সাকিব-লিটনের ফিফটিতে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ

ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটির ব্যর্থতার পরেও সাকিব আল হাসান এবং লিটন দাসের জোড়া ফিফটিতে বড় সংগ্রহ বাংলাদেশের। ১৮ ওভারে ৩ উইকেটে ১৬১ রান থাকলেও শেষ দুই ওভারে ১২ রান নিতেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এতেই সংগ্রহ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৩ রানের।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচে শেষবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে নতুন চমক বাংলাদেশ দলে। উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট হাতে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী দীর্ঘ ১১ মাস পর দলে ডাক পাওয়া সৌম্য সরকার। বাংলাদেশের দুই ওপেনার কেউই ব্যাট হাতে রাঙাতে পারেননি। ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন সৌম্য-শান্ত উভয়ই।

দুর্দান্ত সাকিবের টানা দ্বিতীয় ফিফটি

ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে। আর কিউইদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পান সৌম্য সরকার। শান্ত প্রথম ম্যাচে ২৯ বলে ৩৩ রান করলেও পুরোপুরি ব্যর্থ পরের দুই ম্যাচে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ১২ বলে ১১ আর পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ১৫ বলে মাত্র ১২ রানে ফেরেন তিনি।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে তিনে ব্যাট হাতে সুযোগ দেওয়া হয় সৌম্য সরকারকে। ১৭ বলে ২৩ রান করে গতকাল কিছুটা ঝলক দেখান সৌম্য। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে সুযোগ ছিল ওপেনিংয়ে নিজেকে প্রমাণ করার। কিন্তু এই পজিশনে ফিরেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ সৌম্য। ফিরলেন ৪ বলে ৪ রান করে।

ইনজুরি নিয়ে লিটনের দারুণ ফিফটি

ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নাসিম শাহর লেগ স্টাম্পের ওপর লেংথ বলটি মিড অন ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে শাদাব খানের হাতে বল তুলে নেন সৌম্য। এতেই শেষ সৌম্যের ইনিংস। এইদিকে টানা তিন ম্যাচে ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। প্রথম ম্যাচের ওই ৩৩ রানের ইনিংসটা ছাড়া বাকি দুই ম্যাচেই ব্যাট হাতে অবস্থা তথৈবচ। শুরুতে ধুঁকতে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত মাত্রই নিজেকে খুঁজে পাওয়ার পথে ছিলেন। কিন্তু যখন পুষিয়ে দেওয়ার সময় এলো তখনই বিদায় নিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

ষষ্ঠ ওভারে আগের বলেই ফাইন লেগ দিয়ে চার মারেন শান্ত। মোহাম্মদ ওয়াসিমের পরের বলটিও সেভাবেই খেলতে যান তিনি। কিন্তু ব্যাটে খেলতে পারেননি। গ্লাভসে লাগা বল সহজে মুঠোয় জমা করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। শান্ত ফেরেন ২ চারে ১৫ বলে ১২ রান করে।

সৌম্য ৪, শান্ত ১২

দলীয় ৭ রানে সৌম্য আর ৪১ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরলে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে জুটি গড়েন লিটন দাস। আর এই জুটিতেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে ৫৫ রানে ৮৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই টাইগার ব্যাটার।

১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৩১ বলে ফিফটি তুলে নেন লিটন দাস। এরপর ১৫ ওভারে এসে মোহাম্মদ নেওয়াজকে ডিপ স্কয়ার লেগে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ ওয়াসিমের তালুবন্দি হন লিটন। দলীয় ১২৯ রানে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট। লিটন দাস ৪২ বলে ২টি ছক্কা আর ৬টি চারে ৬৯ রান করে ফেরেন।

লিটন ফেরার পর সাকিব আল হাসান হাত খুলে খেলতে শুরু করেন। আগের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে খেললেন আরেকটি ঝড় ইনিংস।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে দুই পরিবর্তন

১৪ ওভার শেষে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের স্কোর১১৮/২। লিটন ৩৯ বল খেলে ৬৫ রানে অপরাজিত। ৫টি চারের সাঙ্গে ২টি ছক্কাও মেরেছেন লিটন। অপর প্রান্তে ২৬ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত সাকিব আল হাসান। ১৭তম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ করেন ফিফটি। এরপর ১৯তম ওভারে নাসিম শাহর স্লোয়ারে পরাস্ত সাকিব। ডিপ মিড উইকেটে শাদাব খানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাকিব ফেরেন ৪২ বলে ৬৮ রানে। দুর্দান্ত ইনিংসটি ৩টি ছক্কা আর ৭টি চারে সাজান সাকিব।

শেষ দিকে আর কোনো ব্যাটারই রান তুলতে না পারলে বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে। আফিফ হোসেন ১০ বলে ১১, ইয়াসির আলী রাব্বি ২ বলে ১ আর নুরুল হাসান সোহান ৪ বলে ২ রান করেন।

পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম। আর একটি উইকেট নেন মোহাম্মদ নেওয়াজ।

সারাবাংলা/এসএস

ত্রিদেশীয় সিরিজ বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান লিটন দাস সাকিব আল হাসান