রসে আরফিল্ডের প্লেসিং শট দ্রুত পা বাড়িয়ে আটকান এই ফ্রেঞ্চ ডিফেন্ডার।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের খুঁজে পায় অলরেডরা। ৫৫তম মিনিটে গোছালো আক্রমণে এগিয়ে যায় লিভারপুল। ডান দিকের উইং ধরে বেশ খানিকটা এগিয়ে জো গোমেজ দারুণ ক্রস বাড়ান বক্সে। দুই ডিফেন্ডারের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল নিখুঁত টোকায় গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন ফিরমিনো।
মিনিট দশেক পর ফিরমিনোর দারুণ এক পাস থেকে ব্যবধান ৩-১ করেন ডারউইন নুনেজ। এরপর মোহাম্মদ সালাহর তাণ্ডবে ৮১ মিনিটে ৬-১ গোলের লিড পায় লিভারপুল। শেষ দিকে এসে হার্ভি এলিয়ট গোল করলে ৭১- ব্যবধানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অলরেডরা।
সারাবাংলা/এসএস
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ মোহাম্মদ সালাহ রেঞ্জার্স বনাম লিভারপুল হ্যাটট্রিক